ছাত্রীর উপর কুনজর। তা থেকেই অপহরণ করে ধর্ষণ। তার মধ্যেই কী ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে খুন রামপুরহাটের (Rampurhat) আদিবাসী ছাত্রীর খুন শিক্ষক মনোজ পাল, এই প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজে পায়নি তদন্তকারীরা। আর তাতে সবথেকে বড় সমস্য়া তৈরি করেছে শরীরের নিম্নাঙ্গ খুঁজে না পাওয়ার সমস্যা। ফলে ধর্ষণ (rape) প্রমাণ করতেও সমস্য়ায় পুলিশ। ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে ও তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী আধিকারিক জুলি সাহাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করছেন রামপুরহাটের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (SDPO, Rampurhat) গোবিন্দ সিকদার।

২৮ অগাস্ট থেকে নিখোঁজ রামপুরহাটের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। এরপরই প্রকাশ্যে এসেছে শিক্ষক মনোজের একাধিক কুকীর্তি। বিকৃত যৌনতায় আশক্ত ছিলেন মনোজ, এমনটাও আশঙ্কা করছে পুলিশ। তার জন্যই এই ছাত্রীকে আগেও কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি, পরিবারের দাবি। এরপর ছাত্রীকে ২৮ অগাস্ট নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কী করেছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তবে এই দীর্ঘ ২০ দিন দেহ নিয়ে কী করেছিল মনোজ, তা নিয়ে কাটছে না ধন্দ। সেই সঙ্গে তদন্ত জটিল করে তুলতেই নিম্নাঙ্গ কোথাও লোপাট করেছে কি না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধন্দ।

মূলত নিহত স্কুলপড়ুয়ার দেহের হাত ও নিম্নাঙ্গ খুঁজে না পাওয়ায় ধর্ষণের (rape) প্রমাণ জোগাড় করে উঠতেই পারেনি এতদিনে পুলিশ (Rampurhat police)। তার কারণ হিসাবে পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিক্ষোভের জেরে মনোজ পালকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তদন্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। শুক্রবার পর্যন্তও বিক্ষোভ দেখিয়ে রামপুরহাট-দুমকা রোড অবরোধ করে রেখেছিলেন স্থানীয় মানুষ ও আদিবাসী গাঁওতা। মনোজ পালকে বের করে তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেই পুলিশের থেকে আসামীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে বিক্ষুব্ধ নির্যাতিতার পরিবার ও সমাজের মানুষ।

যদিও তার পিছনে পুলিশের ব্যর্থতার নিদর্শনই বারবার উঠে এসেছে। গ্রামবাসীদের দাবি, সময় মতো মনোজ পালকে গ্রেফতার করেও ছেড়ে না দিলে খুন হত না ছাত্রী। যদিও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মনোজ ২৯ অগাস্ট নির্যাতিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল। ৩০ তারিখ গ্রামের যে বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা, সেখানেই সেই সময়ে ভরা ছিল নিহত ছাত্রীর দেহ, অনুমান পুলিশের। গ্রামবাসীদের দাবি, এর পরেও তদন্তকারী আধিকারিক জুলি সাহা পরিবারের সদস্যদের কাছে দাবি করেছিলেন নিহত ছাত্রী প্রেমের সম্পর্কের কারণে পালিয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: কৃষ্ণনগরের ছায়া তাহেরপুরে: প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে নাবালিকাকে খুন! জালে তরুণ

মনোজ পালকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হতেই সেই সব ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। এরপরই আইও জুলি সাহাকে তদন্ত থেকে সরিয়ে দিয়ে ক্লোজ করা হয়। তাকে পুলিশ লাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের আশা এবার গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখানো বন্ধ করলে অভিযুক্ত মনোজ পালকে নিয়ে দেহাংশ খোঁজার কাজ করা সম্ভব হবে। নিম্নাঙ্গ পেলে ডাক্তারি পরীক্ষাতে ধর্ষণ প্রমাণ সম্ভব হবে, পুলিশের পক্ষে।

–

–

–

–