Saturday, November 15, 2025

টেট ‘ফেল’ পরীক্ষার্থীকে ইন্টারভিউয়ে ডাকতে হবে পর্ষদকে, নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের!

Date:

Share post:

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এবার নজিরবিহীন নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী টেট ফেল করেছেন এক চাকরি প্রার্থী, যদিও আসল ওএমআর শিট সামনে আনতে পারেনি পর্ষদ। একজন চাকরি প্রার্থী অভিযোগ করে যে সে ইন্টারভিউ দেওয়া সত্ত্বেও প্রাথমিক শিক্ষক রূপে তাকে নিয়োগ করা হচ্ছে না ! বিষয়টি নিয়ে তিনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর বেঞ্চে মামলা করেন!
তিনি যে গ্রাউন্ডে মামলা করেন সেখানে তিনি তুলে ধরেন যে ডাটা তুলে ধরছে পর্ষদ সেটা সবটাই হচ্ছে ডিজিটাল ডাটা ! যার মান্যতা কোর্ট এখনও দেয়নি! এখন এই ডাটা নিয়ে সিবিআই তদন্ত করছে।
এই মামলার সূত্রপাত হয় যখন মহুয়া খাতুন নামে একজন চাকরিপ্রার্থী কোর্টে দ্বারস্থ হন। ২০২০ সালে ১৬৫০০ শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ দেওয়া সত্বেও , তিনি চাকরি পাননি !
তিনি পর্ষদের কাছে আরটিআই ও ফাইল করেন! এরপর পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয় যে তার টেট পাস করার জন্য যে পর্যাপ্ত পরিমাণ নাম্বার দরকার সে নাম্বরটি তার নেই!

পর্ষদ নোটিশ দিয়ে জানায় যে একজন সংরক্ষিত প্রার্থীর টেট পাস করতে দরকার ৮২ নম্বর! কিন্তু ওই চাকরি প্রার্থীর প্রাপ্ত নাম্বর হচ্ছে ৬২ ,এর সঙ্গে প্রশ্ন ভুলের ৬ নম্বর যোগ করলে নাম্বরটি দারায় ৬৮, যা ৮২ থেকে অনেক কম! তাই যেহেতু তিনি টেট পাস করেনি তাই চাকরি দেওয়ার কোনও প্রশ্ন আসছে না!
এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের কাছে প্রশ্ন তোলেন ,যে ডাটার উপর ভিত্তি করে এই তথ্যগুলি দেওয়া হচ্ছে সেগুলি সবই ডিজিটাল ডাটা ! যার মান্যতা এখনও কোর্ট দেয়নি। যে ডাটা নিয়ে এখনও সিবিআই তদন্ত করছে, তাই এই ডাটা যে সঠিক সেটা কিন্তু কোর্ট বা পর্ষদ কেউই বলতে পারবে না। তাই বেনিফিট অফ ডাউট হিসেবে চাকরি দেওয়ার জন্য যে পরবর্তী পদক্ষেপ দরকার সেটা শুরু করতে হবে।
কোর্ট আরও জানায়, যেহেতু ওই চাকরিপ্রার্থীকে ২০২০ সালে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছিল তাই এটা ধরে নিতে হবে যে ওই চাকরিপ্রার্থী টেট পাস করেছে ! যদি সে টেট ফেল করত তাহলে কোনও মতেই তাকে পর্ষদ ইন্টারভিউতে ডাকত না। তাই যেহেতু তিনি একবার ইন্টারভিউ দিয়েছেন বেনিফিট অফ ডাউট হিসাবে এটা ধরেই নেওয়া যেতে পারে যে তিনি টেট পাস করেছেন ! কিন্তু বর্তমানে প্রাথমিক পর্ষদ যে ডাটা দিচ্ছে সেই সব ডাটা গুলো ডিজিটাল ডাটার উপর ভিত্তি করে! তাই এর মান্যতা দেওয়াটা খুবই কঠিন !
বেনিফিট অফ ডাউট হিসেবে ওই চাকরিপ্রার্থীকে চাকরি দেওয়া সুপারিশ করা হয়েছে ! তবে চাকরি পাওয়ার যে পরবর্তী পদক্ষেপ সেটা পর্ষদ ঠিক করবে!

অন্যদিকে পর্ষদের আইনজীবী জানিয়েছেন, পর্ষদের ওই ডিজিটাল ডাটার উপর ভিত্তি করে এখন অনেকেই চাকরি করছেন। প্রশ্ন ভুল মামলায় পর্ষদ তাদের সবাইকে পাস হিসেবে গণ্য করেছে! তাহলে ঐ সমস্ত চাকরির ক্ষেত্রে যদি ডিজিটাল ডাটার মান্যতা দেওয়া হয় ,তাহলে এখন কেন ডিজিটাল ডাটার মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না?

আদালতের পর্যবেক্ষণ, দুদিন আগেও ডিভিশন বেঞ্চ এটা ঠিক করতে পারিনি যে ৮২ নাম্বার পেতে পাস হবে না ৮৩ নাম্বার পেয়ে পাস হবে! সেই মামলা আরও বৃহত্তর বেঞ্চে গিয়েছে! হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ এই মামলা শুনবেন!

spot_img

Related articles

বাজেয়াপ্ত করা বিস্ফোরকেই বিস্ফোরণ! জম্মু ও কাশ্মীরের নওগাম থানায় আহত অন্তত ৮

দিল্লি বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশের পাশাপাশি, হরিয়ানা পুলিশ ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ (Jammu and Kashmir police) লাগাতার...

জনজাতীয় গৌরব দিবস: বীরসা মুন্ডার জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও আদিবাসী ঐতিহ্য উদযাপন

সি পি রাধাকৃষ্ণণ, ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি আজ আদিবাসী আন্দোলনের অন্যতম নেতা বীরসা মুন্ডার (Birsa Munda) জন্মদিবস। এই দিনটিকে জনজাতীয় গৌরব...

রবীন্দ্র সরোবরের ছয় ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি: সম্পূর্ণ আইনি পথে কর্পোরেশন

প্রায় পাঁচ দশক পর রাবীন্দ্র সরোবর চত্বরে অবস্থিত ছ’টি ক্লাবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক ভাড়ার চুক্তি করল কলকাতা...

বিহারে কমিশনের কারচুপি, তোপ অখিলেশের: ঘুরিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ ওমরের

বিহারে এসআইআর প্রয়োগ করে ভোটারদের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস-আরজেডির (RJD) মহাজোটের এটাই ছিল বিহার নির্বাচনের মূল...