রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবার পর্যটনকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে। রাজ্যের একাধিক পঞ্চায়েত হোমস্টে ও কটেজ নির্মাণের মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করে নিজস্ব কোষাগার ভরার পথে হাঁটছে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পগুলির ডিপিআর (ডিটেল্ড প্রজেক্ট রিপোর্ট) জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যেসব পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে পর্যটন কেন্দ্রিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র সম্পত্তি কর বা অন্যান্য কর আদায়ে পঞ্চায়েতের আয় নির্ভরশীল থাকলে তা যথেষ্ট নয়, সেই উপলব্ধি থেকেই এই বিকল্প পথের খোঁজ। হোমস্টে ও কটেজ তৈরি করে তা পর্যটকদের ভাড়ায় দেওয়া হলে, সেই আয়ের পুরোটাই সরাসরি পঞ্চায়েতের নিজস্ব কোষাগারে জমা হবে।
রাজ্যের একাধিক পঞ্চায়েত ইতিমধ্যেই পর্যটনভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরি করেছে। কিছু পঞ্চায়েতে পাইলট প্রকল্পও চালু হয়েছে। এভাবে আয় বাড়লে একদিকে যেমন পঞ্চায়েতের আর্থিক স্বনির্ভরতা তৈরি হবে, তেমনই গ্রামীণ অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগে শুধু আয় নয়, স্থানীয় স্তরে কর্মসংস্থানের নতুন দরজা খুলবে। হোমস্টেতে কর্মরত পরিচারক, রন্ধনকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় শিল্প ও হস্তশিল্পীদের জন্যও তৈরি হবে নতুন বাজার। একই সঙ্গে পর্যটকদেরও গ্রামীণ জীবনের স্বাদ ও ভিন্ন অভিজ্ঞতা পেতে উৎসাহ বাড়বে। পর্যটন দফতর ও পঞ্চায়েত দফতরের যৌথ তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পগুলির উপর বিশেষ নজরদারি থাকবে। স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে, প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত পর্যালোচনা চালাতে।
এই মুহূর্তে পাহাড়ি অঞ্চল থেকে শুরু করে মেঠো বাংলার সৌন্দর্যে ঘেরা বহু গ্রাম পর্যটনের আদর্শ স্থান হয়ে উঠছে। প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য, বলছে রাজ্য প্রশাসন। এই উদ্যোগ সফল হলে, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ পর্যটন হয়ে উঠতে পারে এক নতুন মডেল— যা একদিকে যেমন প্রশাসনিক স্বনির্ভরতার দিশা দেখাবে, তেমনই গ্রামবাংলার অর্থনীতিতে আনবে নতুন প্রাণসঞ্চার।
আরও পড়ুন – SFI-এর সর্বভারতীয় সম্পাদক সৃজন: নির্বাচনের আগে রাজ্যে সংগঠনে জোর বামেদের
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_