রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে। এবার বিধানসভায় বিধি পেশ করে আচার্য তথা রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করল রাজ্য। ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম সংক্রান্ত আইনের পরিপ্রেক্ষিতে যে বিধি তৈরি করা হয়েছিল, সেই বিধিতে আজ বদল নিয়ে আসল রাজ্য সরকার।
রাজ্যের যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আচার্য তথা রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য আজ, মঙ্গলবার নতুন বিধি বিধানসভায় পেশ করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এতদিন রীতি ও নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বা কোনও ধরনের বৈঠক ডাকার ক্ষেত্রে উপাচার্যের তরফে আচার্য তথা রাজ্যপালকে বৈঠকের দিনক্ষণ জানাতে হবে। তারপরই রাজ্যপাল বৈঠক ডাকবেন। কিন্তু নতুন বিধিতে রাজ্যপালের সেই অধিকার খর্ব করা হল। এখন থেকে বৈঠক ডাকার ক্ষেত্রে উপাচার্য শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে তা স্থির করতে পারবেন। রাজভবনকে শুধুমাত্র দিনক্ষণ উপাচার্যের তরফে জানিয়ে রাখলেই চলবে।
পাশাপাশি, এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক উপাধি দেওয়ার ক্ষেত্রে যে তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করত সেই তালিকা রাজ্যপালের কাছে পাঠাতে হত। তারপর প্রয়োজনে রাজ্যপাল সেই তালিকায় বদল আনতে পারতেন। কিন্তু নয়া নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি তালিকা পাঠাবে শিক্ষা দপ্তরকে। শিক্ষা দপ্তর সেই তালিকা পাঠাবে রাজভবনকে। সেই তালিকায় কোনও পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাজ্যপালের থাকবে না বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্যপালের সঙ্গে এখন থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও সরাসরি যোগাযোগ থাকবে না।
সুতরাং, নয়া নিময় অনুযায়ী সবক্ষেত্রেই শিক্ষা দপ্তর মারফত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রাজভবনের যোগাযোগ হবে। আগে নিয়ম ছিল কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি মারফত তিনজনের নামের তালিকা শিক্ষা দপ্তর পাঠাবে রাজ্যপালকে। সেই তিনজনের মধ্যে থেকে কোনও একজনকে রাজ্যপাল উপাচার্য হিসেবে বেছে নেবেন। কিন্তু নয়া নিয়মে বলে দেওয়া হচ্ছে, এখন থেকে তিনজনের মধ্যে যে কোনও একজন নয়, প্রথমে যার নাম থাকবে সেই নামেই অনুমোদন দিতে হবে রাজ্যপালকে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে রাজ্যপালের একজন প্রতিনিধি রাখা হত। সেই নাম রাজ্যপাল নিজেই নির্ধারণ করতেন। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে শিক্ষাদপ্তর রাজ্যপালকে তিনটি নাম পাঠাবে। সেই নামের মধ্যে থেকেই যে কোনও একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে রাজভবনের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করতে হবে রাজ্যপালকে।