Saturday, November 8, 2025

কংগ্রেস সভাপতি পদে শপথ খাড়গের, অনুষ্ঠানের মধ্যমণি সেই সোনিয়া-রাহুলই

Date:

Share post:

সোনিয়া-রাহুলরা যখন কেউ দাঁড়ালেন না, তখনই ঠিক হয়ে গিয়েছিল দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশক পর সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতির কুরশিতে বসতে চলেছেন গান্ধী পরিবারের বাইরের কোনও নেতা। শশী থারুরকে হারিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার প্রায় একসপ্তাহ পর আজ, বুধবার ছিল মল্লিকার্জুন খাড়গের আনুষ্ঠানিক দায়িত্বভার নেওয়া ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।

আর তিনি শপথ নেওয়ার পরই ২৪ বছর পর শুরু হল ভারতের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের এক নতুন অধ্যায়। এদিন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সোনিয়া গান্ধী খাড়গেকে অভিনন্দন জানান। বলেন, খাড়গের মতো অভিজ্ঞ নেতাকে সভাপতি পদে পেয়ে তিনি স্বস্তি পেয়েছেন। সোনিয়ার কথায়, “খাড়গেজি একজন অভিজ্ঞ নেতা। একজন সাধারণ কর্মী থেকে কঠোর পরিশ্রম মধ্য ফিয়ে আজ তিনি এমন জায়গায় পৌঁছলেন। আমাদের দলের সমস্ত কর্মীদের কাছে তিনি অনুপ্রেরণা।”

দেশজুড়ে কংগ্রেসের ভিত যে গত কয়েক বছরে নড়বড়ে হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা থেকে দীর্ঘ সময় বাইরে কংগ্রেস। একের পর এক রাজ্যে পরাজয়। অনেক রাজ্যে কংগ্রেস ভেঙে টুকরো হয়েছে। এই মুহূর্তে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস। তবে সোনিয়া গান্ধীর দাবি কংগ্রেসকে দীর্ঘ সময় দমিয়ে রাখা যাবে না। আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে দল। এদিন তিনি বলেন, “আমাদের লড়াই চলবে। আর এভাবেই আমরা সফল হব। অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেশে এই মুহূর্তে গণতন্ত্রের বিপণ্ণতা। তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।”

সভাপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মল্লিকার্জুন খাড়গে তাঁর ভাষণে উঠে এসেছে গত মে মাসে রাজস্থানে হওয়া কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের কথা। তাঁর কথায়, “যে ব্লু-প্রিন্ট আমরা চিন্তন শিবিরে প্রস্তুত করেছি সেটাকে সফল করে তোলাই আমাদের দায়িত্ব।” পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর প্রশংসাও শোনা গিয়েছে নতুন সভাপতির মুখে।

দক্ষিণ ভারতের বর্ষীয়ান দলিত নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় অনেকগুলি মাস্টার-স্ট্রোক দিল কংগ্রেস। একদিকে যেমন দলে দলিত সভাপতি করে বিজেপিকে কিছুটা মাত করা গেল , অন্যদিকে মোদি-শাহ ও বিজেপির তোলা পরিবারতন্ত্রের তকমা ঘোচাতে পারলেন সোনিয়া-রাহুলরা। আবার গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ নেতা সভাপতি হওয়ায় কংগ্রেসের রিমোট রইলো সেই সোনিয়া-রাহুলের হাতেই।

তবে শীর্ষ পদে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য না থাকলেও কংগ্রেসের ব্যাটন যে সোনিয়া-রাহুলের হাতে এদিনের অনুষ্ঠানেও সে বিষয়টি স্পষ্ট। খাড়গের শপথ গ্রহণ ও অনুষ্ঠানে সোনিয়া-রাহুলকে ঘিরেই ছিল সমস্ত উচ্ছ্বাস। প্রিয়াঙ্কা দর্শকাসনে বসলেও তাঁর দিকেও ছিল ফোকাস। খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, আদৌ কি গান্ধী পরিবারের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে কংগ্রেস? সে উত্তর অবশ্য সময়ই দেবে।

spot_img

Related articles

মতুয়া-ফায়দা লোটার চেষ্টা: অনশন মঞ্চে হঠাৎ হাজির বাম-কংগ্রেস!

বাংলার শাসকদল তৃণমূলের বিরোধিতা করাই বাংলার বাম নেতৃত্ব ও কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের স্বভাবসিদ্ধ। বিরোধিতার পর্যায়টা এক এক সময়ে...

জন্মদিনে চরম অসৌজন্য! অভিষেককে নিয়ে বিজেপির পোস্টে সরব নেটদুনিয়া

বাংলায় বরাবর সৌজন্যের রাজনীতি দেখিয়ে এসেছে সব রাজনৈতিক দল। বাম আমলে সিপিআইএম নেতা থেকে তৃণমূল বা কংগ্রেস নেতাদের...

আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা, অনুশীলনই বন্ধ রাখল মোহনবাগান

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে মোহনবাগানের(Mohun Bagan) সিনিয়র দলের অনুশীলন। খবর অনুযায়ী, আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা। টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়...

জন্মদিনে মানুষের ভালবাসা মনে করিয়ে দেয় কর্তব্য: ভিড়ে মিশে গেলেন অভিষেক

সকাল হওয়ার অপেক্ষা নয়। রাত ১২টা বাজার অপেক্ষায় ছিল বাংলার বিপুল জনতা। জননেতা, তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক...