Thursday, August 28, 2025

গুমনামি দেখার পর কলম ধরে কী জানালেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়?

Date:

Share post:

প্রসঙ্গ ‘গুমনামি’।

প্রসেনজিৎ অসাধারণ। তিনটে লুক আছে এই ছবিতে। নেতাজী মারা যাওয়া পর্যন্ত, সাইবেরিয়ায় (সম্ভবত) নেতাজী আর গুমনামি বাবা ওরফে ভগবানজী। তিনটেতেই ফাটাফাটি। অভিনয় নিয়ে কোনও কথা হবে না। তিনটে চরিত্রকে বুঝে আত্মস্থ করে ক্যামেরার সামনে বুম্বা দা ভাল নয়, বেশ ভাল নয়, খুব ভালো।

অনির্বাণ বেশ ভালো। সাংবাদিকতার মূল সূত্র subjective detachment থেকে সরে গিয়ে এক obsessive গবেষক (?) চরিত্রে যথাযথ। চরিত্র কে রূঢ় করে তোলার জন্য, ঔদ্ধত্য কে তুলে ধরার জন্য যথেষ্ট ডায়ালগ ছিল, অনির্বাণ সেগুলো কাজে লাগিয়েছে।

তনুশ্রীর যথাযথ। তার বেশিও না কমও না।

পরিচালকের কাবিলিয়ত সব্বার জানা। অতএব তিনি যা বলার চেষ্টা করেছেন, যে পদ্ধতিতে করেছেন তা সহজ সরল। কোনও জটিলতায় যান নি। time, space নিয়ে কোনও ভ্যানতারামো নয়। সোজাসুজি গল্প বলা।

আরও পড়ুন – বেনজির! মুখ্যমন্ত্রী আসবেন না,অভিমানে ট্যাংরার শতবর্ষের পুজোর উদ্বোধন বাতিল

এবং বিষয়। মিথ্যে, আরও মিথ্যে, প্রবল মিথ্যে। ছবির প্রমোশনে যাই বলে থাকুন ছবিতে সপাট বলেদিয়েছেন ওসব তিনটে সম্ভাবনা ফম্বাবনা ফালতু ব্যাপার এই দেখ ভাই আমি কনোনড্রামের আষাঢ়ে গল্প নিয়ে ছবি করছি। নেতাজীই গুমনামি বাবা।

রশোমন ? ভুলে যান। নেতাজী নিয়ে যে তত্ত্ব, বা গুজব ছড়াচ্ছে তার ছাল ছাড়িয়ে, প্রতিটা তত্ত্ব কে, তার অনুষঙ্গগুলোকে বিচার করে কোনও conclusion এ না এসে একটা ছবি করাই যেত, যে ছবি সৃজিত করতেই পারতেন। না করে এক ‘আহারে বেচারা নেতাজী প্রেমিকের ‘আখ্যান শোনালেন। যা হতেই পারতো ভারতবর্ষের অন্যতম রাজনৈতিক নেতার অন্তর্ধান নিয়ে এক এপিক সিনেমা, সেটা হয়ে দাঁড়ালো অত্যন্ত জোলো রকবাজি বা চন্ডিমন্ডপের গালগল্প।

এমনকি নেতাজীর কংগ্রেস থেকে পদত্যাগের বিষয়টাও মিথ্যেয় ভরা থাকলো। এত কম গবেষণা, এত কম প্রশ্ন ছাড়া গুজব নিয়ে সিনেমা খুব কম হয়েছে, আমি তো দেখি নি।

আরও পড়ুন – ফের দিল্লিতে বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক!

মুখার্জি কমিশন সংসদে পেশ করা হয়েছিল, তা নিয়ে ডিবেট হয়েছিল, ২৬ পাতার action taken report আছে সে সব উবে গিয়ে ‘উনি বলিলেন’ আর ‘ইনি বলিলেন’ দিয়ে তো ইতিহাস হয় না।

তবে হ্যাঁ, ইতিহাস ভুলিয়ে দেবার, বিকৃত করার এক অধ্যায় চলছে। তার অঙ্গ হিসেবেই গুমনামি এসেছে বাজারে। হেইল হিটলার বলে হাত তুলেছিল কেবল লক্ষ লক্ষ সাধারণ জার্মানবাসীই নয়, হাত তুলেছিলেন তৎকালীন শিল্প সংস্কৃতির নামি দামি মুখেরাও। সমস্ত ইতিহাসকে অন্য সূত্রে লেখার চেষ্টাও হয়েছিল, সফল হয়নি। কারণ আবার সেই একই কে কী বলিল দিয়ে ইতিহাস হয় না, ইতিহাস একটা সময়ে মিথ্যের যাবতীয় জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবেই।

ততদিন চলুক গুজব, গাল গল্প, হ্যাঁ ইতিহাসের নামেই চলুক।

সে যাই হোক, বাংলা সিনেমা দেখুন। হলে গিয়েই দেখুন।

আরও পড়ুন – পঞ্চমীর সন্ধ্যাতেই খুলছে উল্টোডাঙা ব্রিজের বন্ধ অংশ

spot_img

Related articles

রজতজয়ন্তীতে ডব্লিউবিএনইউজেএসকে উচ্চ প্রশংসা, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ প্রধান বিচারপতির

কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় (ডব্লিউবিএনইউজেএস)-এর উৎকর্ষতা এখন বেঙ্গালুরুর থেকেও এগিয়ে—রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের...

এসএসসি নিয়োগ পরীক্ষা পিছবে না, আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট 

স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেও লাভ হলো না কিছু প্রার্থীর। দেশের...

যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ! রবিবার টালিগঞ্জ থেকে ক্ষুদিরাম পর্যন্ত বন্ধ মেট্রো 

কলকাতার ব্লু লাইনের যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ। আগামী রবিবার মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন পর্যন্ত বন্ধ...

এনএইচএম কর্মীদের বড় উপহার, উৎসবের মুখে বোনাস ঘোষণা রাজ্যের 

উৎসবের দোরগোড়ায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাজে নিযুক্ত রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবক ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।...