একদম ফিল্মি কায়দায় যুবককে গ্রেফতার করল হরিদেবপুর থানার পুলিশ। কিন্তু কেন? তা জানতে হলে কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে হয়। কীভাবে কলকাতা পুলিশের ধৈর্য ও নিখুঁত পরিকল্পনায় গ্রেফতার হলেন অভিযুক্ত যুবক!

আরও পড়ুন- সোমবার থেকে আংশিক কর্মবিরতির ডাক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের

দক্ষিণ কলকাতার প্রাসাদপম বাড়ির মালিক ব্যবসায়ী স্বামীনাথ জসওয়াল। দুই ছেলে। ছোট ছেলে ভিকি জসওয়াল পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। দুবাইয়ে চাকরি করতেন। শিলিগুড়ির মেয়ে জ্যোতি গুপ্তার সঙ্গে বিয়ে হয় ভিকির। প্রথমদিকে সম্পর্কটা ভালো চললেও পরে দাম্পত্যে তিক্ততা বাড়ে। দুজনের সন্তানও জন্মায়। ভিকি একের পর এক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন জ্যোতি। শিলিগুড়ির আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদ ও খরপোষের মামলা দায়ের করেন। কিন্তু সে মামলায় একবারও আদালতে হাজিরা দেননি ভিকি। সেই সূত্র ধরে নভেম্বর মাসে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। কিন্তু ভিকি প্রথমে ভুটান সীমান্তে জয়গাঁ তার পর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় সেখান থেকে অসম হয়ে সিঙ্গাপুর, পরে দুবাই পালায়। এরপরই তাকে গ্রেফতার করার ছক করতে থাকে।

ভিকিকে গ্রেফতারের হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এমন সময় মহানবমীর দিন আশার ক্ষীণ আলো দেখতে প্রায় তাঁরা। এর মধ্যে জানা যায় উত্তরপ্রদেশের এক মেয়ের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্কে আবদ্ধ হয় ভিকি। এর মধ্যেই খবর আসে, নবরাত্রিতে নতুন বউয়ের সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসছে ভিকি। এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করেননি তদন্তকারী। জয়দেব বৈরাগীর তত্ত্বাবধানে হরিদেবপুর থানার ওসি সুভাষ অধিকারীর নেতৃত্বে ৮-১০ জনের টিম তৈরি হয়ে যায়। কালীতলার প্রাসাদের মতো বাড়ির বাইরে শুরু হয় নজরদারি। কেউ পুরসভার কর্মী সেজে সিমেন্টের বিশার পাইপের মধ্যে আশ্রয় নেয় কেউ। তো কেউ আবার পুরসভার নিরাপত্তাকর্মী সেজে পাহারা দিতে শুরু করে। আর কয়েকজন নতুন পোশাকে ঠাকুর দর্শনে অজুহাতে বাড়ির চারপাশে চক্কর কাটতে শুরু করে। এর পরই আশে মাহেন্দ্রক্ষণ! ঘড়ির কাটায় শুক্রবার বেলা ১২টা। বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় দুধ সাদা গাড়ি। সেখান থেকে ভিকি নামতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। দ্রুতই আদালতে তোলা হবে অভিযুক্ত ভিকিকে।
