শ্বশুরবাড়িতে বর্ণবৈষম্যের শিকার, মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন বধূ। মৃত্যুর আগে বাপের বাড়ির লোকেদের জানিয়েছিলেন তাঁর গায়ের রং কালো হওয়ায় স্বামী নিত্যদিন খোঁটা দিতেন। এমনকি দ্বিতীয় বার বিয়ে করার হুমকিও দিতেন। ছলে-বলে-কৌশলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বৌমাকে হেনস্থা করার চেষ্টা করতেন। অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজেকে শেষ করে দেন ওই মহিলা। মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার (Satara District, Maharashtra) এই ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ উঠলেও বিষয়টিকে ফৌজদারি হেনস্থা মামলার মধ্যে ফেলতে নারাজ বম্বে হাইকোর্ট (Bombay High Court)। তাই তিরিশ বছর পর মৃতার স্বামীকে মুক্তি দিল আদালত।

আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে গুরুত্বপূর্ণ আয়ুর্বেদ: আয়ুরমিত্রের অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা কুণালের

২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যখন মহিলাদের গায়ের রং কিংবা শারীরিক গঠন নিয়ে অনৈতিক মন্তব্য বা মতামত প্রকাশ করাকে সমর্থনযোগ্য বলে মনে করে না সমাজ, তখন আজ থেকে বছর তিরিশ আগের এক ঘটনায় উঠে এল সেই একই প্রসঙ্গ। তবে তফাৎ একটাই, স্ত্রীকে ‘কালো’ বলে যুবকের খোঁটা দেওয়ায় সেই মহিলা অপমানে নিজেকে শেষ করে দিলেও, অভিযুক্ত স্বামীকে মানসিক নির্যাতন করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করতে রাজি নয় বম্বে আদালত। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন বধূ। শুধু স্বামী নন, তাঁর পরিবারের অন্যেরাও বধূকে হেনস্থা করতেন বলে অভিযোগ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, স্ত্রীকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দিতেন যুবক। ১৯৯৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। সাতারার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং স্ত্রীর উপর অত্যাচার এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অপরাধে তাঁকে পাঁচ বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। সম্প্রতি বম্বে হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়েছে। সেখানে বিচারপতি এস এম মোদকের পর্যবেক্ষণ, বিষয়টি একেবারেই ঘরোয়া কলহ। অপরাধ নয়। তিনি বলেন ‘‘বৈবাহিক জীবনে উদ্ভূত প্রতিটি বিরোধ ফৌজদারি অপরাধ নয়। যখন ওই হেনস্থার কারণে বধূর সামনে মৃত্যু ছাড়া আর কোনও বিকল্প থাকবে না, তখনই তা অপরাধের পর্যায়ে পড়বে, এ ক্ষেত্রেও বধূর উপর নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু এটা সেই ধরনের নির্যাতন নয়, যে কারণে অপরাধ আইন বলে এটিকে গণ্য করা যেতে পারে। স্ত্রীকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দেওয়া, আবার বিয়ের হুমকি ফৌজদারি হেনস্থার আওতায় পড়ে না। এতে ফৌজদারি আইনে শাস্তি দেওয়া যায় না।’

–

–
–

–

–

–
–
–

–

–
–