Saturday, November 8, 2025

২২ বছর পরও নিরাপত্তায় গলদ! অধিবেশন চলাকালীন সংসদের অন্দরে ‘হামলা’, আতঙ্কে সাংসদরা

Date:

Share post:

সংসদে জঙ্গি হামলার ২২ তম বর্ষপূর্তি আজ। সেই দিনেই সংসদের অন্দরে চলল অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের হামলা। সংসদের দর্শক আসন থেকে সাংসদদের মধ্যে লাফ দিল ২ জন। জুতোর মধ্য থেকে বের করল কিছু, মুহূর্তের মধ্যে গোটা সংসদ ভবনে ছড়িয়ে পড়ল হলুদ রঙের গ্যাস। বুধবার সংসদের অন্দরে ঘটা এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়ালো সাংসদদের মধ্যে। প্রশ্ন উঠল ২২ বছর পরও কীভাবে সংসদের নিরাপত্তায় এমন চরম গাফিলতি?

২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাঁচ লস্কর ও জইশ জঙ্গি ঢুকে পড়েছিল সংসদ চত্বরে। শুরু হয় গুলির লড়াই। জঙ্গিদের নিকেশ করা গেলেও প্রাণ হারান আটজন জওয়ানও। নিহত হন সংসদের এক মালিও। সেই ঘটনাকে স্মরণে রেখে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi), লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেরা। এর ঠিক পর সেই ঘটনারই আতঙ্কের স্মৃতি ফিরে এলো সংসদে। জানা যাচ্ছে, বুধবার লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলছিল। সভায় ওই সময়ে মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বক্তৃতা করছিলেন। ঠিক তখনই দর্শকআসন থেকে লাফ দেয় ২ জন। মুহূর্তে আতঙ্ক তৈরি হয় সংসদের অন্দরে। সাংসদেরাও আসন ছেড়ে উঠে পড়েন। হুড়োহুড়ির মাঝে জুতোর মধ্য থেকে কিছু একটা বের করে একজন, মুহূর্তের মধ্যে গোটা সংসদ ভবনে ছড়িয়ে পড়ল হলুদ রঙের গ্যাস। বেশ কিছুক্ষণ এই পরিস্থিতি চলার পর সাংসদরাই ধরে ফেলেন ২ জনকে। ধরা পড়ার পর স্লোগান দিতেও দেখা যায় তাঁদের। পাশাপাশি সংসদের বাইরেও আটক করা হয় ২ জনকে। তাঁরা কারা এবং কীভাবে তাঁরা সংসদের অন্দরে ঢুকে পড়ল তা জানার চেষ্টা চলছে।

এই ধরনের ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত তৃণমূল সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার। তিনি প্রশ্ন তোলেন মোদি সরকারের আমলে সংসদের অন্দরে নিরাপত্তা কোথায়? সংসদের অন্দরে যে গ্যাস ছড়ানো হয়েছে তা বিষাক্ত গ্যাসও হতে পারত। এমনি সময় বিরোধীরা আওয়াজ করলে মার্সাল ডাকা হয়। অথচ এমন ঘটনা ঘটারও পরও কোনও নিরাপত্তারক্ষির টিকি দেখা যায়নি সংসদের ভেতরে। এটাই মোদি জমানার বর্তমান অবস্থা। পাশাপাশি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, “দু’জন গ্যালারি থেকে হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁদের হাতে কিছু ছিল। হলুদ রঙের গ্যাস বেরোচ্ছিল তা থেকে। সাংসদেরাই তাঁদের ধরে ফেলেন। পরে নিরাপত্তারক্ষীরা হামলাকারীদের ধরে বার করে আনেন। দুপুর ২টো পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছে। ২০০১ সালে সংসদ হামলার ঘটনায় যাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন, আজ তো তাঁদেরও মৃত্যুদিন। একই দিনে আবার সংসদের নিরাপত্তা ভঙ্গ করা হল।”

এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “যা ঘটেছে তাঁর গভীর তদন্ত প্রয়োজন। ওখানে যদি দেশের শত্রুপক্ষ ঢুকে থাকে, যারা দেশের ভালো চায় না। তাঁরা ঢুকল কীভাবে? এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ব্যর্থতা। দুষ্কৃতীদের গ্যালারি অবধি পৌছনো কোনও সাধারণ বিষয় নয়। অনেকগুলি নিরাপত্তা বেষ্টনি পেরিয়ে ওখানে আসতে হয়। এটা এতটা সহজ বিষয় নয়। ফলে হয় এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্যর্থতা নাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাজানো নাটক। ফলে সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারককে দিয়ে এই ঘটনা তদন্ত করানো হোক।”

spot_img

Related articles

জন্মদিনে চরম অসৌজন্য! অভিষেককে নিয়ে বিজেপির পোস্টে সরব নেটদুনিয়া

বাংলায় বরাবর সৌজন্যের রাজনীতি দেখিয়ে এসেছে সব রাজনৈতিক দল। বাম আমলে সিপিআইএম নেতা থেকে তৃণমূল বা কংগ্রেস নেতাদের...

আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা, অনুশীলনই বন্ধ রাখল মোহনবাগান

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে মোহনবাগানের(Mohun Bagan) সিনিয়র দলের অনুশীলন। খবর অনুযায়ী, আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা। টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়...

জন্মদিনে মানুষের ভালবাসা মনে করিয়ে দেয় কর্তব্য: ভিড়ে মিশে গেলেন অভিষেক

সকাল হওয়ার অপেক্ষা নয়। রাত ১২টা বাজার অপেক্ষায় ছিল বাংলার বিপুল জনতা। জননেতা, তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক...

ফলপ্রকাশ SSC একাদশ-দ্বাদশের: ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ, দাবি ব্রাত্যর

বাংলায় কর্মসংস্থানে সদা সচেষ্ট প্রশাসন ও প্রশাসনের সব দফতর। ফের একবার তার প্রমাণ মিলল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসএসসি-র...