
গত ৫ সেপ্টেম্বর কেপি ওলির নেতৃত্বে কমিউনিস্ট সরকার দেশের সার্বভৌমিকতার নামে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স-সহ ২৬টি সামাজিক মাধ্যমকে নিষিদ্ধ করে। এই প্রেক্ষিতে নাগরিক অধিকার তথা বাক্ স্বাধীনতার পক্ষে এবং বাম সরকারের দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশের নবীন সমাজ নেপালের পার্লামেন্ট চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শনে ঐক্যবদ্ধ হয় (হামার নেপাল)। সরকারের নির্দেশে রবার বুলেট, জলকামান এবং শেষমেশ গুলি চালানো হয়। তাতে প্রায় ২০ জন নিহত এবং ৩০০-র কাছাকাছি মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হওয়ায় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেন। তাতেও জনবিক্ষোভ কমেনি।

যে ওলি সরকার জনগণের অধিকারের নামে ২০২৪ সালে তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসীন হয়, সেই সরকারই দেশের সার্বভৌমিকতার নামে নাগরিক অধিকার হরণ করে মানুষ খুনে নেমেছে বলে অনেক রাজনৈতিক ভাষ্যকার মনে করছেন। আসলে বাম সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ দীর্ঘদিন থেকেই ছিল। তাতে আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। তাতেই জনবিক্ষোভ আর শান্তিপূর্ণ অবস্থানেও পুলিশি নির্যাতনে নামে সরকার। এ যেন মুখ আর মুখোশের প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট করে দেয়। ঠিক যেমন ২০০৮ সালে এ-দেশে কংগ্রেস সরকারের থেকে বেরিয়ে যায় সিপিএম, দেশের সার্বভৌমিকতার নামে, ভারত-মার্কিন ১২৩ পারমাণবিক চুক্তির বিরুদ্ধে।

একদিকে যেমন বাক্ স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই নেপালের কাঠমান্ডু শহর-সহ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলিতে কার্ফু জারি করেছে সরকার। যা স্বাভাবিকভাবেই নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের সমান। তাই নবীন সমাজ দুর্নীতিপরায়ণ, স্বজনপোষণকারী, স্বৈরতান্ত্রিক বাম সরকারের পতন চাইছে।
