নির্বাচনে স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি রক্ষায় অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ইতিহাসে এই প্রথম বুথের ভিতরে ও বাইরে ওয়েবকাস্টিং অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। আগামী ১৯ জুন নদিয়ার কালিগঞ্জ উপনির্বাচনে এই নতুন ব্যবস্থার প্রথম প্রয়োগ হতে চলেছে, যা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের এক রিহার্সাল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ভোটগ্রহণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি বুথের ভিতরে ও বাইরে ক্যামেরায় রিয়েল টাইম মনিটরিং চলবে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন এবং এমনকি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনও সরাসরি তদারকি করবে এই স্ট্রিমিং।শুধু বুথেই নয়, কিউ আর টি, ফ্লাইং স্কোয়াড এবং র্যাফের গাড়িতেও ক্যামেরা বসানো হয়েছে, যাতে পুরো চলাচল ও অভিযানের রেকর্ড রাখা যায়। ইতিমধ্যেই কিছু নাকা চেকিং পয়েন্টে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে।
মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা ভোটকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট ডিউটি রোস্টার তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে পর্যবেক্ষণের খতিয়ান লিখে জমা দিতে হবে, উল্লেখ করতে হবে কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা দেখলে তাৎক্ষণিক কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং কাকে জানানো হয়েছে। নিয়মভঙ্গ হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১ অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর আগে নির্বাচনে শুধু বুথের ভিতরে আংশিক ওয়েবকাস্টিং করা হত। এবার সমগ্র নির্বাচনী পরিবেশকে ক্যামেরার আওতায় এনে নির্বাচন কমিশন এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিল। ভোটের দিন বুথের ভিতর-বাইরের পাশাপাশি প্রশাসনিক গতিবিধির ওপরে এমন নজরদারি নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কমিশনের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভোটারদের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তার অনুভূতি জোগাবে, পাশাপাশি যেকোনও রকম কারচুপি বা অপচেষ্টা রোধে কার্যকর হবে। পশ্চিমবঙ্গের ভোট ব্যবস্থার ইতিহাসে এই উদ্যোগকে এক ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষক মহল।
আরও পড়ুন – শিশুশ্রম প্রতিরোধে রাজ্যের দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য! শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরছে নাবালকরা
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_