নারী নির্যাতনের ঘটনায় শীর্ষে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। অথচ মহিলা সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে বিজেপি তথ্য সন্ধানী দল বারবার আসে শুধু বাংলায়। বিজেপির এই দল যে আদতে রাজনৈতিক পর্যটক, সেই পরিচয় সাধারণ মানুষের কাছে এতদিনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার প্রমাণ দিয়েছেন আইন কলেজে (South Calcutta Law College) নির্যাতিতার পরিবার। তথ্য সন্ধানী দলের (fact finding team) সঙ্গে দেখা করার কোনও প্রয়োজনই বোধ করেননি তাঁরা। এবার রাজ্যে এসে সেই নির্যাতিতার পরিবারকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপির কমিটি। আর তাতেই কমিটির অস্তিত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সরাসরি তিনটি প্রশ্ন তুলল বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
বিজেপির মনগড়া প্রতিনিধি দল মঙ্গলবারই মনগড়া রিপোর্ট পেশ করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। আদতে বাংলায় এসে তারা কোনও ধরনের কুৎসা করতে পারেনি। কারণ কসবার ঘটনায় কোনও ছিদ্র খুঁজে পায়নি। যে কারণে কার্যত হতাশায় বাংলার পুলিশ থেকে নির্যাতিতার পরিবারের উপর দোষারোপ শুরু করে বিজেপির প্রতিনিধিদল। মিথ্যার ঝুলি খুলে সাংবাদিক বৈঠকে তারা দাবি করে, বাংলার পুলিশ অভিযোগ নেয় না। এফআইআর নেয় না। যদি এফআইআর (FIR) নেয় তাহলে তদন্ত ঠিক মতো করে না। এমন একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে এই দাবি তোলে বিজেপি, যেখানে অভিযোগ দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্তসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিজেপির কমিটির এই অভিযোগের পাল্টা তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, বিজেপির তথাকথিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (Fact Finding Committee) একরাশ মিথ্যাচার করেছে। পুলিশ কয়েকঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত ও অভিযুক্তদের ধরে নিয়েছে। তদন্ত চলছে। সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ মহিলাদের জন্য সবথেকে নিরাপদ। এবং পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে, গ্রেফতার হচ্ছে, ফাঁসির সাজা হচ্ছে। বিপ্লব দেবের সময়ে ত্রিপুরায় অত্যাচারের কেন্দ্রে ছিল ত্রিপুরা। তিনি কীভাবে এখানে বড় বড় কথা বলতে আসেন।
বিজেপির কমিটির সদস্যরা অভিযোগ তোলে নির্যাতিতার পরিবারের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, আমরা যখন ওখানে গিয়েছিলাম আমাদের বিশ্বাস ছিল নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে আমাদের দেখা করতে দেওয়া হবে। কার্যত নির্যাতিতার পরিবার যে তাদের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেছে, তাতে ধুলোয় মিশেছে কমিটির সম্মান।
সেখানেই বাংলার শাসকদল তৃণমূলের প্রশ্ন, দোষারোপ করছে পরিবারকে (victim family)। আপনাদের আসার প্রয়োজনই কেউ মনে করে না। কখনও দোষ দিচ্ছেন মিডিয়াকে (media)। যেন সংবাদ মাধ্যম বসে থাকার কথা ছিল ওদের জন্য।
সেই সঙ্গে যে কলকাতা পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (BNS) নতুন নিয়ম মেনে এফআইআর দায়ের করেছে তাকেও অগ্রাহ্য করে বিজেপি প্রতিনিধিরা। তাদের দাবি, পুলিশ নির্যাতিতার অভিযোগ থেকে অভিযুক্তের নাম কেটে দিয়ে জে, এম লিখেছে। অপরাধীদের নাম লুকানোর চেষ্টা করেছে। এফআইআর বদল করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের মাসখানেক আগে ‘নারী দরদী’ নীতীশ! ৩৫ শতাংশ সংরক্ষণ ঘোষণা
সেখানেই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, যদি এত উল্লাস, অ্য়াসাইনমেন্টে বাংলায় পাঠিয়েছে খারাপ জিনিস খুঁজতে তাহলে কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে যে মহিলা অভিযোগ করেছে তার কাছে গেল না কেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (Fact Finding Committee)? যেখানে পশ্চিমবঙ্গে কোনও সামাজিক খারাপ ঘটনা ঘটলেও পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে দোষীকে ধরে নেয় সেখানে নাটকবাজি করতে আসে এই রাজনৈতিক পর্যটক, বিজেপির দলদাসেরা। যেখানে বিজেপির রাজ্যে সবথেকে বেশি নির্যাতন চলে সবথেকে বেশি, সেখানে কেন যায় না ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি?
–
–
–
–
–
–