Wednesday, August 27, 2025

কেন্দ্রে এজেন্সি-সরকার ! বিধানসভায় বিজেপি-শুভেন্দুকে একযোগে তীব্র আক্রমণ মমতার

Date:

Share post:

বিধানসভায় সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। একইসঙ্গে নাম না করে তুলোধনা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও (Shubhendu Adhikari)। শুক্রবার, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁকে একসময় ভাইয়ের মতো ভালবাসতাম, তিনি এখন বলছেন আমাদের সরকার বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি। তাহলে কেন্দ্রের সরকারটা কী? বাই দ্য এজেন্সি, ফর দ্য এজেন্সি, অফ দ্য এজেন্সি!” এরপরের সরাসরি শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, “মনে রাখবেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) যখন তৈরি হয় তখন আপনারা ছিলেন না। অখিল গিরি তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। জিতেছিলেন। আপনার বাবা শিশির অধিকারী তাঁর উল্টোদিকে দাঁড়িয়েছিলেন। দ্বিতীয় হয়েছিলেন। কিন্তু আমি শিশিরদাকে সম্মান করি।”

দেশে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালনে উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ভারতের সংবিধান ১৯৪৯ সালে তৈরি হয়েছে। প্রণাম জানাই শ্রদ্ধা জানাই। সংবিধানের প্রস্তাবনা আমাদের রত্ন। সংবিধান রচনার আগেও বাংলার ভূমিকা ছিল। সংবিধান দিবস একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৪৯ সালে এই দিনে গৃহীত হয়েছিল সংবিধান। সংবিধান প্রণেতাদের কুর্নিশ জানাই। ডাক্তার বি আর আম্বেদকর কে শ্রদ্ধা জানাই।” মমতা উল্লেখ করেন, গণ পরিষদে বাংলার মনীষী প্রফুল্ল ঘোষ, সতীশ সামন্ত, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-সহ অনেকে সদস্য ছিলেন। আম্বেদকর বাংলার বিধানসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে সংবিধান পরিষদে যান। সংবিধানের সচিত্র সংস্করণ করেছিলেন নন্দলাল বসু। ভারতের অগ্রগণ্য মনীষীরা আইনসভায় যুক্ত হন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংবিধান ভারতের মানুষের দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল। জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় গান আমাদের তৈরি। এগুলি আমাদের জীবনের সব থেকে বড় আদর্শ। “বাংলা দেশকে পথ দেখাবে। আমি চাইব নাগরিক অধিকার আমরা সবাই পালন করব।”

এরপরই রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা নিয়ে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বিরোধী বিধায়কদের আমরা ডাকি। মুর্শিদাবাদে তো অধীর চৌধুরীকে ডাকা হয়েছিল। বিধানসভার ৪২টি কমিটির মধ্যে ৯ টি বিরোধীদের। আমাদের দল সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। অথচ একটা কমিটিও দেওয়া হয়নি।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাণিজ্য সম্মেলনে বিরোধীদের ডাকা হয়। রাজ্যপালের শপথে বিরোধীদলের সভাপতি, বিরোধী দলনেতা কেউ যাননি। ফিল্ম ফেস্টিভালে সবাইকে আমন্ত্রণ।

এদিন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী কয়েকটি জায়গায় পুরভোট এবং ছাত্র পরিষদের নির্বাচন কলেজে বন্ধ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুরসভা ভোট কয়েকটা বাকি আছে। রোজ ভোট হলে কাজ ব্যাহত হয়। একসঙ্গে করে দেব। ছাত্র ভোট কোভিডের জন্য দুবছর বন্ধ। সিপিএম কলেজগুলোকে পার্টি অফিস বানিয়ে দিয়েছিল। ত্রিপুরায় ৫০ শতাংশ, উত্তর প্রদেশে ৭৫ শতাংশ আসনে ভোট হয়নি।”

এরপরই সরাসরি বিরোধীদের দিকে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন তোলেন, “কেন আপনারা বাংলার কথা বলবেন না? কবে থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান পড়ে আছে। সার দিচ্ছে না”। বিধানসভার স্পিকারের কাছে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানান, “বাংলা থেকে প্রতিনিধি দল পাঠান স্পিকার। সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে মন্ত্রীদের কাছে পাঠান।”

প্রয়াত সংগীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের ভোট পড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার উত্তরে মমতা বলেন, “সরকারকে ম্যালেইন করার জন্য কিছু হতে পারে। দ্বিজেনদার ভোট তো আপনারাও করতে পারেন। কে দেখতে গেছে?”

নেতাজি প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া নিয়ম প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

spot_img

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...