শেক্সপিয়র সরণিতে বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার প্রাক্তন গাড়িচালক, উঠে আসছে নানা তথ্য

শেক্সপিয়র সরণির (Shakespeare Sarani) বহুতল আবাসনে বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার প্রাক্তন গাড়িচালক। ধৃত ব্যক্তির নাম দুধকুমার ঢল (Dudhkumar Dhal)। বৃদ্ধা রেণুকা চৌধুরীর (Renuka Choudhary) দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে পুলিশের (Police)। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, এটি কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গলায় চাপ দেওয়ার কারণে শ্বাসরোধ আর তার জন্যই মৃত্যু হয়েছে ৯১ বছর বয়সী বৃদ্ধার। মঙ্গলবার রাতে ওই বৃদ্ধার পরিবারের প্রাক্তন গাড়ি চালক দুধকুমারকে ডানকুনি (Dankuni) থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে ফ্ল্যাটে রেণুকা চৌধুরির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল দুধকুমার। রাত ১২টা ৫ মিনিটে এক ব্যক্তি ফ্ল্যাট থেকে বের হয়। প্রথমে সে ছাদে ওঠে। কিন্তু দরজা বন্ধ দেখে ১২টা ৯ মিনিটে একতলায় নেমে এদিক ওদিক তাকায়। এরপর বাঁদিক ঘুরে চলে যায় বহুতলের পার্কিং লটে। ফুটেজে তাকে দেখা যায়নি। সম্ভবত মূল গেট দিয়ে বাইরে না বেরিয়ে বহুতল আবাসন চত্বরে পার্কিং করা গাড়ির উপর উঠে দেবদারু গাছ বেয়ে পাঁচিল টপকে হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট ধরে পালায় ওই চালক। মোবাইলের সূত্র ধরেই ডানকুনিতে তার সন্ধান মেলে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে পরিচারক পবন যাদবের (Paban Yadav) ভূমিকাও।

আরও পড়ুন: গড়িয়াহাট জোড়া খুন: বিয়ে করতে প্রেমিকার চাপ, টাকা জোগাড়ে অপরাধে সামিল অভিযুক্ত

মৃতা রেণুকা চৌধুরি ছিলেন এমএ (MA) এবং এলএলবি (LLB)। তিনি একটি নামী স্কুলে একসময় শিক্ষকতাও করতেন। তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয় তিন মাস আগেই। তিনি ছিলেন একটি নামী সংস্থার এমডি। ছোট ছেলে থাকেন আমেরিকায় (America)। বড় ছেলে অভয় চৌধুরী থাকতেন মায়ের কাছেই। সঙ্গে থাকেন পরিচারক পবন যাদব।

অভয় পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর মায়ের হাতে একটি হিরের আংটি ছিল, হাতে এবং গায়ে যে সব সোনার গয়না ছিল সেগুলি খোওয়া গিয়েছে। পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর মায়ের কাছে থাকা আলমারির চাবি এবং মূল গেটের চাবিও। আর কী কী খোওয়া গিয়েছে তার একটা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

জানা গিয়েছে, খুনের আগে রেইকি করেছিল ধৃত দুধকুমার। রবিবার বৃদ্ধার সঙ্গে দেখা করে দুধকুমার। সোমবার সন্ধেয় ফের বৃদ্ধার কাছে যায় সে। সিসিটিভিতে দুধকুমারকে ঢুকতে, বের হতে দেখা যায়। সন্ধে ৭টায় ঢুকে রাত ১২ টায় বের হয় গাড়ির চালক। বৃদ্ধার ঘরেই কোথাও গা ঢাকা দিয়েছিল বলে অনুমান করছে পুলিশ। আজ, বুধবার ফের দুধকুমারকে নিয়ে আসা হচ্ছে ২৮ বি থিয়েটার রোডের ওই অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।

২০১৬ সালে রেণুকা চৌধুরীর বাড়িতে কাজ করত দুধকুমার। ২০১৮ সালে গয়না চুরির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপরে কাজ হারায় সে। পরে বহুবার কাজে যোগ দেওয়ার আর্জি জানালেও দুধকুমারকে কাজে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে রাজি হননি বৃদ্ধা। মনে করা হচ্ছে, সেই আক্রোশ থেকেই খুন, তারপর লুঠপাট চালায়।

 

 

 

 

 

Previous articleইমামবাড়ার সংস্কারে উদ্যোগী অসিত মজুমদার
Next articleযিশুকে ভাইফোঁটা দিলেন কৌশিকী!