Saturday, November 15, 2025

সংস্কৃত পণ্ডিত ফিরোজের পাশে পরেশ — তাহলে রফির ভজন গাওয়া উচিত হয়নি!

Date:

Share post:

ফিরোজ খানকে নিয়ে উত্তাল দেশের শিক্ষা মহল। ফিরোজের একটাই দোষ তিনি মুসলিম, কিন্তু সংস্কৃতে বিষেশজ্ঞ এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করছেন। তাই পড়ুয়াদের একাংশ তাঁর কাছে সংস্কৃত পড়বেন না বলে বায়না তুলেছেন। এই ধরণের নোংরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ দোষে দুষ্ট ঘটনায় বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল শুধু ফিরোজের পাশে দাঁড়াননি, উদাহরণ টেনে বলেছেন তাহলে নওশাদজির ভজন লেখা বা রফি সাহেবের ভজন গাওয়া উচিত হয়নি!

ফিরোজ দুর্দান্ত ছাত্র ছিলেন। ভাল নম্বর নিয়ে শাস্ত্রী (স্নাতক), আচার্য (স্নাতকোত্তর) শিক্ষাশাস্ত্রী (বিএড) পাস এবং ২০১৮ সালে পিএইচডি শেষ করেন। সংস্কৃত নিয়ে যে ক’জন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তার অন্যতম ফিরোজ। ফরোজের বাবাও সংস্কৃতে স্নাতক। রীতিমতো পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় তিনি অধ্যাপনার চাকরি পান। আর তার পরেই শুরু হয় ঘটনার ঘনঘটা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন ফিরোজ খানই এই পদে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি ছিল। ইউজিসির সিলেকশন কমিটি সমস্ত নিয়ম মেনে তাকে নিয়োগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত ধর্ম, জাতি, সম্প্রদায়, লিঙ্গকে সমান অধিকার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু তারপরেও বিক্ষোভ চলতে থাকে। ফলে পড়াতে যেতে পারছেন না ফিরোজ। তার মোবাইল বন্ধ। কথা বলছেন না কারওর সঙ্গে। এ প্রসঙ্গে পরেশ রাওয়াল তার টুইটারে একহাত নিয়েছেন নেটিজেনদের। বলেছেন অধ্যাপক ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় যা চলছে তা দেখে আমি স্তম্ভিত। ধর্মের সঙ্গে ভাষার কী সম্পর্ক! আশ্চর্যের বিষয় হলো সংস্কৃত ভাষায় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করেছে ফিরোজ। তারপর এই প্রশ্ন আসে কোথা থেকে? অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বন্ধ হোক। ভারতের মতো দেশে এ জিনিস শোভনীয় নয়।

দীর্ঘদিন চুপ থাকার পর একটি সর্বভারতীয় দৈনিকে মুখ খুলেছেন। বলেছেন, বহু বছর ধরে সংস্কৃতি চর্চা করছি। যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন সংস্কৃত শিখতে শুরু করেছিলাম। কখনও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। আমার এলাকায় বহু মুসলিম মানুষ বাস করেন। কেউ কখনও বলেননি কেন আমি সংস্কৃত পড়ছি। কোনও মুসলিম এসে এসে আমাকে মনে করিয়ে দেননি যে আমি মুসলিম। আমি যতটা সংস্কৃত জানি ততটা কোরআনও জানি। এলাকার বিশিষ্ট হিন্দুরা সংস্কৃত এবং সাহিত্যে আমার পড়াশোনার কারণে প্রশংসা করেন। আর এখন যখন পড়ুয়াদের শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছি তখন আমার ধর্মটাকে বড় করে দেখা হচ্ছে।

তবু হেরে যাওয়ার প্রাত্র নন ফিরোজ। দৃঢ কণ্ঠে বলেছেন, আমি নিশ্চিত, ভাল পড়াতে পারলে ওদের মনের বাধা দূর হয়ে যাবে। এত তাড়াতাড়ি আমি হেরে যাব না।

আরও পড়ুন-করিমপুর উপনির্বাচনের প্রচারে তৃণমূলকে জোর টক্কর দিচ্ছে বিজেপি

 

spot_img

Related articles

এজরা স্ট্রিটে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড! বেআইনি নির্মাণে কড়া পদক্ষেপ: জানালেন মেয়র, নিয়ম মেনে ব্যবসার বার্তা সুজিতের

সাতসকালে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড বড়বাজারের (Barobazar) এজরা স্ট্রিটের ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকানে। দমকলের (Fire Brigade) ২০টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন (Fire)...

ক্রমশ কাজের চাপ বাড়াচ্ছে কমিশন: জেলায় জেলায় বিক্ষোভে BLO-রা

নির্বাচনী এসআইআর প্রক্রিয়ায় সাধারণ নাগরিকদের যাতে লাইনে দাঁড়াতে না হয়, তার জন্য কমিশনের তরফে প্রতিনিধি বুথ লেভেল অফিসাররা...

গিলের চোট নিয়ে উদ্বেগ, বেশি রানের লিড নিতে ব্যর্থ ভারত

আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই ভারতীয় শিবিরের চোটের উদ্বেগ। শনিবার দিনের শুরুতেই ঘাড়ের ব্যাথা নিয়ে মাঠ ছাড়লেন...

এসআইআর আতঙ্ক: ফর্ম ফিলাপের আতঙ্কে ব্রেন স্ট্রোক আক্রান্ত প্রৌঢ়

এসআইআর আরও এক কতটা জটিল একজন সাধারণ গ্রামের মানুষের কাছে তার আরও এক প্রমাণ মিলল। কখনও নামের বানান,...