শীতলকুচির ঘটনার পর দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে বিজেপির। কিন্তু ভোটযুদ্ধের মাঝে পড়ে নাকানি-চোবানি খাওয়ার চাইতে চালিয়ে খেলার পদ্ধতিই বেছে নিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স। রবিবার রাজ্যে এসে বারাসতের সভায় অমিত শাহ যেমন জাত-পাতের তাস খেলেছেন, তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়ার দাবি প্রসঙ্গে বলেছেন, মানুষ চাইলে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু মানুষ কীভাবে, কখন পদত্যাগ চাইলে তা তাঁর কানে পৌঁছবে তা অবশ্য জানিয়ে যাননি কেন্দ্রের অলিখিত দু’নম্বর ব্যক্তি।

শান্তিপুরে রোড শো করে সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহর দাবি, শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে তোষণের রাজনীতি করছে রাজ্য সরকার। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী ৪ মৃত্যুর কথা বললেও সকালে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ১৯ বছরের যুবক আনন্দ বর্মনের গুলিতে মৃত্যুর কথা একবারও বলেননি। তিনি রাজবংশী এবং তৃণমূলের ভোটার নন বলেই মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় রইলেন না। পালটা তৃণমূল বলছে, ভোটের আগে সাম্প্রদায়িক তাস খেলার শেষ সুযোগ হাতছাড়া করতে ছাড়েনি বিজেপি। লক্ষ্য এলাকায় অস্থিরতা তৈরি করা। ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে ভুল বোঝানো। মুখ্যমন্ত্রী বারবার ৫মৃত্যুর কথা বলেছেন। আর অমিত শাহ সেই বক্তব্য গোয়েবেলসিও কায়দায় ভোলাতে চাইছেন। মানুষ এসব মিথ্যাচার বুঝতে পারছেন। মৃত্যুকে হালকা করার চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন-‘ফাটাকেষ্ট’র কায়দায় জনসভায় মিঠুনের দেদার প্রতিশ্রুতি, খালি নিজের রান্নাঘরে নজর নেই!

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন চার মৃত্যুর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেন। কেন? তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার কথা বলে মানুষকে ক্ষেপিয়েছে তিনি। প্রশ্ন হলো, সব ক্ষ্যাপানোর জবাব ছিল নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে। ভোটের আগে বারবার তা বলা হয়েছে। তাহলে এভাবে ব্যর্থ হলো কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাহিনী? মানুষ ক্ষেপে গিয়ে বাহিনীকে আক্রমণ করেছে, এমন ঘটনার কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি বাহিনী বা কমিশন। তারপরেও কোন যুক্তিতে অমিত শাহ একথা বলছেন, কিংবা প্রধানমন্ত্রী বলছেন, মৃত্যুর পিছনে তৃণমূল গুণ্ডাদের হাত!

তৃণমূলের দাবি, বরং প্ররোচনার যুক্তি খাটে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু কিছুদিন আগেই বলেছিলেন ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। আর কেউ কিছু করতে এলে কোমরের নিচে নয়, বুকে গুলি করতে বলব। সেই ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল।
শীতলকুচির ঘটনা ঠিক তেমনই হয়েছে। ঘটনার পর কমিশন বাহিনীর গুলি চালোনোর কথা বললেও প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন। কমিশন তারপরেও নরেন্দ্র মোদিকে শোকজ না করে আসলে বিজেপি-কমিশনের বোঝাপড়ার অভিযোগ স্পষ্ট করে দিয়েছে।
