সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের ২৫ হাজার ৭৫২ জনের যে চাকরি বাতিল হয়েছে, তার মধ্যে শিক্ষকদের পাশাপাশি রয়েছেন শিক্ষাকর্মীরাও। চাকরি বাতিলের নির্দেশের পরে যেভাবে এই শিক্ষাকর্মীদের (non-teaching staff) পরিবারগুলি সম্পূর্ণ রোজগারহীন হয়ে পড়েছিল, তাতে বিচলিত মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে রাজ্যের মানুষকে সব রকমভাবে বিপাকে ফেলতে তৎপর বাম আইনজীবীরা নির্লজ্জের মতো তাতেও বাধ সেধেছেন। রাজ্যের ভাতার বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয় একশ্রেণির আইনজীবী। ভাতার ঘোষণা স্থগিত করার দাবি জানানো হয়। সেই মামলার শুনানিতে দুপক্ষের সওয়াল জবাব শুনলেও কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহা রায়দান স্থগিত রাখেন।

বাস্তবে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকবেন অযোগ্য চিহ্নিত নন, এমন শিক্ষকরা। সেক্ষেত্রে কী পরিস্থিতি হবে শিক্ষাকর্মীদের, এই প্রশ্ন ওঠার পরই তাঁদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রুপ সি (Group-C) কর্মীদের ২৫ হাজার টাকা ও গ্রুপ ডি (Group-D) কর্মীরা ২০ হাজার টাকা করে পাবেন বলে জানানো হয়। সেই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করেন বামপন্থী আইনজীবীরা। সেই মামলায় সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তুলে ধরে ভাতা দেওয়ার বিরোধিতা করেন বামপন্থী আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য।

পাল্টা রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত তুলে ধরেন, রাজ্যের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার তহবিল থেকেই এই ভাতার ব্যবস্থা। সেই তহবিল থেকেই পুজো বা অন্যান্য অনুদান দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন তোলেন, অনুদান দেওয়া হলে তা নিয়ে এত তাড়াহুড়োর কী কারণ। আবেদনের পরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সেই টাকা তুলে দেওয়ার মধ্যে সময়ের প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলা হয়, কী হিসাবে ২০ ও ২৫ হাজার টাকা ধার্য হয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারি কোষাগারের টাকা পেলে কী তার বিনিময়ে রাজ্যকে তাঁরা কোনও পরিষেবা দেবে, প্রশ্ন বিচারপতি সিনহার।

দুপক্ষের সওয়াল জবাব শেষে সোমবার রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি সিনহা। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে। সেই সব মামলা শোনার পরে রায়দানের ইঙ্গিত রয়েছে। তবে সোমবার প্রথম মামলাতেই কোনও স্থগিতাদেশ (stay order) দিল না আদালত (Calcutta High Court)। সেক্ষেত্রে ভাতার প্রয়োগ আরও পিছিয়ে গেলে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত শিক্ষাকর্মীদের আর্থিক সমস্যারও সমাধানও বিলম্বিত হতে চলেছে।


–

–
–

–
–
–

–

–

–

–
