কুমোরটুলি-কাণ্ডে ঘটনার পুনর্নির্মাণে মধ্যমগ্রামে যাবে কলকাতা পুলিশের টিম: সিপি

খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়

মঙ্গলবার সকালে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা ফাল্গুনী ও আরতি ঘোষ ট্রলি ব্যাগে (Trolley bag) দেহ ভরে কলকাতায় এসেছিলেন। চেয়েছিলেন গঙ্গায় মৃতদেহ ফেলে দেবেন। কুমোরটুলি এলাকার (Kumartuli Case)  স্থানীয় মানুষের সন্দেহ হয়। তারা ট্রলি ব্যাগে কি আছে দেখতে চান।কিছুতেই তারা দেখাতে রাজি হননি। অনেক জোড়াজুড়ির পর বলেন, কুকুরের দেহ আছে। কিন্থু শেষ রক্ষা হয়নি।স্থানীয়দের তৎপরতায় তারা ধরা পড়েন। এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তরফে কমিশনার মনোজ ভার্মা (Manoj Verma) জানান, খুব শীঘ্রই মধ্যমগ্রামে যাবে তাদের টিম। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।

ইতিমধ্যে পুলিশি জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছেন, তারাই ওই প্রৌঢ়াকে খুন করেছেন।যদিও পুলিশের দাবি,  তাদের বয়ানে অসঙ্গতি আছে।তাই তাদের খুনের মোটিভ কী ছিল, তা জানতে এখন তৎপর তদন্তকারীরা। সিপি মনোজ ভার্মা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে নর্থ পোর্ট থানায় খবর আসে। তবে মূল ঘটনা যেহেতু মধ্যমগ্রামে ঘটেছে তাই সেখানকার পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। আমাদের টিম সেখানে যাবে, ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় ফাল্গুনীর দাবি, দুদিন আগে খুন করেছিলেন তিনি। মৃতদেহের পচা গন্ধ ঢাকতে রাসায়নিক স্প্রে করে রাখা হয়েছিল। এই দাবি আদৌ সত্যি কিনা তা জানতে চায় পুলিশ। সিপি বলেন, সোমবার বিকেলের দিকে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ের মধ্যে দেহে পচনের লক্ষণ আসতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না। বারাসত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ট্রলিব্যাগে দেহ ভরে মধ্যমগ্রাম থেকে কলকাতা এলেন দুই মহিলা, অথচ কেউ কিছু জানতেই পারল না!দিনের আলোয় প্রকাশ্য রাস্তায় এভাবে ব্যাগে দেহ নিয়ে দুই মহিলার ঘুরলেন। অথচ কেউ খেয়ালই করলেন না।এই প্রসঙ্গে সিপির বক্তব্য, প্রতিটি জায়গায়, প্রতিটি গাড়ি ওভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না।

জানা গিয়েছে, মৃত মহিলা ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি। ঠিক কবে খুন হয়েছেন তিনি, কেন ফাল্গুনীর বাড়িতে এসেছিলেন, সেই বিষয়টিও এখনও স্পষ্ট নয়।ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে বচসা হয়েছিল। কিন্তু কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল, তাও জানা যায়নি। যদিও ফাল্গুনী পুলিশকে জানিয়েছেন, সোনার গয়নার ভাগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল তাদের। তা থেকেই খুনের ঘটনা। যদিও স্থানীয়দের দাবি, ফাল্গুনীদের  বাড়িতে রাতে অচেনা লোকজন আসত। পাড়া-পড়শিদের সঙ্গেও তাদের বহুবার ঝামেলা হয়েছে। তাই বিগত কয়েক মাস ধরে ফাল্গুনীরা কার্যত একঘরে হয়েই থাকতেন। তাই এমন একটি ঘটনায় তারা মোটেই অবাক নন।