০৯.০৮.২৩, রাত ১১টা, রুম নম্বর ১০৪! এখানেই লুকিয়ে যাদবপুরে ছাত্রমৃ*ত্যুর যাবতীয় রহ*স্য

যাদবপুর মেইন হস্টেলের এ২ ব্লকের ১০৪ নম্বর ঘরেই ঘটেছিল না*রকীয়-পৈশাচি*ক ঘটনা। ধৃতদের জেরা করে তদ*ন্তকারীদের অনুমান, ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে নিহ*ত ছাত্রকে ৬৮ নম্বর রুম থেকে চারতলার ১০৪ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ‘ইন্ট্রো’ দেওয়ার জন্য।

৯ আগস্ট। রাত ১১টা। মেইন হস্টেলের রুম নম্বর ১০৪। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ছাত্রমৃত্যুর সব রহস্য লুকিয়ে এখানেই। রাত ১১টা থেকে ১১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে এমন কিছু ঘটেছিল ১০৪ নম্বর ঘরে, যার জেরে অকালে ঝরে পড়ল বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের প্রাণ৷ পাশাপাশি তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে রহস্য লুকিয়ে আরও একটি ঘরে। রুম নম্বর ৬৮৷

পুলিশ সূত্রে খবর, যাদবপুর মেইন হস্টেলের এ২ ব্লকের ১০৪ নম্বর ঘরেই ঘটেছিল নারকীয়-পৈশাচিক ঘটনা। ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীদের অনুমান, ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে নিহত ছাত্রকে ৬৮ নম্বর রুম থেকে চারতলার ১০৪ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ‘ইন্ট্রো’ দেওয়ার জন্য৷ ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীর সঙ্গেই ১০৪ নম্বর রুমে গিয়েছিল নিহত ছাত্র।

চার তলার এই ১০৪ নম্বর রুমটি ছিল আরেক ধৃত ছাত্র মনোতোষ ঘোষের৷ তবে সেখানে মনোতোষ একা নয়, তার সঙ্গে আগে থেকেই হাজির ছিল প্রাক্তনী এবং বর্তমান ছাত্র মিলে অন্তত আরও ২০ জন৷ তাদের মধ্যে ধৃত সপ্তক কামিল্যা, সুমন নস্কর, অসিত সর্দার, দীপশেখর দত্ত, মহম্মদ আসিফ আনসারি, অঙ্কন সর্দার এবং মহম্মদ আরিফও ছিল।বাকি আরও কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে জেরায়। যাদের মধ্যে অনেকেই গ্রেফতারির আশঙ্কায় গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

ডায়েরির রহস্য বন্দি এই ১০৪ নম্বর রুমে। তল্লাশি করে এখান থেকেও বহু চর্চিত সেই ডায়েরি পেয়েছিল পুলিশ৷ উদ্ধার হওয়া ডায়েরির ১৫১ নম্বর পাতায় চিঠিটি লেখা হয়েছিল৷ চিঠিটি লিখেছিল আরেক ধৃত ছাত্র দীপশেখর দত্ত৷ চিঠিটি লেখার পরিকল্পনা ছিল ধৃত সৌরভ চৌধুরী এবং সপ্তক কামিল্যার৷ দীপশেখর জেরায় জানিয়েছেন, চিঠিটি সে লিখলেও, নিচে সই ছিল নিহত ছাত্রের।

নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে জোর করে নিহত ছাত্রকে দিয়ে বিপক্ষের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে চিঠি লেখানো হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে, ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব আরও জোরালো হচ্ছে কারণ, ঠিক এই সময়েই একটি রহস্যজনক ফোন গিয়েছিল ডিন অফ স্টুডেন্টসের কাছে৷ সেই ফোনের বয়ান এবং এই চিঠির বয়ানের মধ্যে মিল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ তাহলে কি, জুনিয়র ছাত্রকে দিয়ে চিঠি লেখানো এবং ডিন-কে ফোন সবই হয়েছিল পরিকল্পনামাফিক? উঠছে প্রশ্ন৷

সেদিন অবশ্য মৃত ছাত্রকে রাজনীতির বোড়ে বানিয়ে চিঠি লেখার মধ্যে দিয়েই শেষ হয়নি৷ এরপরেই শুরু হয়েছিল আসল ‘ইন্ট্রো’ পর্ব৷ অর্থাৎ রচিত হয়েছিল বর্বরতার উপাখ্যান। ‘ইন্ট্রো’ পর্বে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বিবস্ত্র করা হয় অসহায় ওই ছাত্রটিকে৷ সেখানেই নাকি এমন কিছু করা হয়, যাতে ওই ছাত্র ছুটে চারতলার ১০৪ নম্বর রুম থেকে বেরিয়ে তিনতলায় নেমে আসে এবং কোনও ভাবে বারান্দা দিয়ে নীচে পড়ে যায়৷ ঘটনার সময় তাঁকে ধরার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্র মহম্মদ আরিফ৷ কিন্তু, ওই ছাত্র প্রচণ্ড ঘর্মাক্ত থাকায় হাত পিছলে যায়৷

 

Previous articleগতি কমিয়ে প্রথম পাক সম্পূর্ণ, চাঁদের আরও কাছে ল্যান্ডার মডিউল
Next articleব্যাঙ্কের ইচ্ছেমতো জরিমানায় গ্রাহক হয়রানি ঠেকাতে নয়া নির্দেশিকা RBI-এর