বুধবার এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদে ‘এবার দক্ষিণ দিনাজপুরেও তৃণমূলের দায়িত্বে শুভেন্দু?’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতাবাসী নাট্যকার ও জেলার পরিযায়ী নেত্রী অর্পিতা ঘোষ একটি পোস্ট করে তার বিরোধিতা করেছেন।

তিনি লিখেছেন এটা ” মিথ্যে খবর।”
সংযম হারিয়ে নেত্রী যুক্তিহীন কথা বলছেন।
খবরেই “?” দেওয়া। রাজনীতিতে স্পেকুলেটিভ আইটেম বলে একটা কথা আছে।
তৃণমূল জন্মের আগেও লেখা হত,” মমতা কি নতুন দল গড়ছেন?” পরে মিলেছিল। এটা উনি বুঝবেন না। কারণ তখন উনি ছিলেন না।
দলীয় সূত্রে পাওয়া জেলা রাজনীতির কিছু জরুরি তথ্য সম্ভাবনার চেহারায় লেখা হয়েছে। কোনো নিশ্চিত ঘোষণা করা হয় নি। ফলে খবরের ঠিক ভুলের কোনো প্রশ্ন ছিল না।
আরেকটি উদাহরণ, লোকসভা ভোটের আগে বহু জায়গায় আলোচিত ছিল অর্পিতা ঘোষ কি হারছেন? অর্পিতা বলতেন উনি জিতছেন। কিন্তু হেরেছেন। তাহলে কি জল্পনাটা মিথ্যে ছিল?
অর্পিতা লিখেছেন,” খবরটি বিজেপির আর পাঁচটা খবরের মতোই ফেক।”
আমাদের প্রতিবেদনের সঙ্গে বিজেপিকে টানলেন কেন? কে বিজেপি? এই পোর্টালে তৃণমূলের যতগুলো খবর বেরোয়; সব দলের বেরোয়; আর কোথাও থাকে?
এই ধরণের ঔদ্ধত্য আর বিকৃত মানসিকতায় ওঁরা প্রায় গোটা উত্তরবঙ্গে বিজেপির কাছে হেরে এখন সর্বত্র ভূত দেখছেন। লজ্জাও করে না। বালুরঘাটে হেরেছেন কেন অর্পিতা? আসলে তৃণমূলে এমন সম্পদ থাকলে বিজেপির আর অন্য নতুন মুখ খুঁজতে হবে না। যেখানে বিজেপি নেই; সেখানেও বিজেপিকে ঢুকিয়ে ছাড়বেন অর্পিতারা। অরাজনৈতিক আচরণে বিজেপির আরও সুবিধে করে দিচ্ছেন। যত্রতত্র বিজেপি বিজেপি খুঁজবেন না। আর যদি এই চিন্তা থেকে বেরোতে না পারেন তাহলে মানসিক রোগের চিকিৎসা করান। আপনিই বিজেপির প্রচারক। খবর পছন্দ না হলে একশোবার বলবেন। বিজেপির ভূত দেখছেন কেন?

অর্পিতা লিখেছেন,” কোনো সংবাদমাধ্যম পার্টির সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে না।”
ঠিক। প্রভাবিত করার কথা আসছে কেন? আর আপনারা প্রভাবিত হবেনই বা কেন? একটা খবরেই পা কাঁপানোর দরকার কী?
আর এসব জ্ঞান শুনে আমরা অভ্যস্ত। এই তো দুদিন আগে বিজেপির নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষোভবিক্ষোভ লেখাতে আমাদের বলা হল তৃণমূলের দালাল! অপরিণত বোদ্ধাদের এসব কথা শুনলে হাসি পায়।
একটা স্পেকুলেটিভ খবর হতেই পারে। হয়। তা নিয়ে লাফালাফি কেন? আপনার উপর কর্মীদের ভরসা নেই? অবশ্য সেটা লোকসভাতেই বোঝা গিয়েছে।
অর্পিতা লিখেছেন” বিপ্লব মিত্রর মতো বিশ্বাসঘাতকদের দলে জায়গা নেই।”
আমি অর্পিতার দুটি পোস্ট পেয়েছি।
একটিতে বিপ্লবের নাম আছে। অন্যটি শুধু বিশ্বাসঘাতক বলা আছে। অর্পিতা লিখেছেন,” তিনি বিজেপিতেই ভালো থাকুন।”

