করোনা-আক্রান্তদের অবসাদ কাটিয়ে মনোবল বাড়াতে মুর্শিদাবাদ থেকে শহরে এসেছেন সুস্থ হওয়া একদল যুবক-যুবতী৷
আক্রান্তদের সামনে গিয়ে এরা বলবেন, “আমারও করোনা হয়েছিল। আমি সুস্থ হয়ে ফিরেছি। আপনিও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন। চিন্তার কিছু নেই।” আজ মঙ্গলবার এই
‘করোনা- জয়ী’-রা শহরের. একাধিক কোভিড হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারে যাবেন৷
মহামারিকে হেলায় হারানোর পর এই যুবক-যুবতীদের নিজেদের অভিজ্ঞতা, রোগের থেকেও আতঙ্কই বেশি গ্রাস করে এ ক্ষেত্রে ৷
পিছিয়ে থাকা সমাজ
প্রথমদিকে এই আক্রান্তদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। তবে বেশিদিন পারেনি৷ জীবনের মূলস্রোতে তাঁরা ফিরেছেন।
আর ফিরেই এই যুবক- যুবতীরা ঠিক করেছেন, এলাকায় ঘুরে ঘুরে বোঝাবেন, এই ভাইরাসকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটাও আর পাঁচটা রোগের মতোই৷ এতদিন মুর্শিদাবাদে একথা বলেছেন, এবার সেই বার্তা তাঁরা রাজ্যের রাজধানীতেও পৌঁছে দিতে চান। কলকাতার আক্রান্তদের মনোবলও বাড়াতে চান তাঁরা।
সোমবার বহরমপুর থেকে বাসে চড়ে ৩০ জন
করোনা ‘জয়ী’ কলকাতার এসেছেন৷ বাসে ওঠার আগে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা তাঁদের সংবর্ধনা জানান। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মীনা, ডিআইজি মুকেশ কুমার, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস সহ অন্যান্য আধিকারিকরা তাঁদের বাড়তি উৎসাহ দেন।জেলাশাসক জয়ীদের উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, “এটা নতুন ধরনের কাজ। আশা করি আপনারা ভালোভাবেই এই কাজ করতে পারবেন।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ মঙ্গলবার, তাঁরা কলকাতার কোভিড হাসপাতালে যাবেন৷ বিভিন্নভাবে করোনা আক্রান্তদের সহযোগিতা করবেন। আক্রান্তদের তাঁরা সাহস জোগাবেন।
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা যুবক-যুবতীদের একজোট করে কয়েকদিন আগে বহরমপুরে বিশেষ ক্লাব তৈরি হয়। দেশে এই ধরনের উদ্যোগ প্রথম বলে জেলা প্রশাসনের দাবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তারপরই ঠিক হয় সুস্থ হয়ে ওঠা যুবক-যুবতীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে লাগানো হবে।
বহরমপুরের মতো করোনা যুদ্ধে জয়ীদের নিয়ে অন্যান্য জেলাগুলিতেও ক্লাব তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জেলাগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু পাল্লা দিয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। সুস্থ হওয়া যুবক-যুবতীরা সমাজের স্বার্থে এগিয়ে এলে এই যুদ্ধে খুব সহজেই জয় আসবে ৷