Thursday, November 6, 2025

ফের রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাত, এবার কোথায়?

Date:

Share post:

রাজ্যের সঙ্গে, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত ইদানীং ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জায়গায়। জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে বাংলার রাজ্য-প্রশাসনের সংঘাতের খবর বারবার উঠে আসে শিরোনামে। এবার জায়গাটা আরব সাগরের তীরে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন সেখানকার রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। এই সংঘাত আবার ধর্মীয় ভাবাবেগে ঘিরে। দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মহারাষ্ট্র। তার মধ্যেই রাজ্যের মন্দির খোলার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া চিঠি দিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল। পাল্টা জবাব দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরেও।

১২ অক্টোবর কোশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে লেখেন, “আপনি বরাবরই হিন্দুত্বের প্রবল সমর্থক। শ্রীরামের প্রতি প্রকাশ্যে আপনি আপনার ভক্তি প্রকাশ করেছেন। আপনি কি কোনও দৈব আদেশ পেয়ে বারবার মন্দির খোলার বিষয়টি পিছিয়ে দিচ্ছেন? নাকি হঠাৎ ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে গেলেন?” এই খোঁচার পরে রাজ্যপাল লিখছেন, মহারাষ্ট্র সরকার বার–রেস্তোরাঁ খুলে দিয়েছে কিন্তু দেবদেবীদের তালাবন্ধ রেখে দিয়েছে। রাজধানীতে আগেই ধর্মীয় স্থান খুলে গিয়েছে কিন্তু সেখানে তার জন্য সংক্রমণ বাড়েনি বলে মত কোশিয়ারির।

চিঠি পেয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। বলেন, ভগত সিং কোশিয়ারি কাছ থেকে তাঁর হিন্দুত্বের শংসাপত্র নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পাল্টা রাজ্যপালকে তিনি লেখেন, “আমার হিন্দুত্ব এমন ব্যক্তিকে স্বাগত জানায় না, যিনি মুম্বইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীর বলেন। আপনার কাছ থেকে হিন্দুত্বের কোনও শংসাপত্র চাই না”। এরপর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, রাজ্য সরকার মন্দির–সহ ধর্মীয় স্থানগুলি খোলার বিষয়ে সচেষ্ট। তবে এই পরিস্থিতিতে সবার আগে মানুষের সুরক্ষার দিকটা দেখতে হবে। এরপর তিনি রাজ্যপালকে প্রশ্ন করেন, ‘‌আপনি কী মনে করেন ধর্মীয় স্থান খুলে দেওয়াটা হিন্দুত্ব, আর না খোলা হলে সেটা ধর্মনিরপেক্ষ?‌” ধর্মনিরপেক্ষতা হল একটা গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। যা রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন কোশিয়ারি। আর এখন সেটা নিয়েই তিনি প্রশ্ন তুলছেন বলে কটাক্ষ করেন উদ্ধব ঠাকরে।

কয়েকদিন আগেই ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার দেশের সব রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন, “রাজ্যপালরা আরএসএসের কারখানায় গড়া পুতুল। তাঁদের নিজস্ব কোনও মতামত নেই”। এ বিষয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানকে সমর্থন জানান মানিক সরকার। বাংলাতে দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকেই জগদীপ ধনকড় কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরোধিতা, সমালোচনা করেন। এমনকী, সে ক্ষেত্রে তিনি মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করতেও পিছু হটেন না। এবার মহারাষ্ট্র একই ছবি। এতদিন বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ছিল শিবসেনা। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে সেই মধুচন্দ্রিমার সমাপ্তি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল।

আরও পড়ুন-ভোটের মুখে ১৫ নেতাকে জেডিইউ থেকে তাড়ালেন নীতীশ

spot_img

Related articles

চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজট কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ কেএমডিএ-র

ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেএমডিএ। শান্তিনগর খালের উপর বর্তমান সরু...

নামের বানানভুল থেকে ডিটেনশন আতঙ্ক! এসআইআর আতঙ্কে মানসিক চাপে সাঁইথিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধের

ইলামবাজারের ঘটনার পর ফের এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু বীরভূমে। হৃদরোগে প্রয়াত হলেন সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান...

বিহারে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ভোটদানে নতুন সমীকরণ! চিন্তায় শাসক শিবির

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী...

JNU-তে ফের বাম জোটের জয়জয়কার, খাতা খুলতে পারল না ABVP

ফের দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভোটে (JNU Students' Union Elections) খাতা খুলতে পারল না এবিভিপি। JNU ছাত্র...