এক অসাধারণ মানবিক মুহূর্ত ও বঞ্চনার চিত্র ধরা পড়ল নদিয়ার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত মহিলা নিরাপত্তারক্ষীরা রীতিমতো রেজিস্ট্রারের পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে চাকরি রক্ষার আবেদন জানালেন। অভিযোগ, ডিউটি কমিয়ে দিয়ে নতুন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বর্তমান নিরাপত্তা এজেন্সি।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটেই শুরু হয় ধুন্ধুমার কাণ্ড। রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়ের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন নিরাপত্তারক্ষীরা। রেজিস্ট্রার গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে দফতরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে, তাঁর পথ আটকে পড়ে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা পা জড়িয়ে ধরেন কাঁদতে কাঁদতে। তাঁকে বসার জন্য চেয়ারও এগিয়ে দেন তারা।
প্রায় ১১ বছর ধরে কাজ করা এই কর্মীদের অভিযোগ, এতদিন নানা সংস্থার অধীনে কাজ করলেও কখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হননি। তাঁরা বলেন, “নতুন লোক নিয়োগ করা হচ্ছে অথচ আমাদের ডিউটি কমিয়ে দিচ্ছে। একদিন বাদ দিয়ে ডিউটি দিলে সংসার চলবে কী করে?” অভিযোগ, বারবার লিখিতভাবে জানানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়নি। এই অবস্থায় চাকরি হারানোর আশঙ্কায় চরম আর্থিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বহু পরিবারের মধ্যে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায় বলেন, “এমন স্পর্শকাতর বিষয় রাস্তায় নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। আমরা বসে শুনতে প্রস্তুত।” তবে এই ঘটনায় শুধু কর্মসংস্থান নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যারা বছরের পর বছর কম বেতনে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কতটা যুক্তিসংগত— তা নিয়ে ছাত্র ও শিক্ষক মহলেও চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হলেও পরিস্থিতি যে কতটা ঘনীভূত, তা আজকের ছবিই বুঝিয়ে দিয়েছে। কর্মীদের কথায়, “এই লড়াই শুধুই চাকরির জন্য নয়, এটা আমাদের বাঁচার লড়াই।”
আরও পড়ুন – এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ দেশ! নিহত পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা টাটা গ্রুপের
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_