আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা ফের বাড়িয়ে তুলছে স্বাস্থ্য-সতর্কতা। কখনও রোদের তীব্রতা, তো কখনও আচমকা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি—ফলে একদিকে যেমন তৈরি হচ্ছে জল জমার পরিস্থিতি, তেমনি মশার লার্ভা জন্ম নিয়ে ডেঙ্গি (Dengue) ও ম্যালেরিয়ার (Malaria) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যজুড়ে। স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department) রিপোর্ট বলছে, চলতি জুলাই মাসেই রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১,০০০ জন। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় আক্রান্ত সর্বাধিক—৩৬৭ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ৩৫৬ জন, হুগলিতে ২৬৫ জন, হাওড়ায় ২৪১ জন, এবং মালদায় ২৩৩ জন। তুলনামূলকভাবে কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম—মাত্র ১৭৬ জন।
২০২৩ সালে ডেঙ্গির প্রকোপ রাজ্যে রেকর্ড ছুঁয়েছিল। আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়েছিল, যা ছিল ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ২০২৫ সালে শুরু থেকেই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভাগুলি। বর্ষা এবং বর্ষা-পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচার, জমা জল সরানোর অভিযান এবং হটস্পট এলাকাগুলিতে ফগিং।
ডেঙ্গির পাশাপাশি ম্যালেরিয়ার দিক থেকেও উদ্বেগজনক অবস্থানে রয়েছে কলকাতা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের ৭৭৫টি জেলার মধ্যে কলকাতার স্থান ষষ্ঠ। টানা তিন বছর ধরে কলকাতা ছিল সংক্রমণে দেশের মধ্যে এক নম্বরে। ২০২৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার আগে রয়েছে পশ্চিম সিংভূম, গোড্ডা (ঝাড়খণ্ড), কালাহান্ডি, রায়গড়া ও কান্ধামাল (ওড়িশা)। শুধু গত বছরই কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ১০,১৭৭ জন—যা দেশের অন্য কোনও মেট্রো শহরের তুলনায় অনেক বেশি।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, জমা জল যাতে না হয়, সেজন্য পুরসভা ও জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ির আশেপাশে ফুলের টব, ঠ্যাঙারির নীচে, এসি-র ট্রে, বা যেকোনও ছোট পাত্রে জল জমে থাকলে দ্রুত ফেলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জনগণকেও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতা অবলম্বনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আরও পড়ুনঃ নবজাতকের মৃত্যুর মামলায় তদন্ত বন্ধের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–