বুধবার থেকে ভারতীয় পণ্যের উপর অন্তত ৫০ শতাংশ করে শুল্ক (tariff) লাগু করে দিয়েছে আমেরিকা। খুব সোজা কথায় আমেরিকার বাজারে এতদিন যে ভারতীয় পণ্য ১০০ টাকায় বিক্রি হত, সেটার দাম দাঁড়াবে ১৫০ টাকা। স্বাভাবিক ভাবে সেই পণ্য চিন বা অন্য যে কোনও এশিয়ার দেশ থেকে কিনলে লাভবান হবেন আমেরিকার ব্যবসায়ীরা। আর সেখানেই ধাক্কা খেতে চলেছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
মূলত যে শিল্পগুলি বড়সড় ধাক্কার মুখে
পোশাক – এতদিন আমেরিকায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটির ব্যবসা করত ভারত। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্তে বিভিন্ন শহরে যে পোশাক (garments) তৈরি হত তা মার্কিন সংস্থা টার্গেট, ওয়ালমার্ট, গ্যাপ, জারা-তে বিক্রি হত। এবার ধাক্কা খাওয়ার মুখে সেই ব্যবসা।
হিরে – ইতিমধ্য়েই ২৫ শতাংশ শুল্ক লাগু হওয়ার পর আমেরিকায় ভারতের ৮৭ হাজার ৭০০ কোটির হিরের (diamond) বাজার ধাক্কা খেয়েছে। ৫০ শতাংশের উপর কর্মী ছাটাই হয়ে গিয়েছে। ৫০ শতাংশ শুল্ক লাগু হওয়ার পরে গোটা শিল্পের অস্তিত্বই প্রশ্নের মুখে।
চিংড়ি ও সামুদ্রিক মাছ – ভারতে থেকে আমেরিকায় যে ২ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটির ব্যবসা হত, তাতে ধাক্কা শুল্কের। এক্ষেত্রে প্রায় ৫৮.২৬ শতাংশ শুল্ক লাগু হয়েছে। ফলে অন্যান্য শিল্পের থেকে বেশি আঘাত এই শিল্পে পড়ার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই ভারতীয় ব্যবসায়ীরা অন্য বাজার খুঁজছেন। কিন্তু সম্পৃক্ত বিশ্বের বাজারে সেই বাজার ধরাও কার্যত অসম্ভব।
চর্মজাত দ্রব্য – আমেরিকার প্রায় সর্ববৃহৎ চর্মজাত দ্রব্যের (leader shoes) সরবরাহক ভারত। ৩৫ হাজার ৯৭ কোটি টাকার বাজার রয়েছে সেখানে। পশ্চিম ভারত থেকে পূর্ব ভারতের কলকাতা অন্যতম চর্মজাত দ্রব্যের ব্যবসা করে আমেরিকায়। সেই চর্মজাত দ্রব্যের উপর লাগু হল ৫৪.৫১ শতাংশ শুল্ক (tariff)।
রাসায়নিক দ্রব্য – ভারত থেকে ২৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকার রাসায়নিক দ্রব্য রফতানি হয় আমেরিকায়। এই শিল্পে ৫০ শতাংশ শুল্ক লাগু হওয়ার ফলে এই শিল্পের সঙ্গে অনুসারি ভারতীয় শিল্পগুলি সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে। তাতে সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়বেন ভারতীয় ভারী শিল্পের মজুররা।
দুগ্ধজাত দ্রব্য – সদ্য আমেরিকার সঙ্গে এই দ্রব্যের ব্যবসা বাড়ানোর পথে হেঁটেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই দ্রব্যগুলির উপর ন্যূনতম ৫৫.৮৪ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৮১.৪৬ শতাংশ শুল্ক লাগু হয়েছে। ফলে নতুন করে বাণিজ্য তো দূরের কথা, পুরোনো বাণিজ্যই এবার থমকে যাবে।
আরও পড়ুন: মুখ পুড়ল বিরোধীদের, পুজো অনুদানে বাধা নেই জানালো হাইকোর্ট
এর পাশাপাশি কাঠের আসবাব থেকে কাগজ ও কাগজের দ্রব্য, ইলেক্ট্রনিক ও সেমিকনডাক্টর, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সামগ্রী, গুরুত্বপূর্ণ খনিজতেও ৫০ শতাংশ শুল্ক লাগু হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কমপক্ষে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ১ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। সব মিলিয়ে ৬ লক্ষ কোটির আরও বেশি ক্ষতির মুখে ভারত।
–