Friday, November 7, 2025

কথা শুনতে রাজ্যের ডাক: শিক্ষকদের বায়নাক্কায় জটিলতা, আর জি করের ছায়া!

Date:

Share post:

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে স্কুলে কাজে যোগ দিতে সম্মত হয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। ফলে রাজ্যের তরফ থেকেও দ্রুত টাস্ক ফোর্স (task force) গঠন করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছিল। হঠাৎই আন্দোলন-মুখী চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি অংশ। তাদের আন্দোলনে ইতি-উতি উঁকি মারা শুরু আর জি কর আন্দোলনের চিকিৎসক থেকে বিজেপির সাংসদদের। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকাশ ভবনে (Bikash Bhavan) বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে গেল কেন হঠাৎ এসএসসি-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথে রাজ্য প্রশাসনের উপর আস্থা রাখা শিক্ষক সমাজ। শুক্রবারের বৈঠকের আগে কার্যত শিক্ষক সমাজের মুখে অতিবাম প্রভাবিত আর জি কর আন্দোলনকারী (R G Kar incident) চিকিৎসকদের দাবি। কখনও বৈঠকে যোগদানকারীর সংখ্যা, কখনও বৈঠকের লাইভ সম্প্রচারের বায়না নিয়ে বিকাশ ভবনে হাজির শিক্ষকদের প্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার কলকাতায় মিছিলের ডাক দিয়েছিল চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি অংশ। সেখানেই দেখা যায় সামনের সারিতে চিকিৎসক আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার, আশফাকুল্লা নাইয়াদের। এরপর আবার বৃহস্পতিবার থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে শিক্ষক সমাজের তিন প্রতিনিধি। রিলে অনশন চালানোর কথা বলা হলেও এসএসসি-র (SSC) বিরুদ্ধে আন্দোলনের কারণ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে এসএসসি-র তরফ থেকে তথ্য পেশ থেকে আলোচনায় সবরকমের সহযোগিতা করা হচ্ছে, সেখানে আন্দোলন এসএসসির বিরুদ্ধে কেন। ঠিক এভাবেই আর জি কর আন্দোলনের সময় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে অচলাবস্থা তৈরির চেষ্টা করেছিল বাম-অতিবাম চিকিৎসকরা। যেখানে গোটা ঘটনার তদন্তভার ছিল সিবিআইয়ের (CBI) হাতে ও তারা শেষ পর্যন্ত আর জি করের ঘটনায় ফাঁসির সাজা বের করে আনতে পারেনি।

অনশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের তরফ থেকে সহানুভূতির কোনও খামতি রাখা হয়নি। শুক্রবারই শিক্ষা মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠকে ডাকা হয় এসএসসি-র শিক্ষক সমাজকে। সেখানেও দেখা যায় বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য সদস্য সংখ্যা নিয়ে জটিলতা। আর জি কর আন্দোলনের সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাজ্যের স্বাস্থ্যের অচলাবস্থা কাটাতে বারবার বৈঠকে ডেকেছিলেন চিকিৎসকদের সংগঠনকে, তখন বারবার বিভিন্ন অজুহাতে সেই বৈঠক হতে দেননি আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। তার মধ্যে অন্যতম একটি বৈঠকের দিনে বৈঠকে বেশি সংখ্যায় চিকিৎসককে যোগ দিতে অনুমতি দাবি করে বৈঠক ভেস্তে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কার্যত একই ছায়া শিক্ষক সমাজের আন্দোলনেও। প্রথম থেকে আটজনের প্রতিনিধিদল শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দেবে, এমনটা জানিয়েও শেষ মুহূর্তে তাঁরা সংখ্যা বাড়িয়ে ১৩ জন করেন। তা নিয়েই জটিলতায় প্রায় আধঘণ্টা দেরি হয় বৈঠক শুরু হতে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের ১৩ জন প্রতিনিধিকেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেন।

আবার শুক্রবারের বিকাশ ভবনের বৈঠকের শুরুতে হঠাৎই বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের (live streaming) দাবি শোনা যায় শিক্ষকদের মুখে। আর জি কর আন্দোলনের (R G Kar incident) সময় মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক যে কতবার এই লাইভ স্ট্রিমিংয়ের অনুমতির কারণে বাতিল হয়েছিল, তা ইতিহাস হয়ে রয়েছে। সেই একই পথে শিক্ষক সমাজ গেলেও এদিন অবশ্য লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে তেমন জোর দেননি শিক্ষকরা।

রাজ্যের তরফে রিভিউ পিটিশন দ্রুত দাখিল করার উদ্দেশে শুক্রবার বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে শিক্ষকদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই ডাকা হয়েছিল শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধিদের। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) নেতৃত্বে সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এসএসসি (SSC) চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে আট জন শিক্ষক ও পাঁচজন শিক্ষাকর্মী যোগ দেন বৈঠকে।

spot_img

Related articles

ব্রিটিশ-তোষণে লেখা ‘জন গণ মন’! বিজেপি সাংসদের অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের

ব্রিটিশদের তোষণ করতেই নাকি লেখা হয়েছিল ‘জন গণ মন’। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই ন্যক্কারজনক মন্তব্য করে ফের...

চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজট কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ কেএমডিএ-র

ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেএমডিএ। শান্তিনগর খালের উপর বর্তমান সরু...

নামের বানানভুল থেকে ডিটেনশন আতঙ্ক! এসআইআর আতঙ্কে মানসিক চাপে সাঁইথিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধের

ইলামবাজারের ঘটনার পর ফের এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু বীরভূমে। হৃদরোগে প্রয়াত হলেন সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান...

বিহারে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ভোটদানে নতুন সমীকরণ! চিন্তায় শাসক শিবির

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী...