জয়িতা মৌলিক
দেব-শুভশ্রীর (#DESU) জুটির এখন পর্যন্ত শেষ ছবি। এই Coinage-কেই প্রচারের আলোতে রেখেছিলেন প্রযোজন থেকে পরিচালক, হিরো-হিরোইন সবাই। দেশু হ্যাশট্যাগে ভরে গিয়ে ছিল স্যোশাল মিডিয়া। রংমিলান্তি পোশাকে ভক্তকুলের সামনে ধরা দেন নায়ক-নায়িকা। কিন্তু পর্দায় সেই চকমকি পাথরটা জ্বলে উঠল না। গল্পটা বলতে গিয়েও বলতে পারলেন না পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Ganguli)। সেই কারণই বোধহয় ছবির শেষে লেখা হল- অসমাপ্ত কাহিনী।
পাহাড়ের অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য। তার মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছে ক্যামেরা। কখনও কাঞ্চনজঙ্ঘা, কখনও সবুজ পাইনবন, আবার তারপরেই হাঁটু ডোবা বরফ। জায়গাটা উত্তর-পূর্ব ভারত। তবে সেটা বাংলা না, অরুণাচল প্রদেশ নাকি অন্য কোথাও সেটা বোঝা মুশকিল। গল্পে এক জঙ্গি মিশনে বেরিয়েছে। কিন্তু কেন জঙ্গি? কীভাবে জড়ালেন উগ্রপন্থায়? তাঁর সঙ্গে কী এমন হল যার জন্য তাঁকে এই চরমপন্থা নিতে হল? উত্তর স্পষ্ট হয় না ছবিতে। যে সংগঠনের চক্রান্তে নাশকতা তারা কারা? তাদের লক্ষ্য কি? একা একজন প্রৌঢ় (চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, ছবি যাঁরা বিশেষ কিছুই করার নেই) আর তাঁর সঙ্গী বা বলা ভালো তাঁর স্কোয়ার্ডের একমাত্র সদস্য দেব। বাকিরা আছে কিন্তু দেখা যায় না!
যেভাবে প্রতিশোধের গল্প বলতে পর্দায় হঠাৎই উদয় হয় দেব-এ হয়তো তাই থেকেই নাম ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu)। কিন্তু সেই প্রতিশোধের কারণ আর ফলাফল সবটাই ছবির শেষে দর্শকের হাতে ধরা পেন্সিলের মতো রয়ে গেল।
তবে যে রসায়নের দিকে চেয়েছিলেন দেশু (#DESU) ভক্তরা তার ঝলক মিলেছে ছবিতে। একসঙ্গে দেব- শুভশ্রী এক কথায় অনবদ্য। ছবির গানেই রয়েছে “এখানে বিদায় বোলো না”। ভবিষ্যতে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করলে সেটা যে আবার পর্দায় ম্যাজিক করবে তা এই ছবি দেখলে বোঝা যায়। ছবিতে নজরকড়া অভিনয় রুদ্রনীল ঘোষের। আলাদা করে বলতে হয় ছবিতে দেবের মেকআপ। বিক্রম গায়কোয়াড়ের প্রস্থেটিক মেকআপ অন্য মাত্রাটা দিয়েছে এই ছবিকে।
বুনোহাঁসের যে পথ ধরে দেবের যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই পথেই এই ছবি ধূমকেতু। এখানেও দেব হিরো হয়ে লার্জার দ্যন লাইফ নয়। দশবছর আগের অভিনয়ে হয়তো কিছুটা খামতি রয়েছে, তবে আজকের দেব যেভাবে অন্যধারা ছবিতে কাজ করছেন সেই যাত্রা ধূমকেতুতেই শুরু হয়েছিল বলা যায়।
শুভশ্রী যথাযথ। তবে চরিত্রে আর একটু শেড থাকলে আরও ভালো হত। সার্জারির আগে নিটোল মিষ্টি মুখের শুভেশ্রীর চোখ এই ছবিতেও কথা বলেছে।
এই ছবির শুটিংয়ের আগে ভেঙে গিয়েছিল দেব-শুভশ্রীর সম্পর্ক। তবে তাঁরা যে চূড়ান্ত পেশাদার, তার প্রমাণ মিলল পর্দায়। রিলের চুটিয়ে প্রেমে একটুও প্রভাব ফেলেনি রিয়েলের বিচ্ছেদ। এই ছবির প্রোমোশনের জন্য প্রায় এক যুগ পরে ফের এক ফ্রেমে ধরা দিয়েছেন দেশু। ছবির শেষে লেখা হল অসমাপ্ত কাহিনী। তাহলে কি পার্ট টু আসবে? সেখানেও কি পর্দায় ধরা দেবে #DESU? গানের লাইন অনুযায়ী বলতে হয়, “এখানেই বিদায় বলো না”।
–
–
–