উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঠান্ডা মাথায় ব্রাত্য বসুকে (Bratya Basu) টার্গেট করা হয়েছে- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) শিক্ষামন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। SFI-এর আক্রমণে চোট পান শিক্ষামন্ত্রী। এসএসকেএম ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা করান শিক্ষমন্ত্রী। হাসপাতালে যান কুণাল। সেখানে গিয়ে ব্রাত্যর পাশে দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় এই আক্রমণের প্রতিবাদ জানান তিনি।

শনিবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে ছিল ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। বাধ্য হয়ে পিছনের পথ দিয়ে ঢুকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বক্তব্য রাখতে শুরু করলেই ফের অভব্য আচরণ শুরু করে SFI। চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। আক্রমণ করা হয় অধ্যাপকদের। বহু অধ্যাপক আক্রান্ত হন ওই অসভ্য, উচ্ছৃঙ্খল পড়ুয়াদের হাতে। এদিন শিক্ষামন্ত্রী বারবার তাঁদের দাবি শুনে আলোচনায় বসতে চান। সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হন তিনি। কিন্তু নিজেদের অতি বিপ্লবী মানসিকতার পরিচয় দিতে গিয়ে কোনও সমঝোতার রাস্তাতেই হাঁটতে চায়নি এই বিক্ষোভকারীরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে থাকা দু’টি পাইলট কারের কাচও ভেঙে দেন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। মন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া থেকে তাঁর গাড়ির বনেটে উঠে বিক্ষোভকারীরা। ভেঙে দেওয়া হয় গাড়ির কাচ। আহত হন শিক্ষামন্ত্রী। এসএসকেএম ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসা করান শিক্ষমন্ত্রী ও তাঁর দেহরক্ষী।

কুণালের (Kunal Ghosh) কথায়, “আমি মাননীয় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাব যে তিনি সংযম দেখিয়েছেন। অভিভাবকের মতো আচরণ করেছেন। কোনও রকম প্ররোচনায় পা দেননি। কিন্তু তৃণমূলের সৌজন্যকে যেন এরা দুর্বলতা না ভাবে। মন্ত্রীর গাড়িতে বসে, কাচ ভাঙা হয়েছে। বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।”
আরও খবর: চূড়ান্ত অভ্যবতা SFI-এর! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত শিক্ষামন্ত্রী, ভাঙল গাড়ির কাচ

কুণালের কথায়, “এক এক করে সব ছবি, ভিডিও বেরোচ্ছে। আমি বলব সবাইকে চিহ্নিত করতে বলব। আমরা প্রতিহিংসা করা দল নই, সবটা বিবেচনা করা হবে। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। শুধু একটাই কথা বলব যেন দুর্বল না ভাবে কেউ। যেভাবে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের ঘোষিত সম্মেলন বানচাল করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ঠান্ডা মাথায় ব্রাত্য বসুকে টার্গেট করা হয়েছে।”
শিক্ষামন্ত্রীর উপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিবাম ছাত্রদের তাণ্ডব এর প্রতিবাদে WBCUPA-র বক্তব্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে WBCUPA-র বার্ষিক সাধারণ সভা চলাকালীন নকশাল প্রভাবিত অতিবাম কিছু ছাত্র বিনা প্ররোচনায় সভার মধ্যে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। সভামঞ্চ থেকে বারবার ছাত্রদের অনুরোধ করা হয় এই তান্ডব বন্ধ করতে কেননা WBCUPA – র সভাপতি এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ব্রাত্য বসু সংগঠনের সভা পরিচালনা শেষ করে ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত। কিন্তু আমরা দেখলাম অতিবাম ছাত্ররা তাদের গোপন অ্যাজেন্ডা সামনে রেখে সভায় যোগ দিতে আসা অধ্যাপকদের ওপর আক্রমণ শুরু করে। ৩০০০-র বেশি অধ্যাপক তখন সভাস্থলে। পরিকল্পিত আক্রমণে তারা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু প্রত্যেক অধ্যাপক ছিলেন শান্ত এবং সংযত। স্বয়ং সভাপতি সভামঞ্চ থেকে বার বার এই সংযত থাকার যে নির্দেশ দিয়েছেন অধ্যাপক সমাজ তা মেনে চলেছেন অক্ষরে অক্ষরে।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে WBCUPA. আগেও তাদের বর্বর আক্রমণের ফলে গুরুতর আহত হয়েছেন অধ্যাপক ওম প্রকাশ মিশ্র, অধ্যাপক প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে। এবং এই দুঃসাহস আজ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যখন একটি শিক্ষিত গণতান্ত্রিক অধ্যাপক সংস্থার সাধারণ বার্ষিক সভায় যোগ দিতে আসা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তথা WBCUPA-এর সভাপতি অধ্যাপক ব্রাত্য বসুকে ঘিরে ধরে শুধু হেনস্থা নয়, শারীরিক বল প্রয়োগের মাধ্যমে তাঁকে আঘাত করার এক ঘৃণ্য চক্রান্ত রচিত হয়েছিল আজ যাদবপুরে। এর ফলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য SSKM হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।

এই জঘন্য ও অগণতান্ত্রিক আক্রমণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ জানাতে আগামী ৪ঠা মার্চ, দুপুর ২টা, যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডে সংযুক্ত প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে ওয়েবকুপা।

–

–

–

–

–
–
–