প্রথমে বকেয়া একশো দিনের কাজে। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বাংলাকে বঞ্চনা যে কেন্দ্রের মোদি সরকারের স্বভাব, সেটাই প্রমাণ করে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র। পাশাপাশি বকেয়া জল জীবন মিশনের (Jal Jeevan Mission) টাকাও। বাংলার বাসিন্দাদের জলের অভাবে রেখে ভোট ব্যাঙ্ক দখলের অপচেষ্টার পাল্টা এবার জলের বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী সি আর পাতিলের (C R Patil) সঙ্গে বৈঠক তৃণমূলের ১৬ সাংসদের।
জল জীবন মিশন প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্যের সামনভাবে অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে ফলাও করে ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সাধারণ মানুষের সামনেই তিনি রেখেছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি যে কতটা মিথ্যাচার, তা প্রমাণ করে দিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। জল জীবন মিশন (Jal Jeevan Mission) প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের অর্ধেক টাকা দিয়েই হাত গুটিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় জল শক্তি উন্নয়ন মন্ত্রক (Ministry of Jal Shakti)। এবার সেই বকেয়ার হিসাব নিয়ে কেন্দ্রীয় জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন লোকসভার তৃণমূলের ডেপুটি লিডার শতাব্দী রায়, লোকসভার সাংসদ খলিলুর রহমান, শর্মিলা সরকার, অসিত মাল, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, মিতালি বাগ, কালিপদ সোরেন, প্রতিমা মণ্ডল, বাপি হালদার, মহুয়া মৈত্র, সায়নী ঘোষ ও রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ চিক বরাইক, মৌসম নুর, মমতাবালা ঠাকুর।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হয়, গোটা রাজ্যে জল জীবন মিশনে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মোট বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ১০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্রের বরাদ্দ ৫ হাজার ৫০ কোটি। তার মধ্যে কেন্দ্র দিয়েছে ২,৫২৫ কোটি টাকা, অর্থাৎ অর্ধেক। অথচ রাজ্য তার বরাদ্দের ৩০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছে, যার কাজ ইতিমধ্যেই সমাপ্ত। পাশাপাশি ২৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। তুলে ধরা হয়, রাজ্যের যেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৪,৫৫৭ কোটি টাকা এই প্রকল্পে দেওয়ার কথা ছিল, সেখানে রাজ্য সরকার ৪,৯২৬ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে জল জীবন মিশন প্রকল্পে।
বাংলায় ইতিমধ্যেই ৫৬ শতাংশ গ্রামীণ গৃহস্থে জল সংযোগের কাজ শেষ হয়েছে। যার জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে ৫০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করার কথা থাকলেও রাজ্যের মানুষের স্বার্থে জমি, রক্ষণাবেক্ষণ থেকে আনুসঙ্গিক সব খরচ নিজেদের কাঁধেই বহন করছে।
আরও পড়ুন: SIR নিয়ে তোপ, ফের নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি অভিষেকের
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষেই কেন্দ্রের বরাদ্দের থেকে ২,৪০১ কোটি টাকা বেশি দিয়ে ফেলেছে। তারপরেও ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে এসে কেন্দ্র তাদের বকেয়া দিচ্ছে না। যার ফলে জলের অভাবে গ্রামীণ বাংলার একটা বড় অংশের মানুষ। অন্যদিকে ডিভিসি-র (DVC) মাধ্যমে বারবার জল ছাড়ার কারণে বানভাসি রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। তৃণমূল সাংসদরা দাবি করেন, যেন ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বকেয়া টাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রক দ্রুত দেয় এবং ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের নতুন বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করে। ভবিষ্যতে যাতে কেন্দ্রের টাকা বকেয়া থাকার কারণে এই প্রকল্পে অর্থের যোগান বন্ধ না রাখা হয়, তারও দাবি জানানো হয় তৃণমূল প্রতিনিধি দলের তরফে।
–
–
–
–