এটা সম্পূর্ণ দলের ব্যাপার। আমাদের নয়। কিন্তু তৃণমূলের জন্মলগ্নের সৈনিককে বিশ্বাসঘাতক বলছেন পরিযায়ী নেত্রী, পরিস্থিতিটাই দলের পক্ষে অবাঞ্ছিত। বিপ্লব ভালোবেসে বিজেপি যাননি। কেন গেছেন, তাতে দলের লাভ না ক্ষতি, ভাবা দরকার। কেউ ব্যক্তিগত ইগোর জন্য দলের নাম করে গোষ্ঠীবাজি করে পুরনোদের অসম্মান করবে; এতে দলের ক্ষতি। অর্পিতাকে তো লোকসভায় কেউ জিততে বারণ করেননি। উনি হারলেন কেন?

বিপ্লব দলে ফিরবেন কিনা, দলের ব্যাপার।
কিন্তু অর্পিতা, ” দলে জায়গা নেই” ঘোষণার আগে মনে রাখবেন, আপনাদের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এসবই ঘটেছে তিনি বহিষ্কৃত ছিলেন। কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল লড়ে হারেন। এবং পরে দল ফিরিয়ে নেয়। অর্পিতা মনে রাখুন, ২০১১র ভোটে তৃণমূলের বাপান্ত করা এবং অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠনের প্রচারক বহু নেতা ও বুদ্ধিজীবী এখন গিরগিটির মত আপনাদের মঞ্চে। সেখানে এক বিপ্লব মিত্রের মত পুরনো নেত্রীভক্ত সংগঠককে বাইরে রেখে, দলটা মুঠোয় রাখা যায়, ভোটের ফলটা নয়।
তবে সবটাই দলের বিষয়।

শেষে বলি, একটি প্রথম সারির নিরপেক্ষ পোর্টাল হিসেবে আমরা দলীয় সূত্রের খবর করেছি। এর কোনো উদ্দেশ্যবিধেয় নেই। এটি হার্ড নিউজ নয়। ঘোষিত স্পেকুলেটিভ। অপছন্দ হলে প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু বিজেপি বা অন্য গল্প জড়াবেন না। সেক্ষেত্রে এক পরিযায়ী সংগঠকের কাজকর্মে জেলায় আসলে বিজেপির কী কী লাভ হচ্ছে, তা সবিস্তারে লেখা শুরু করতে হবে। বিপন্ন মানুষের খাবারের প্যাকেটে যারা নিজেদের ছবি দিয়ে প্রচার করে, এই কুৎসিত রুচিহীন সংকীর্ণ রাজনীতি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আবার প্রত্যাখ্যান করবে। এসব করতে বারণ করুন। জেলার বর্ষীয়ান শংকর চক্রবর্তীরা হাল ধরুন, চাইছে গোটা জেলার অধিকাংশ কর্মী।

সর্বশেষ, দলীয় সূত্রে খবর, জেলায় সংগঠন বিধ্বস্ত। শীর্ষনেতারা উদ্বিগ্ন। বিধানসভায় শোচনীয় ফল হতে চলেছে জেলায়। মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি স্কিম এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টা সত্ত্বেও স্রেফ জেলা নেতৃত্বের ভুলে ক্ষতির পর ক্ষতি হচ্ছে। সেজন্য দল কিছু রদবদলের কথা ভাবছে বলে শোনা যাচ্ছে। এবং না করলে ডুববে।


আবার লিখলাম। যা করার আছে করে নিন।
