বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে একের পর এক বাংলার মানুষদের অত্যাচার। প্রতিবাদে সোচ্চার গোটা বাংলা। বাঙালির সমর্থন গেল গেল বুঝে মাঠে নামলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে ক্ষুদিরাম বোসকে নিয়ে সাজানো বক্তৃতা দিলেন। অথচ তার এক সপ্তাহের মধ্যে বিজেপির বিধায়ক সেই ক্ষুদিরাম বোসকে সন্ত্রাসবাদী বলছেন। যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে (Netaji Subhash Chandra Bose) নিয়ে বাংলায় এসে মেকি শ্রদ্ধা জানিয়ে যান বিজেপির সব নেতা, সেই সুভাষ বসুকে সবথেকে বড় সন্ত্রাসবাদী (terrorist) বলতেও ছাড়েননি তিনি। দেশজুড়ে বাঙালিদের তীব্র হেনস্থার পরে এবার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হেনস্থায় অসম (Assam) বিধায়কের ক্ষমা দাবি করল বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল (ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা বিশ্ববাংলা সংবাদ যাচাই করেনি) হয়, যেখানে দেখা যায় অসমের বিজেপির সাংসদ শিলাদিত্য দেব (Shiladitya Dev) ব্রিটিশের বিরুদ্ধে দেশের স্বাধীনতায় পথ দেখানো নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সবথেকে বড় সন্ত্রাসবাদী দাবি করছেন জনসাধারণের সামনে। সেই সঙ্গে বিপিনচন্দ্র পাল ও ক্ষুদিরাম বোসকেও সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দিতে দেরি করেননি তিনি। অথচ ২৭ জুলাই নরেন্দ্র মোদি নিজে ক্ষুদিরাম বোসের ফাঁসিকে গৌরবান্বিত করার চেষ্টা করেছিলেন।

বিজেপি বিধায়কের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিবাদ পর্যন্ত ওঠেনি বিজেপি নেতাদের তরফে। সেখানেই তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, অসমের বিজেপির বিধায়ক শিলাদিত্য দেব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সন্ত্রাসবাদী বলছেন। সন্ত্রাসবাদী আর স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিপ্লবী – এই শব্দদুটি প্রয়োগের প্রেক্ষিতের যে মূল তফাৎ সেটা রাখারও প্রয়োজন বোধ করেনি বিজেপি। যদি এই ভিডিও সত্য না হলে তাহলে তারা প্রতিবাদ করত। আমরা চাই এটার তদন্ত হোক।

ঠিক যেভাবে ব্রিটিশ আমলে বিল্পবীদের সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেওয়া হত, তার থেকে কোনও পার্থক্য যে বিজেপি নেতার কথায় নেই, তা উল্লেখ করে কুণাল বলেন, তিনি বলছেন উগ্রপন্থী ছিলেন বিপিনচন্দ্র পাল, ক্ষুদিরাম বোস। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী সুভাষ চন্দ্র বসু (Subhash Chandra Bose)। সন্ত্রাসবাদী সেদিনের ব্রিটিশ বলতো। সেদিনের ব্রিটিশ আজ বিজেপি। বাংলা, বাঙালি সম্পর্কে এই ধারণা, এই ভাষা।

আরও পড়ুন: ফের মহারাষ্ট্রে বাংলার শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু! পরিবারের পাশে তৃণমূল

বাস্তবে বিজেপি বাংলাকে যে চোখে দেখে তা একের পর এক ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে বাঙালির প্রতি অত্যাচারে প্রমাণিত। আর বিজেপির সেই মুখোশ খুলেই মোদির নাম না ব্যবহার করে তৃণমূল প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের দাবি, অত্যাচারের প্রতিবাদ সামলাতে ক্ষুদিরাম বোসের নাম ব্যবহার করছেন। আর আপনার দলের বিধায়ক তাঁকে সন্ত্রাসবাদী বলছে। এটা হচ্ছে বিজেপির ভিতরের মূল্যায়ন। বিজেপি বাংলা-বাঙালিকে এভাবেই দেখে। ওদের স্বাধীনতা সংগ্রামে কোনও ভূমিকা ছিল না। কিন্তু বাংলার বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা ছিল। তাই আজ বিজেপির নেতার মুখে শুনতে হচ্ছে যে সুভাষচন্দ্র বসু সন্ত্রাসবাদী।

–

–

–

–

–
–
–
–