Wednesday, December 3, 2025

ষড়যন্ত্রের আঁতুরঘর আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি? রুম নম্বর ১৩!

Date:

Share post:

দেশের নজর এখন আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি। দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পরে চর্চার শিরোনামে এই বিশ্ববিদ্যালয় (University)। তদন্তকারীদের নজরেও রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় ও বিল্ডিং নম্বর ১৭, রুম নম্বর ১৩। অভিযোগ, দিল্লির (Delhi) বিস্ফোরণের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ডাক্তারদের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। চলছে ৫৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব। সংখ্যালঘু প্রধান ধৌজ গ্রামের এই বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে বিস্ফোরণের (Blast) সঙ্গে যুক্ত হল সেটাই বুঝতে চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কীভাবে ক্যাম্পাসে দেশ বিরোধী কাজ চলত আর মৌলবাদী কার্যকলাপের আশ্রয়স্থল হয়ে গেল এই প্রতিষ্ঠান সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয়। ৬ ডিসেম্বর, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনই দিল্লির ৬ জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে।

১৯৯৭ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (Engineering College) হিসেবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের পথচলা শুরু করে। ২০১৪ সালে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। এখানে বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হতো। হরিয়ানা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মাধ্যমে এই ইউনিভার্সিটি তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে এটি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এবং আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির বিকল্প হিসাবে পথচলা শুরু করে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কয়েকটি কলেজও রয়েছে যেমন ব্রাউন হিল কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, আল ফালাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং দ্যা আল ফালাহ স্কুল অব এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং। আল-ফালাহ মেডিক্যাল কলেজও এই প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত। এই মেডিক্যাল কলেজে ৬৫০ শয্যার হাসপাতালও চলে যেখানে বিনামূল্যে রোগী দেখা হয়। আল-ফালাহ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করে যার চেয়ারম্যান আহমেদ সিদ্দিকি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি আবদুল্লা কাশিমি এবং ডিএমই হলেন মহম্মদ ওয়াজিদ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ডঃ ভূপিন্দ্রর কৌর আনন্দ ও প্রফেসর ডাঃ মহম্মদ পারভেজ রেজিস্টার পদে রয়েছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই বিশ্ববিদ্যালয় বা হোস্টেলের নাম উঠে এল? তদন্তে উঠে এসেছে আদিলের পরিচয় গোপন করে আল ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের হস্টেলে মুজাম্মিল তাঁকে এনে রাখেন। জুলাই, অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে বেশ কয়েকবার আদিলকে ওই হাসপাতালের হস্টেলে এনে রাখা হয় এবং তাঁর থাকার অনুমতি করিয়ে দিত শাহিন। দিল্লি (Delhi) বিস্ফোরণের দিনই দুপুরে গ্রেফতার হওয়া শাহিন যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিল বলেই জানা গিয়েছে। সোমবারের ঘটনার পর বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার আগেও চার চিকিৎসক এসেছে পুলিশের জালে। বুধবার তদন্তকারীরা একাধিক রেজিস্টার এবং হস্টেলের রেজিস্টার খতিয়ে দেখার পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে মুজাম্মিলের সঙ্গে এক ব্যক্তি এসে থাকতেন তবে নিজের নাম কখনও আদিল দেননি। মুজাম্মিলের আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দেওয়া হত। মুজাম্মিল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কাছেই বাড়ি ভাড়া নিলেও, সেখানে শুধু মালপত্র রাখা হত এবং সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তাই তদন্তকারীরা মনে করছেন মুজাম্মিল, শাহিন, আদিলের বৈঠক হস্টেলেই হত। পরে যদিও এই দলে উমর নবী যোগ দেন। দিল্লির বিভিন্ন জায়গার রেইকি করার দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

মুজাম্মিল যে ঘরে থাকত, সেখান থেকে একাধিক বই, কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে যে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে, সেখান থেকে একাধিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার অবস্থাও খুব খারাপ। প্রশ্ন উঠেছে, হাসপাতাল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে কে ঢুকছে, কখন ঢুকছে, সেই দিকে কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করা হয়েছিল।

spot_img

Related articles

বৃহস্পতিবার লক্ষাধিক জমায়েত: দলনেত্রীর সম্প্রীতির বার্তা শুনতে অপেক্ষায় বহরমপুর

রাজ্যে এসআইআর পরিস্থিতি ও বিজেপির ক্রমাগত উস্কানির রাজনীতির মধ্যেই জেলা সফরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার...

আর জি কর মামলার তদন্ত শেষ, সমন পাঠানোর নির্দেশ আখতার আলিকে

আর জি কর হাসপাতালের মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে বলে বুধবার আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতকে জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা...

অ্যাপ দিয়ে ফোনে আড়ি পাতা! চাপের মুখে ‘সঞ্চার সাথি’ নিয়ে পিছু হঠল কেন্দ্র

পেগাসাস মামলা এখনও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পিছু ছাড়েনি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগসাজশ করে ফোনে আড়ি পাতা বা ব্যক্তিগত...

জঘন্য বোলিং- হতশ্রী ফিল্ডিংয়ের যুগলবন্দিতে ম্যাচ হারল ভারত, ঐতিহাসিক জয় বাভুমাদের

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ না ক্লাব স্তরের খেলা ভারতীয় বোলিং (Indian Bowling) দেখে তা বোঝা দায়। এই বোলারদের নিয়ে...