Sunday, November 9, 2025

রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি! কেন্দ্র ও সিকিমকে তোপ সেচমন্ত্রীর, ডিভিসি নিয়েও বিস্ফোরক মানস 

Date:

Share post:

তিস্তা নদীতে হঠাৎ জল বাড়ায় উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। হড়পা বান এবং নদীজটে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি জেলায়। এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি সিকিম ও কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।

বৃহস্পতিবার জলসম্পদ ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, কোনওরকম আগাম বার্তা না দিয়েই সিকিম জল ছেড়ে দেওয়ায় নদী পথে কাদা, পাথর, গাছ ভেসে এসে তিস্তার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়েছে। একের পর এক হড়পা বান নামছে ডুয়ার্সের বিভিন্ন অঞ্চলে। সিকিম অবৈজ্ঞানিকভাবে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিছু বলছে না। রাজ্যও আগাম জানতে পারছে না। এই পরিস্থিতিকে ভয়ঙ্কর বলেই ব্যাখ্যা করেছেন মন্ত্রী।

ডিভিসি নিয়েও বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন তিনি। জানান, ডিভিসি কোনও ড্রেজিং করছে না। জলধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফোন, ইমেল — কিছুতেই সাড়া মিলছে না। তেনুঘাট, মাইথনের উপর রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়ায় গত বছরের বন্যা পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি ডিভিসিকেই দায়ী করেন মন্ত্রী।

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মানস বলেন, বারবার অনুরোধ করেও কোনও সাহায্য মিলছে না। যেন কেন্দ্র ঘাটালের পরিকল্পনাকে ম্যাজিক ট্রিক দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে। তবু হাল ছাড়ছে না রাজ্য। রাজ্যের নিজস্ব অর্থে কাজ চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ১০৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। তাঁর দাবি, ২০২৭ সালের মার্চের মধ্যে ঘাটালের চেহারা বদলে যাবে।

নদীভাঙন রোধে নতুন পদক্ষেপের কথাও জানান মন্ত্রী। বলেন, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে নদীভাঙন ঠেকাতে ৬১০ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যেখানে বিহার ও ঝাড়খণ্ডও অংশগ্রহণ করছে। গঙ্গা বাঁচাতে কেন্দ্রীয়স্তরে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ঋণের অনুমোদন পেতে কেন্দ্র বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য অনুমতি দিচ্ছে না কেন্দ্র। বিদেশের মতো বাংলাতেও জলেই সব ভেসে যাচ্ছে — মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

বিজেপি নেতাদেরও নিশানা করেন মানস। বলেন, তাঁরা ঘাটালে এসে শুধু মন্তব্য করে চলে যান, কোনও বাস্তব সহযোগিতা নেই। বিপদের সময় পাশে দাঁড়ায় না কেন্দ্র। উত্তরবঙ্গে জল ছাড়া, ইন্দো-ভুটান কোনও চুক্তি নেই। একটি কমিটি ছাড়া কোনও আলোচনাও হচ্ছে না। ভারত সরকার ও সিকিম সরকারের উচিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কথা বলা।

ঘাটাল ইতিমধ্যেই ছয় বার প্লাবিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। জেলাশাসক ও পুলিশ প্রশাসন সক্রিয়। রিলিফে কোনও গাফিলতি নেই বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী। নিজেই আবার ঘাটাল যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। রাজ্য সরকার দুর্গত মানুষের পাশে আছে, এই বার্তাই দেন মন্ত্রী।

আরও পড়ুন – ওভালে প্রথম দিনই সোবার্স, গাওস্করের রেকর্ড ভাঙলেন শুভমন গিল

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

এপিকের সঙ্গে মোবাইল লিঙ্ক না থাকলে অনলাইনে ফর্ম নয়! কমিশনের নিয়মে ক্ষোভে ফুঁসলেন কল্যাণ 

নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা ঘিরে ফের রাজনৈতিক বিতর্ক। রবিবার শ্রীরামপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট রক্ষা শিবিরে অংশ...

ফাইনাল ম্যাচে শাহরুখের মন্ত্রেই ছাত্রীদের তাতিয়ে ছিলেন? অকপট স্মৃতিদের কোচ

ভারতীয় মহিলা দল বিশ্বকাপ জেতার পরই চক দে ইন্ডিয়ার কবীর খান হয়ে উঠেছেন অমল মুজুমদার(Amol Muzumdar)। কী বলে...

এসআইআর আতঙ্কে মৃতদের পরিবারের পাশে তৃণমূল: রাজ্যজুড়ে শোকাহত পরিবারগুলির ঘরে দলের জনপ্রতিনিধিরা 

এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যজুড়ে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। কোথাও আত্মহত্যা, কোথাও আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু— ভয় ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম...

বাংলাভাষায় ১০ কোটিও খরচ নয়! বাঙালিবিদ্বেষী বিজেপির রবীন্দ্র-বঙ্কিম ভাগে তোপ গণমঞ্চের

বিজেপি আদতে বাঙালি বিদ্বেষী, তা সাম্প্রতিক সময়ে বারবার প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত। সেই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও...