বার্সেলোনার মঞ্চে লগ্নির আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, বাংলাই এখন দেশের গেম চেঞ্জার

 


কুণাল ঘোষ
মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী

বার্সেলোনা: স্পেনের শিল্প অভিযানে দ্বিতীয় বড় শিল্প সম্মেলন। সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানালেন, দেশে বিনিয়োগের সেরা গন্তব্য বাংলা। আপনারা আসুন। লগ্নি করুন। ইন্ডিয়াকে পথ দেখাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।

এবার স্পেন সফরে মাদ্রিদে লা লিগার সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে রাজ্য সরকার। সেকথা উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তিনি জানালেন, লা লিগা জায়গা চাওয়ায় আমরা কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামকে দিচ্ছি। অনেক স্প্যানিশ খেলোয়াড় আইএসএল খেলছেন।

আরও পড়ুন: ২৪-এর চমক! লোকসভায় পেশ মহিলা সংরক্ষণ বিল

মঙ্গলবারের সম্মেলনে একের পর এক উদাহরণ তুলে বাংলা আর স্পেনের হৃদয়ের একতার কথা শোনান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বলেন, ফুটবল হোক বা মিউজিক, ভূগোলের বাধা পেরিয়ে আমরা আজ এক পরিবার। পাঁচ বছর বিদেশে যেতে পারিনি। সেই কারণেই যখনই সুযোগ পেলাম, প্রথম স্পেনে এসেছি।

কেন বাংলায় বিনিয়োগ করা হবে? মুখ্যমন্ত্রী বললেন, বাংলায় গেমচেঞ্জিং প্ল্যান রয়েছে। এই নিয়ে ৫ সূত্রের কথা জানান মমতা। তাঁর কথায়, এখানে কাজের খরচ কম। সেরা মানবসম্পদ রয়েছে। উচ্চমেধাসম্পন্ন শিক্ষিত মানুষ রয়েছেন। দিনরাত কাজের জন্য লোক পাওয়া যায়। ধর্মঘটের নীতি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে। যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে বিনিয়োগের সেরা গন্তব্য পশ্চিমবঙ্গই। এছাড়া বাংলার জিডিপি বৃদ্ধি ২০০ বিলিয়ন ইউরোর বেশি।

একইসঙ্গে বাংলার উন্নয়নমূলক নানা কাজের খতিয়ানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, বাংলায় নারী ক্ষমতায়নে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র লেখাপড়া নয়, কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সবেতেই মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। ৯৯ শতাংশ মানুষ বিভিন্নরকম সামাজিক সুরক্ষা পাচ্ছেন। মহিলাদের জন্য চালু করা হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। এর মাধ্যমে তাঁরা হাতখরচ পান। কৃষকদের জন্য বিমা করা হয়। স্কুল থেকে কলেজ-সবেতেই সরকারের নানা জনমুখী প্রকল্প। এগুলির সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সামাজিক বিভাজন বা অন্য কোনও ভেদাভেদ নেই।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায়। কিডনি অপারেশন হোক বা ব্রেন অপারেশন- সরকারি খরচে চিকিৎসা মেলে। বাংলায় শিক্ষার ক্ষেত্রে লেখাপড়ার খরচের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সব উপকরণ যেমন, পড়ুয়াদের জুতো-ব্যাগ সবই দেয় রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দ্রুত অর্থনীতির বিকাশ হচ্ছে বাংলায়। আমাদের জাতীয় করিডোর রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও এশিয়ার অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে। বাংলা উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বার।

শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য সবেতেই বাংলার অগ্রগতির ছবি তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অন্য রাজ্য বাংলাকে অনুসরণ করে। রাজ্যে কয়লা থেকে গ্যাস সব শিল্পেই নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আমাদের রাজ্যে দ্রুত গতিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে উঠছে। ৯০০ MSME সেক্টরে ১.৫ বিলিয়ন মানুষ কাজ করছে। তিনটি অর্থনৈতিক করিডর হচ্ছে- ডানকুনি থেকে হলদিয়া, ডানকুনি থেকে কল্যাণী, ডানকুনি থেকে রঘুনাথপুর। সিলিকন ভ্যালির জন্য ২০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। বাংলায় শস্য উৎপাদনে বিপ্লব এসেছে। ভারতের বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনকারী রাজ্য বাংলা। সবজি উৎপাদনে দ্বিতীয়। এই সব ক্ষেত্রেও বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে। ২১ থেকে ২৩ নভেম্বর BGBS অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সবাইকে সব লগ্নিকারীদের আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আপনারা অংশীদার হোন। আন্তর্জাতিক বইমেলাতেও আপনারা পার্টনার ছিলেন।

 

Previous article২৪-এর চমক! লোকসভায় পেশ মহিলা সংরক্ষণ বিল
Next article‘অরণ‌্য’র প্রাচীন প্রবাদ’ নিয়ে টলিউডে ‘গোয়েন্দা’ জীতু কমল!