অভিজিৎ ঘোষ
এই যে এই রুদ্র (Rudranil Ghosh), তোমাকে বলছি ভাই। তুমি কি সনাতন ধর্মের ঠিকাদার না চৌকিদার না সিকিউরিটি গার্ড। অনির্বাণকে মূর্খ, অশিক্ষিত, বলছ! নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছ। কোন শিক্ষায় শিক্ষিত? তোমার মাস্টার ডিগ্রি কি ‘পরশ্রীকাতরতা ও জ্বলুনি’তে ছিল! কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়েছ ভাই! দিল্লির বড় ভাই-মেজ ভাইয়ের ইউনিভার্সিটি? যেখানে মার্কশিট কেনা যায়?

সনাতন ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করছ? সনাতনী ফিরে এসেছে বলায় তোমার এত গাত্রদাহ কেন ভাই? কী জান সনাতন ধর্ম সম্বন্ধে? কতটুকু পড়াশোনা? ক্যামেরার সামনে অভিনয় করলে কিংবা দুটো কথা গুছিয়ে বলতে পারলেই বোদ্ধা হওয়া যায় না। ওটার জন্য পড়াশোনা করতে হয়। শুধু জেনে রাখ, সনাতন ধর্ম হল হিন্দুধর্মের আর এক নাম, যার অর্থ শাশ্বত বা চিরন্তন ধর্ম। এটি এমন একটি জীবনধারা ও আধ্যাত্মিক পথ যা কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠাতা শুরু করেননি, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিকশিত হয়েছে। এই ধর্মের মূল বিশ্বাস হল সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টি এবং ধ্বংস হল এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের একটি শাশ্বত ও স্থায়ী প্রক্রিয়া।… তো এবার বলো, সনাতনী ফিরে এসেছে বলায় আপত্তি কোথায়? ও বলতে চেয়েছে তোমাদের মতো মেকি, অশিক্ষিত, গোঁড়া, সুবিধাবাদী, বদমায়েশের দল ফিরে এসেছে, যাদের নীতি আদর্শ নেই, অন্ধের যষ্ঠি হল ধর্ম। তাকে যতখানি বিক্রি করে নির্বাচনে ফয়দা তোলা যায় তার চেষ্টা। তা তোমরা তো তাই-ই করতে এসেছে। অনির্বাণ গানে গানে আসল কথাটা বলে দেওয়াতে এত কষ্ট কিসের ভাই! এক সময়ে কাজ না পাওয়ার কষ্ট ছিল, এক সময়ে দু লাখ টাকার মাসিক চাকরি হারানোর কষ্ট ছিল, আর এখন তোমার আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের কষ্ট। বুঝি তো, তুমি এতো প্রতিভাবান তবু তোমায় কেউ বুঝতে পারল না! আরে বুঝবে বুঝবে, পাশের পাড়ার সনাতনদা ঠিক বুঝবে!

দেখলাম তোমার বাম মানে মাকুদের উপর ভীষণ রাগ। রাগ তো থাকবেই। পার্টি অফিসে বসে থাকতে। তখনও কিছুই করতে পারনি। যখন দু-একটা কাজ পাচ্ছ, তখন ঐন্দ্রিলার ধর্ষণ মামলা খেলে। অ্যাকাডেমি থেকে তোমায় তুলতে গেল। সে কি কান্না!! ভেবেছিলে বুদ্ধবাবু তোমায় বাঁচাবে! হল না। তা বাম তোমার কাছে মাকু হবে না তো কাকু হবে! কিন্তু ভাই কথা বলবে যখন ভেবে বলবে। ভাববে না সকলে তোমার মতো অশিক্ষিত। একবার তুমি বলছ বামেরা শ্রীরামকৃষ্ণ এবং স্বামীজিকে ‘দাদা’ বানিয়েছে, আবার তারপরে বলছ মহাপুরুষ বানিয়েছে। কতটুকু তুমি সিপিএমের ইতিহাস বা কাজকর্ম জান সন্দেহ হচ্ছে। বিরল কয়েকজন বাদে কোনও মাকু নেতা, হাফনেতাকে দেখিনি মঞ্চে কিংবা মিটিংয়ে রামকৃষ্ণ কিংবা স্বামীজির নাম করছেন। একবার বলছ এই দুজনকে তারা দাদা বানিয়েছে, একবার বলছ মহাপুরুষ বানিয়েছে। দুটোর শব্দার্থ ঠিক উলটো। আর সিপিএম যদি এটা করেই থাকে, তাহলে তোমাদের মতো সনাতনদারা কী করছিল?ঘাস ছিঁড়ছিল? জেনে বুঝে শব্দ ব্যবহার কর। বাংলা ভাষাটা শিখতে হয়। ওটা কোনও রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে বসে শেখা যায় না। বিশেষত তারা শিখতে পারে না, যারা ধান্দায় পার্টি অফিস আলো করে।

শোনো ভাই রুদ্র (Rudranil Ghosh), অভিনয়টা তুমি ভাল কর সেটা জানি, কিন্তু ধান্দাবাজির রাজনীতিটা করতে গিয়ে তুমি প্রায় সব ক’টা দল ঘুরে ফেলেছ। আমি বলি কি এবার একটা দল তৈরি কর। নাম দিও ‘ধান্ধারু’।
