Sunday, August 24, 2025

হয় কিডনি দাও নাহলে টাকা! ডিভোর্সের পর স্ত্রীর কাছে ‘আজব’ দাবি স্বামীর

Date:

Share post:

সম্পর্কের শুরু ভালোবাসা দিয়েই। তারপর বিয়ে করে নতুনভাবে নতুন জীবনের পথ চলা শুরু। এভাবে বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু আচমকা সুখের সংসারে নেমে এলো অন্ধকারের কালো মেঘ। স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে নিজের একটি কিডনি (Kidney) দিয়ে প্রিয় মানুষটির জীবন বাঁচিয়েছিলেন। স্বামীর কিডনি পেয়ে নবজীবন পান মহিলা। কিন্তু কিছুদিন পর সেই স্বামীকেই ডিভোর্সের (Divorce) আবেদন করেন স্ত্রী (Wife)। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কারণেই এমন পরিণতি স্বামীর। তবে ভালোবাসা বিয়ের আগে যতই মধুর থাকুক না কেন বিচ্ছেদের পর তা যে এমন পর্যায়ে পৌঁছবে তা হয়তো কল্পনা করতে পারবেন না কেউই। জানা যায়, বিচ্ছেদের আবেদনের পর থেকেই প্রাক্তন স্ত্রীর উপর বেজায় চটে এবার নিজের দেওয়া কিডনিই ফেরত চাইলেন ওই ব্যক্তি। আর কিডনি না পেলে বিনিময়ে দাবি করা হয় ১২ লক্ষ পাউন্ড। ঘটনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। আর বিষয়টি সামনে আসতেই নেটিজেনদের মধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন একদম ঠিক দাবি করেছেন তিনি। যে মানুষটি এত বড় কাজ করলেন বিনিময়ে কিছুই পেলেন না তিনি। অনেকে মহিলার পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন কিডনি দিয়ে কী মাথা কিনেছেন? দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে কষ্টে থাকার চেয়ে এটাই ভালো।

ঘটনাটি ঠিক কী?

এক সময় রিচার্ড বাতিস্তা নামে নিউ ইয়র্কের এক চিকিৎসক ব্যক্তি জীবন বাঁচাতে তাঁর স্ত্রী ডোনেলেকে নিজের কিডনি দান করেছিলেন। তবে স্ত্রী সুস্থ হওয়ার পর স্ত্রী তাঁর কাছে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন। রেগে গিয়ে স্বামী তাঁর কিডনি ফেরত চেয়েছেন। শুধু তাই নয়, স্বামীর দাবি, কিডনি ফেরত দিতে না পারলে ১২ লাখ পাউন্ড দিতে হবে। সূত্রের খবর, ১৯৯০ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন দম্পতি। তাঁদের তিন সন্তানও রয়েছে। রিচার্ডের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই ভুগছেন তাঁর স্ত্রী। আর সে কারণে তাঁদের সম্পর্কে ঘুণ ধরেছিল বহু বছর আগেই। তবে সেসব কিছুকে আমল দিতে নারাজ ছিলেন বাসিস্তা। ভেবেছিলেন স্ত্রীকে সুস্থ হলে সব নতুন করে শুরু করবেন। কিন্তু কোথায় কী? তার মধ্যেই এমন পরিনতি।

২০০১ সালে স্ত্রীকে কিডনি দানের সিদ্ধান্ত নেন রিচার্ড। ঠিক ৪ বছর পর একটু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতেই ২০০৫ সালে ডোনেলে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন। এরপরই রেগেমেগে বাতিস্তা স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি ফেরত চেয়েছেন। অন্যথায় কিডনির মূল্যের সমতুল্য ক্ষতিপূরণে দাবি জানিয়েছেন। বাতিস্তার আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল কিডনির মূল্য জানতে চেয়েছিলেন। ডোনেলের থেকে তিনি সেটি ফেরত চান। ব্যক্তির এমন ক্ষতিপূরণের দাবি শুনলেই সকলেই চমকে গিয়েছেন। এমনটা কখনও কোনও কেসে হয়েছে কিনা তা মনে করতে পারছেন দুঁদে আইনজীবীরাও। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলাকালীন বাতিস্তার কিডনি বা ক্ষতিপূরণের কোনও দাবিই মঞ্জুর করেনি সেদেশের শীর্ষ আদালত। আদালতের সাফ কথা, কিডনি দান উপহার স্বরূপ। তা ফেরত নেওয়া যায় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যখন কেউ একটি অঙ্গ দান করে তখন এটি আইনত একটি উপহার হিসাবে বিবেচিত হয়। তাই কোনওভাবেই কিডনি ফেরানো অসম্ভব। আদালতের রায়ে বউ তো আগেই হাতছাড়া হয়েছিল এবার গেল আরও একটা কিডনিও। তবে আদালতের রায়ে খুশি ডোনেলে। তাঁর আইনজীবী জানান, আমরা এই রায়ে অত্যন্ত খুশি।

spot_img

Related articles

ধর্ষিত মূক- বধির-বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর পাশে নেই যোগী সরকার!

যোগীরাজ্যে(Yogi Adityanath) মূক ও বধির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর(Disabled Girl) নৃশংস ধর্ষণ (Brutal Rape)। পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। ফলে মেয়েকে...

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...