Thursday, December 25, 2025

প্লাস্টিক বর্জ্যেই তৈরি হবে গ্রামীণ রাস্তা, পরিবেশ রক্ষায় বড় পদক্ষেপ রাজ্যের

Date:

Share post:

পরিবেশ দূষণ কমানো এবং প্লাস্টিক বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করতে অভিনব পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এবার রাজ্যের গ্রামীণ রাস্তাঘাট নির্মাণে বেশি করে ব্যবহৃত হবে পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক। ইতিমধ্যেই ৭০০ কিমি রাস্তা এই পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে বলে জানালেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।

নতুন অর্থবর্ষে সেই লক্ষ্য আরও বাড়ানো হয়েছে। রাজ্যের পরিকল্পনা, গ্রামে আরও ১৫০০ কিমি রাস্তা প্লাস্টিক মিশিয়ে তৈরি করার। এই রাস্তাগুলি বিশেষ করে স্কুলগামী পড়ুয়াদের জন্য প্রাধান্য পাচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তুলতে এবং প্লাস্টিক বর্জ্যকে সম্পদ হিসেবে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ।

রাজ্যে বর্তমানে ১০৮টি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে, যার মধ্যে ১০৩টি ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। অনেক কেন্দ্র স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে, আবার কিছু কেন্দ্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে চলছে কাজ। এসব কেন্দ্র থেকেই পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে ফার্নিচার, ব্যাগ, পেভার ব্লকের মতো নানা উপযোগী সামগ্রী।

মন্ত্রী জানান, শুধু রাস্তাই নয়, সচেতনতা এবং আর্থিক দিক থেকেও এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। প্লাস্টিক বর্জ্য যদি সঠিকভাবে আলাদা করে সংরক্ষণ করা যায়, তা হলে সেই প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি হতে পারে এমন রাস্তা, যা টেকসই, উচ্চ তাপমাত্রা, জল জমা কিংবা ভারী যানবাহনের চাপেও ভেঙে পড়ে না। অনেক ক্ষেত্রে খালি পায়ে হাঁটলেও বোঝা যায় এই রাস্তার পার্থক্য।

এক দফতরীয় আধিকারিক জানান, প্লাস্টিক মেশানো বিটুমিন ব্যবহারে রাস্তার স্থায়িত্ব বেড়ে যায়, ফাটল কমে, এবং খরচও কম পড়ে। ফলে যেসব এলাকায় বেশি পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া যায়, সেখানে এই প্রযুক্তি রাস্তাঘাট তৈরিতে খুবই উপযোগী। বর্তমানে প্লাস্টিক সংগ্রহে ই-কার্ট ব্যবহৃত হলেও তার পরিধি সীমিত। তাই এমন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা আরও দূরবর্তী এলাকাতেও পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

বুধবার কলকাতায় ইউনিসেফের সহায়তায় অনুষ্ঠিত রিসাইকলার সম্মেলনে এই প্রকল্প ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রিসাইকলার, কৃষক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও বিভিন্ন অংশীদাররা। উপস্থাপিত হয়েছিল টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন মডেল। মন্ত্রীর মন্তব্য, এই প্রকল্প শুধুমাত্র প্লাস্টিক মুক্তির উপায় নয়, বরং পরিবেশ রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা এবং নবীকরণযোগ্য ভবিষ্যতের দিকও উন্মুক্ত করছে।

আরও পড়ুন- রেল-উন্নয়নে ফের বাংলাকে বঞ্চনা! অভিষেকের প্রশ্নের উত্তরেই বেআব্রু মোদি সরকার

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

সময়ের দেরিতেই বাঁধা প্রেমের গল্প-২৫ দিনের মাইলস্টোন ছুঁয়ে হলে ‘দেরি হয়ে গেছে’

সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নস্টালজিয়া, আবেগ আর রহস্যের মিশেলে দর্শকদের মন জয় করে প্রেক্ষাগৃহে টানা ২৫ দিনের বেশি সময় ধরে সফলভাবে...

নতুন তিন বিমান সংস্থা: ইন্ডিগোর একচেটিয়া দখল ভাঙছে দেশের আকাশে 

দেশের আকাশপথে একচেটিয়া দখল ভাঙতে যাচ্ছে। ইন্ডিগোর বিমান বাতিল ও যাত্রী অসুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি সংস্থাকে...

ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে সকলের মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা মুখ্যমন্ত্রীর

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যতটা শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের...

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...