১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ সাল, টেক্সাসের (Texas Murder Case) একটি হোটেল। ৫৫ বছর বয়সী গ্রেগ ফ্লেনিকেন নামের এক ব্যক্তিকে তাঁর হোটেলের (রুম নং ৩৪৮) বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সবকিছু এতটাই স্বাভাবিক ছিল যে, এটিকে একটি সাধারণ মৃত্যুই মনে হচ্ছিল।

কিন্তু রহস্যের শুরু হয় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসার পর (Texas Murder Case)। রিপোর্টে বলা হয়, গ্রেগের মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে হয়নি, বরং তাকে গুলি করা হয়েছে! একটি বুলেট তার অণ্ডকোষ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্নভিন্ন করে বুকে গিয়ে আটকে যায়। মৃত্যুটিকে হত্যাকাণ্ড বলে রায় দেওয়া হয়েছিল, তবে কারণ অজানা। আসলে কী ঘটেছে তা বুঝতে প্রায় দুই বছর সময় লাগে।

গোয়েন্দারা অবাক হয়েছিল কারণ, ঘটনাস্থলে কোনো রক্ত ছিল না। বাইরে থেকে শরীরে গুলির কোনো স্পষ্ট ক্ষতচিহ্নও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘরে বা আশেপাশে কোনো বন্দুক বা গুলির
খোল পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন- ইউটিউবার জ্যোতির বিরুদ্ধে আড়াই হাজার পাতার চার্জশিট পুলিশের

ঘটনাটি ছিল বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও বেশ জটিল। গুলির প্রবেশদ্বার এতটাই ছোট এবং এমন একটি স্পর্শকাতর জায়গায় ছিল যে, মৃত্যুর পর শরীরের চামড়া সংকুচিত হয়ে সেই ছিদ্রটি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। একারণে বাইরে থেকে কোনো ক্ষত বোঝা যাচ্ছিল না এবং রক্তপাত যা হওয়ার, পুরোটাই হয়েছিল শরীরের ভেতরে। একারণেই বাইরে কোনো রক্তের দাগ ছিল না।

কয়েক মাস তদন্তের পর, গোয়েন্দারা অবশেষে গ্রেগের ঘরের দেয়ালের এক কোণায় প্রায় চোখেই পড়ে না এমন একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র খুঁজে পান। এরপর পাশের ঘরের (রুম নং ৩৪৯) তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।

ওই রাতে পাশের ঘরে থাকা এক ব্যক্তি তার বন্ধুদের কাছে নিজের পিস্তলটি দেখানোর সময় অসাবধানবশত গুলি চালিয়ে দেন। সেই বুলেটটিই দেয়াল ভেদ করে ঘুমন্ত গ্রেগের শরীরে প্রবেশ করে। ভয়ে সেই ব্যক্তিরা ঘটনাটি চেপে যায় এবং দেয়ালে সৃষ্ট ছিদ্রটি টুথপেস্ট দিয়ে বন্ধ করে দেয়। তারা ভাবতেও পারেনি তাদের সামান্য একটি ভুল পাশের ঘরের মানুষটির জীবন কেড়ে নিয়েছে। পরে এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১০ বছর কারাদণ্ড হয়েছিল।

_

_

_

_