Saturday, December 13, 2025

কোথায় থামতে হয় জানা উচিত! অসুস্থতার জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় না করেই ফিরলেন ‘পাহাড় কন্যা’ পিয়ালী 

Date:

Share post:

পর্বতারোহণে চূড়ান্ত জেদ, কিন্তু সেই জেদের থেকেও বড় পিয়ালী বসাকের পরিণতিবোধ। কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় পৌঁছনোর আর মাত্র এক হাজার মিটার দূরত্ব, তবুও থেমে গেলেন। অসুস্থ শরীর আর প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ফিরে এলেন চন্দননগরের ‘পাহাড় কন্যা’।

গত ৭ এপ্রিল কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানে বেরিয়েছিলেন তিনি। মূল লক্ষ্য ছিল তিব্বতের শিশাপাংমা শৃঙ্গ। কিন্তু চীনের অনুমতি না মেলায় পরিবর্তিত লক্ষ্য হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। পিয়ালীর এটি ছিল ষোলোতম অভিযান। এর আগেও তিনি জয় করেছেন এভারেস্ট, মাকালু, অন্নপূর্ণা, মানাসলু, ধৌলাগিরি, লোৎসে—সবই আট হাজার মিটার উচ্চতার।

তবে এবার পরিস্থিতি সহজ ছিল না। ক্যাম্প ফোর পর্যন্ত পৌঁছনোর পর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। জ্বর, কাশি, অসুস্থ শরীর নিয়েই চলছিল যাত্রা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দেওয়া ওষুধে কিছুটা সাড়া মিললেও তার শেরপা দলের অসুস্থতা ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে পিয়ালী সাহসিকতার সঙ্গে ‘ফিরে আসার’ সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি বলেন, “সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু পাহাড় মানেই চ্যালেঞ্জ। কোথায় থামতে হবে, তা জানা থাকাটাও সাহসের কাজ। পাহাড় পরেও ডাকা দেবে। আগে শরীর সুস্থ থাকা দরকার।”

এই অভিযানে বেসরকারি একটি ব্যাঙ্ক পিয়ালীর পাশে দাঁড়িয়েছিল ২০ লক্ষ টাকার স্পনসর দিয়ে। গত এক বছরে পিয়ালীর জীবনে এসেছে ব্যক্তিগত শোকও—প্রয়াত হয়েছেন তার মা স্বপ্না বসাক এবং বাবা তপন বসাক। যাঁরা একসময় পিয়ালীকে পাহাড়ের হাত ধরিয়ে দিয়েছিলেন। পিয়ালীর কথায়, “ওনারা না থাকাটা আমাকে ভিতর থেকে দুর্বল করে দিয়েছে, তবে তাঁদের স্মৃতিই আমাকে এগোতে অনুপ্রাণিত করে।”

মাকালু অভিযানে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন পিয়ালী। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাসাধিককাল নেপালের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবুও তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি পাহাড় জয়ের উদাহরণ তৈরি করেছে।

আজই নেপাল থেকে দেশে ফিরেছেন তিনি। আপাতত স্কুলে পড়ানো আর নিজের শরীরচর্চাতেই সময় দেবেন বলে জানালেন পিয়ালী। লক্ষ্য এখনও স্পষ্ট—বিশ্বের সাতটি মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়। পাহাড়কে জয় করতে যেমন সাহস লাগে, তেমনি প্রয়োজন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। আর এই জায়গাতেই পিয়ালী বসাক আজকের তরুণ সমাজের অনুপ্রেরণা।

আরও পড়ুন – পুলিশের তৎপরতা, অবশেষে রাজস্থানের পথে উদ্ধার হওয়া ১১টি উট 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

চাপের মধ্যে BLO-র দায়িত্ব: এবার শিক্ষকদের শিক্ষকতায় ফেরার বার্তা ব্রাত্যর

শুক্রবারও রাজ্যের শিক্ষকদের একটি শ্রেণি যাঁরা বিএলও-র দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, তাঁরা প্রতিবাদ করেন নির্বাচনে কমিশনের (Election Commission) চাপানো কাজের...

‘জেলখাটা’ তকমা নয়, নাগরিক অধিকার ওদেরও আছে: বিশেষ স্ক্রিনিং জেলবন্দিদের নিয়ে তথ্যচিত্রের

অপরাধী আর নিরপরাধ। প্রমাণ করতেই বহু মানুষের জীবনের অমূল্য বহু সময় কেটে যায় গারদের ওপারে। এপারে বসে অপেক্ষা...

টার্গেট মতুয়া ভোট! রাজ্যে আরও সাত সভা মোদির, শুরুতেই নদিয়া

রাজ্যে এসআইআর করে মতুয়া বাসিন্দাদের সবথেকে বেশি বিপদে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছে নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তবে...

ফর্ম ডিজিটাইজেশন মাত্র ৭৫ শতাংশের কাছে বহু জেলা: বয়সকে অসংগতি ধরছে কমিশন

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে ইনিউমারেশন ফর্ম ডিজিটাইজেশনের কাজ ৯৯.৯৬ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। অথচ কমিশনের তথ্যে স্পষ্ট, একাধিক...