Tuesday, August 26, 2025

বাস কন্ডাক্টর মায়ের ছেলে দেশকে এনে দিলো এশিয়া কাপ

Date:

Share post:

ছেলের সাফল্যে মায়ের চোখভরা আনন্দাশ্রু। ছেলের সাফল্যে যে কোনও মায়ের এমনই হয়।
ছেলে অবশ্য এখনও একডাকে অচেনা।
নাম অথর্ব বিনোদ আনকোলেকর। মুম্বইয়ের এক উঠতি প্রতিভাবান লেগ স্পিনার। শ্রীলঙ্কায় অনূর্ধ্ব-19 এশিয়া কাপের ফাইনালে এই অথর্ব বিনোদের স্পিনের ভেলকিতে বাংলাদেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিলো ভারতীয় দল। এবং 106 রানে শেষ হয়েছিলো ইনিংস। তখন কে ভেবেছিলো এই ম্যাচ বের করে নেবে ভারত। ভাবনার বাইরে ছিলো যে এই অথর্ব বিনোদ’রাই ট্রফি জিতে দেশে ফিরবেন। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সেদিন স্পিনের জাদুতে 28 রানে 5 উইকেট নিয়ে প্রায় অসাধ্য সাধন ঘটান অথর্ব। ম্যাচের সেরা পুরস্কারও ছিনিয়ে নেন তিনি।

মা বৈদেহী দেবী। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর স্বামীর মৃত্যুর পর বৈদেহী দেবী মহারাষ্ট্র পরিবহন দপ্তরে বাস কন্ডাক্টরের কাজ শুরু করেন। মাত্র 10 বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিলো অথর্ব।
বৈদেহী দেবী জানালেন পুরোনো সে সব দিনের কথা। “বেদের এক অংশের নাম অথর্ব। সেই নামেই বড় ছেলের নাম রেখেছিলাম অথর্ব। ওর ছেলেবেলা একদমই সুখের হয়নি। তখন অথর্বের বয়স মাত্র দশ। ওর ভাই আরও ছোটো। দুই ছেলেকে বড় করাই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ। অনেক পরিশ্রম করেছি ছেলেদের মানুষ করতে। মা হিসাবে আজ আমি গর্বিত। ওর বাবা বেঁচে থাকলে আজ উনিও খুশি হতেন।’

চোখের জল মুছে অথর্বের মা জানালেন, “আমি কিন্তু কখনও এমন দিন দেখব বলে আশা করিনি। ক্রিকেট খেলা অনেক খরচের। ওর বাবার মৃত্যুর পর সংসার চালানোই ছিলো অসম্ভব। তার মাঝেই একদিন অথর্বকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুই কি সত্যিই ক্রিকেট খেলবি? ও হ্যাঁ বললো। তারপর আর কিছু ভাবিনি। যা হওয়ার হবে। ভালো স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি ওকে বড় ক্রিকেটার হিসাবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টায় ফাঁক রাখিনি। অফিসের সহকর্মী, বন্ধুরাও এই লড়াইয়ে আমার পাশে থেকেছে। সবার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ। ছোট ছেলেটাও দাদাকে দেখে ক্রিকেট খেলছে। জানি না ও কতদূর কী করবে!”

মায়ের এই অসম লড়াই দেখেই বড় হয়েছে অথর্ব। বাইশগজে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে শিখিছে সেখান থেকেই। ফাইনালে টিভিতে ছেলের খেলা দেখেছেন মা বৈদেহী দেবী। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে মাত্র 5 রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়। বৈদেহী দেবী জানান, “আমি গণপতি বাপ্পার কাছে প্রার্থনা করছিলাম যাতে ভারত জেতে। কম রান ওঠায় আমি একটু বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সিদ্ধিদাতা আমার জীবনের অনেক মনোবাঞ্ছাই পূর্ণ করেছেন। এবারও করেছেন।”

spot_img

Related articles

বনতারায় কতটা সুরক্ষিত পশুরা: জানতে SIT গঠন সুপ্রিম কোর্টের

বিপদগ্রস্ত পশুদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নজর কাড়ার চেষ্টা চালিয়েছিল গুজরাটের বনতারা (Vantara)। এবার প্রশ্ন উঠেছে সেখানে দেশের ও...

কীভাবে দুর্নীতিবাজদের সমর্থন করতে হয় মোদিকে দেখে শিখুন! তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের

দুর্নীতিগ্রস্তদের পাশে বসিয়ে বাংলায় এসে বড় বড় কথা বলে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে সর্বক্ষণ...

ট্রাম্পের শুল্কবাণে অস্থিরতা শেয়ার বাজারে! পড়ছে সেনসেক্স-নিফটি

আমেরিকার(USA) ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঠিক একদিন আগেই ধরাশায়ী শেয়ার বাজার(Share Market)। দেশের শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস। দুপুর...

‘জামাই আদর’ করে নিয়ে গিয়ে ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের হেনস্থা কেন? গর্জে উঠলেন মমতা

ভিনরাজ্যে ‘জামাই আদর’ করে নিয়ে গিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার, বর্ধমান শহরের পরিষেবা প্রদান মঞ্চ...