পার্থর গোপন ভয়েস ক্লিপ আছে! কার সঙ্গে? বিস্ফোরক তথ্য দিলেন বৈশাখী

0
62

জয়িতা মৌলিক
“শোভন-বৈশাখী হতে গেলে অনেক আগুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। ওটা ওতো সহজ নয়। শোভন নিজের বান্ধবীর দিকে দায় ঠেলে দেয় না। উল্টে তাকে সব রকম বিপদ থেকে আগলে রাখে।” জামিনে মুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) মন্তব্য নিয়ে ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর সাক্ষাৎকারে ধুয়ে দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Boshakhi Banerjee)। জানালেন পার্থর এক বান্ধবীর (তিনি অর্পিতা নন) ভয়েস ক্লিপ আছে বৈশাখীর কাছে। তাতে কী আছে? বিস্ফোরক তথ্য জানালেন প্রাক্তন অধ্যাপিকা।

জেলমুক্তির পরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমার বউ নেই, বান্ধবী আছে। হ্যাঁ, অর্পিতা আমার বান্ধবী। তাতে অসুবিধে কোথায়?” টেনেছিলেন শোভন-বৈশাখীর (Sobhan Chatterjee-Boishakhi Banerjee) প্রসঙ্গও। বৃহস্পতিবার, ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর মুখোমুখি হয়ে তীব্র কটাক্ষ করে বৈশাখী বলেন, “ওটাতো জেল না সংশোধনাগার। তাই ওঁর বাক্যেরও সংশোধন হয়েছে। আগে যাঁকে ভাগ্নি বলতেন, অল্প চিনি বলতেন, এখন তাঁকেই বান্ধবী বলছেন।” বৈশাখী বলেন, কথাটা ‘পুরুষমানুষ’। সংশোধনাগারের থেকে পার্থ মানুষ হতে পারেননি, তবে পুরুষ হয়ে অর্পিতাকে বান্ধবী বলছেন।

সাক্ষাৎকারে পার্থ বলেছিলেন, ব্যক্তিজীবনকে রাজনীতিতে টানা ঠিক নয়। এদিন সেই মন্তব্য তীব্র শ্লেষ নিয়ে জ্বলে ওঠেন বৈশাখী। বলেন, “আজ নিজেই বলছেন, ব্যক্তিজীবনকে রাজনীতিতে টানা ঠিক নয়। অথচ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবন শেষ করার, তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নীচে নামানোর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন এই পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বন্ধু সেজে শোভনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছিলেন উনি।” বৈশাখের কথায়, একমাত্র গিরগিটি সঙ্গেই এর তুলনা করা যায়।

বৈশাখীর (Boshakhi Banerjee) মতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্যেই তৃণমূলের ফেস লস হয়েছে। দলের মুখপাত্রদের সব জায়গায় গিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। পার্থ নিজের দুর্নীতির আর ব্যভিচারের জন্যেই এইসব করেছেন। তাঁর বান্ধবীর বাড়ি থেকে রাশি রাশি কোটি কোটি টাকা, গয়না, খেলনা(!)- পাওয়া গিয়োছে। মুচকি হেসে বৈশাখী বলেন, “শোভনের বান্ধবী অর্থাৎ আমার বাড়ি থেকে কিন্তু এইসব পাওয়া যায়নি।”

পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, তাঁর বউ নেই বান্ধবী থাকতেই পারে। এই কথার তীব্র প্রতিবাদ করেন বৈশাখী। স্পষ্ট জানান, “স্ত্রী বেঁচে থাকতেই একাধিক বান্ধবী ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।” বলেন, “স্ত্রী থাকাকালীনই পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুরু করেছিলেন ‘ইচ্ছেডানা’, ‘অপা’-র মতো গল্প। তখন তিনি ছিলেন মামা, এখন বন্ধু!”

এরপরেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বৈশাখী। জানান, “আমার কাছে ভয়েস ক্লিপ আছে- পার্থ আর ওনার এক বান্ধবীর। সত্যতা যাচাই করিনি, কারণ আমার ইচ্ছে বা রুচি নেই। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বর আমি যতটা চিনি, তাতে মনে হচ্ছে ওটা ওঁরই কন্ঠস্বর। সেখানে মেয়েটি প্রশ্ন করছে, ‘আমি তোমার কে?’—উনি উত্তর দিচ্ছেন, ‘বউ না ভউ’!” তবে সেই মহিলা যে অর্পিতা নন, সেটা স্পষ্ট জানিয়েছেন বৈশাখী। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রী থাকাকালীনই এসব সম্পর্ক ছিল পার্থর। তাঁর পরিবারও সেটা জানে। পার্থর যে দুর্নীতিগ্রস্ত সে কথা তাঁর পরিবার জানে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তে স্বয়ং জামাই রাজসাক্ষী হয়েছেন।

সবশেষে বৈশাখী ফের বলেছেন, পার্থর এইসব মন্তব্য আসলে মহিলাদের অসম্মান। একবার যাঁকে ভাগ্নি বলছেন, তাঁকেই আবার বান্ধবী বলছেন। স্ত্রী থাকতে যিনি ভাগ্নি, স্ত্রী বিয়োগের পরে তিনিই বান্ধবী! নিজেদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বৈশাখী জানান, “শোভন-বৈশাখী হতে গেলে অনেক আগুনের মধ্যে দিয়ে, অনেক লড়াই করে যেতে হয়। শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজের দুর্নীতির দায় তাঁর বান্ধবীর দিকে ঠেলে দেননি, উল্টে তাঁকে সব রকম বিপদ থেকে বুক দিয়ে আগলে রাখেন।”