Sunday, November 9, 2025

করোনার তৃতীয় ঢেউ সামলাতে আরও সতর্ক সোনাগাছি, খোলা হয়েছে ‘কাস্টমার কেয়ার ডেস্ক’

Date:

Share post:

করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ ওলটপালট করে দিয়েছে কলকাতার নিষিদ্ধপল্লি সোনাগাছির। ব্যবসার ক্ষতির পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এই পাড়ার অনেকেই । তৃতীয় ঢেউ আসার আগে তাই আরও সতর্ক শহরের অন্যতম বৃহৎ নিষিদ্ধপল্লি সোনাগাছি। রাজ্য জুড়ে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করে ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি’ ।সোনাগাছি তো বটেই গোটা, রাজ্যের সব যৌনপল্লি এলাকাতেই ‘কাস্টমার কেয়ার ডেস্ক’ খোলার পরিকল্পনা করেছে দুর্বার।
সোনাগাছিতে ইতিমধ্যেই এমন দু’টি ডেস্ক খোলা হয়েছে। আগামী দিনে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়।
তিনি জানিয়েছেন , শুরুতে পাঁচটি ডেস্ক খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল । তার মধ্যে দু’টি চালানো সম্ভব হচ্ছে। আসলে লকডাউন পরিস্থিতি চলায় সংগঠনের কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকরাও ঠিকঠাক কাজে আসতে পারছেন না।
দুর্বারের সদস্যরা সম্ভাব্য কাস্টমারদের থার্মাল গানের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা মাপার পরেই পল্লিতে ঢুকতে দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে তাঁদের মাস্ক পরা রয়েছে কিনা, স্যানিটাইজারে হাত ধুয়েছেন কিনা, তা-ওপরীক্ষা করে দেখছে। মোদ্দা কথা, কাস্টমারদের সচেতন করার পাশাপাশি যতটা সম্ভব এখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে দুর্বার ।

শুধু কাস্টমারদেরই নয়, যৌনকর্মীদেরও করোনা নিয়ে নিয়মবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছে দুর্বার। কলকাতায় করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই এলাকা ধরে ধরে নিয়মিত সচেতনতা শিবির করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণের জন্য নিয়মে বলা হয়েছে, এক সঙ্গে একাধিক কাস্টমারকে ঘরে নেওয়া যাবে না। ঘর সব সময় স্যানিটাইজ করতে হবে। প্রত্যেক কাস্টমার বিদায় নেওয়ার পর যৌনকর্মীদের স্নান করা বাধ্যতামূলক। বিছানার চাদরও বদলাতে হবে। আর কাস্টমার যতক্ষণ ধরে থাকবেন, ততক্ষণ মাস্ক পরে থাকতেই হবে। কাস্টমারকেও সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে বাধ্য করতে হবে।
যদিও এত কিছুর পরেও করোনাকালে অনেকটাই ফাঁকা কলকাতার এই পাড়া। দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিট, অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিট, শেঠবাগান, রামবাগান— সব গলিই অনেক খালি হয়ে গিয়েছে।
মহাশ্বেতার হিসেব অনুযায়ী, এই পাড়ার স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজারের মতো। এ ছাড়াও কমপক্ষে তিন হাজার কর্মী শহরতলি থেকে যাতায়াত করেন। এর পরেও হাজার তিনেক ‘ফ্লাইং’ কর্মী রয়েছেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে ‘ফ্লাইং’ এবং শহরতলি থেকে কেউই আসছেন না। স্থায়ী বাসিন্দাদের অনেকেই বাজার মন্দা হওয়ায় চলে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে সোনাগাছিতে যৌনকর্মীর সংখ্যা এখন অর্ধেকের কম হয়ে গিয়েছে। মহাশ্বেতা জানিয়েছেন , শুধু কলকাতার হিসেব দেখলেই হবে না। রাজ্যের লক্ষাধিক মেয়ে করোনাকালে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে রয়েছে। আমাদের উদ্যোগ ছাড়াও কিছু বেসরকারি ত্রাণ, সরকারি সাহায্য মিলেছে। কিন্তু তাতে সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি।

 

spot_img

Related articles

এপিকের সঙ্গে মোবাইল লিঙ্ক না থাকলে অনলাইনে ফর্ম নয়! কমিশনের নিয়মে ক্ষোভে ফুঁসলেন কল্যাণ 

নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা ঘিরে ফের রাজনৈতিক বিতর্ক। রবিবার শ্রীরামপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট রক্ষা শিবিরে অংশ...

ফাইনাল ম্যাচে শাহরুখের মন্ত্রেই ছাত্রীদের তাতিয়ে ছিলেন? অকপট স্মৃতিদের কোচ

ভারতীয় মহিলা দল বিশ্বকাপ জেতার পরই চক দে ইন্ডিয়ার কবীর খান হয়ে উঠেছেন অমল মুজুমদার(Amol Muzumdar)। কী বলে...

এসআইআর আতঙ্কে মৃতদের পরিবারের পাশে তৃণমূল: রাজ্যজুড়ে শোকাহত পরিবারগুলির ঘরে দলের জনপ্রতিনিধিরা 

এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যজুড়ে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। কোথাও আত্মহত্যা, কোথাও আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু— ভয় ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম...

বাংলাভাষায় ১০ কোটিও খরচ নয়! বাঙালিবিদ্বেষী বিজেপির রবীন্দ্র-বঙ্কিম ভাগে তোপ গণমঞ্চের

বিজেপি আদতে বাঙালি বিদ্বেষী, তা সাম্প্রতিক সময়ে বারবার প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত। সেই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও...