উত্তরবঙ্গে ঐতিহাসিক চা শ্রমিক সমাবেশের অপেক্ষায় প্রহর গুণছে উত্তরবঙ্গও। তৃণমূল চা-বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে জলপাইগুড়ির মালবাজারের এই সমাবেশে আজ রবিবার বক্তব্য পেশ করবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবারই শিলিগুড়িতে পৌঁছেছেন তিনি। সাম্প্রতিক অতীতে এতবড় মাপের শ্রমিক সমাবেশ দেখেনি উত্তরবঙ্গও। এই সমাবেশের আগে শনিবার মালবাজারের ফরোয়ার্ড ক্লাবের মাঠে হয়ে গেল চা-বাগান শ্রমিকদের প্রথম কেন্দ্রীয় কর্মী-সম্মেলন। উত্তরবঙ্গের ৬টি জেলা থেকে এদিন চা-বাগান শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব ও কর্মীরা এসেছিলেন। নিজেদের দাবিদাওয়া, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে তাঁরা কথা বলেছেন। সেগুলোর ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে এবং খাতাতেও নোট করা হয়েছে। এই নোট পৌঁছে যাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বিভিন্ন বাগান থেকে আসা ৪৬ জন শ্রমিক-প্রতিনিধি বক্তব্য রেখেছেন কর্মি সম্মেলনে। তবে রবিবার বৃহত্তর ঐতিহাসিক এই শ্রমিক সমাবেশ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন তা শুনতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে গোটা উত্তরবঙ্গ।

আরও পড়ুন:রবিতে উত্তরবঙ্গে ঐতিহাসিক চা শ্রমিক সমাবেশ, শনিবার কেন্দ্রীয় কর্মী সম্মেলন মলয়-ঋতব্রতর
এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে জনসভা করে গিয়েছেন। কিন্তু তা ছিল দলের মূলস্রোতের সভা। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনের, বিশেষ করে চা-বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে এই ধরণের বৃহত্তর সভা এর আগে উত্তরবঙ্গও কখনও দেখেনি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বড় মাপের নেতা চা-বাগান শ্রমিকদের কাছে এসে তাঁদের জন্য তাঁদের হয়ে কথা বলবেন, এমনটাও এর আগে কখনও হয়নি।

শনিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে চা-শ্রমিকদের কর্মী-সম্মেলন শুরু হয়। চলে বিকেল পর্যন্ত। মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ঠায় বসে থেকে প্রত্যেকের বক্তব্য শোনেন। নোট নেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। ঋতব্রত বলেন, জলপাইগুড়িতে ৭৮টি চা-বাগান রয়েছে, আলিপুরদুয়ারে রয়েছে ৬৭টি চা-বাগান। এছাড়াও ডুয়ার্স ও তরাইয়ের চা-বাগান শ্রমিকদের সঙ্গে আমরা দু-মাস ধরে টানা বৈঠক করে গিয়েছি। এলাকাভিত্তিক সম্মেলন করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সবক’টি জেলায় দার্জিলিং থেকে কোচবিহার চা-বাগান শ্রমিকদের কাছে গিয়ে আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি তাঁরা ঠিক কী চাইছেন। ইউনিট ভিত্তিক সমাবেশ হয়েছে। চা-শ্রমিকদের সঙ্গে লাইন মিটিং-গেটে মিটিং করা হয়েছে। এবার সার্বিকভাবে জলপাইগুড়ির মালবাজারে আর ক্লাবের মাঠে বৃহত্তর সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে মূল বক্তা। এই সমাবেশ হবে এ-যাবৎকালের সব থেকে বড় ও ঐতিহাসিক সমাবেশ। মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা চা শ্রমিকদের বিভিন্ন সময় বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচলা করছি। তবে রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেন তা জানার জন্য এখানকার শ্রমিকরা উন্মুখ হয়ে আছেন। চা-শ্রমিক সমাবেশ হলেও, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ কী বার্তা দেন সেদিকে তাকিয়ে গোটা বাংলা।
শনিবার কর্মী সম্মেলন সেরে মন্ত্রী মলয় ঘটক, বুলুচিক বরাইকে সঙ্গে নিয়ে রবিবারের সমাবেশস্থল ঘুরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা মাঠজুড়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঋতব্রত বললেন, যে-পরিমাণ শ্রমিক আসবেন তাতে মাঠ উপচে পড়া ভিড় হবে বলে জানা যাচ্ছে। এর আগে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মহুয়া গোপের সঙ্গেও সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের কর্মী সম্মেলনে বুলুচিক বরাইক, প্রকাশনিক বরাইক, সাংসদ শান্তা ছেত্রী-সহ জলপাইগুড়ি জেলার দলের বিধায়ক ও অন্য নেতৃত্বও উপস্থিত ছিলেন।
