মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)আমন্ত্রণে দিঘায় সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) জগন্নাথ মন্দির দর্শনে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড়। এবার নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikari) বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ-দের (Soumitra Khan) বেনজির আক্রমণ করলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ। দিলীপ দিঘায় মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘যাঁরা বিজেপির উচ্ছিষ্ট খেয়ে বেঁচে আছে, তাঁদের কাছ থেকে রাজনীতি শিখবো না।’টানা সাড়ে আট মিনিটের বক্তব্যে শুভেন্দু -সৌমিত্রকে তুলোধোনা করেছেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “যাঁদের আমি নেতা বানিয়েছি, বিজেপিতে এসে করে খাচ্ছে তাঁদেরই বেশি পেট ব্যথা হচ্ছে। আমার পাড়ায় তৃণমূল নেতার বিয়ে হচ্ছে বলে আমি সেখানে যাব না আমার বাড়ির জামাই অন্য পার্টি করে বলে তাঁর বাড়িতে যাব না এই নোংরা জঘন্য রাজনীতি দিলীপ ঘোষ করে না। যাঁরা এই অপসংস্কৃতি আনতে চাইছে তাঁরা বিজেপি বোঝে না।” এদিন দিঘা থেকে নিজের দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে উষ্মা প্রকাশ করে দিলীপের প্রশ্ন, দলে বিধায়ক- সাংসদ- পঞ্চায়েতে নেতা কমছে, কেন এই পরিস্থিতি? বাংলায় বিজেপি পিছিয়ে যাচ্ছে কেন? প্রাক্তন গেরুয়া সাংসদ যেভাবে বলেছেন, “যারা ২০২০ -২১ সালে এসেছেন তাঁরা বিজেপিকে চেনেন না”, তাতে নিশানা যে বিরোধী দলনেতার দিকে, তা বেশ স্পষ্ট।

জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple Digha)দর্শনের বিতর্ক প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর ‘সৌজন্য রাজনীতি’র কথাও মনে করেন দাবাং পদ্ম নেতা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক দিলীপের আড্ডার ভিডিও ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে দলবদলের জল্পনা। দিঘা থেকেই এই ইস্যুতে মুখ খুললেন দিলীপ।বলেন, “কাল আমি জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে এসেছি। তা নিয়ে বহু তর্ক বিতর্ক হচ্ছে। তবে ভগবানকে তর্কের উপরে রাখা উচিত। অদ্ভুত বিষয়, আমি কেন ভগবানের কাছে এসেছি, তা নিয়ে প্রশ্ন! আমি সেই ছোট থেকেই ভগবানের নামে কাজ করে চলেছি। আমি বিশ্বাস করি, মন্দির যেই তৈরি করুন ভগবান সবার। পশ্চিমবঙ্গে সব কিছুতেই রাজনীতি। আমার দলের কর্মীরা কেউ কেউ খুব কষ্ট পেয়েছেন দেখছি। ভাবছেন, সুইসাইড করবেন কি না। তাঁদের বলছি বিজেপি করতে গেলে হতাশায় ভুগলে চলবে না।” নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন দিলীপ। বললেন, “দিলীপ ঘোষের দিকে আঙুল তোলার হিম্মত কারও নেই। আমাকে হিন্দুত্ব বোঝাবেন না। যারা বড় কথা বলছেন তাঁরা মমতার আঁচলের তলায় থেকে বড় হয়েছেন!” প্রাক্তন সাংসদ এদিন এক হাত নিয়েছেন সৌমিত্র খাঁকেও। বলেন, “যারা চারটে গার্লফ্রেন্ড রাখে, রাতের জীবন একরকম দিনের জীবন অন্য, তাঁরা দিলীপকে ভোগী বলছে! মানুষ জানে দিলীপ ঘোষ কী।”

রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপির আদি- নব্য দ্বন্দ্ব বা দিলীপ- শুভেন্দু দ্বৈরথ নতুন নয়। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ রক্ষা করে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ একদিকে যেমন সৌজন্যের রাজনীতি দেখিয়েছেন পাশাপাশি মমতা বিরোধী গেরুয়া শিবিরের নেতাদের গালে থাপ্পড়ও মেরেছেন। বুধবার সুকান্ত মজুমদার দিলীপের দিঘা যাওয়াকে “দল অনুমোদন করে না” বলে মন্তব্য করেছিলেন। শুভেন্দু (Shubhendu Adhikari) মন্তব্য এড়িয়ে ছিলেন বটে কিন্তু বৃহস্পতির সকালে নাম না করেই বিরোধী দলনেতাকে পাল্টা খোঁচা দিলেন দিলীপ।

–

–

–

–
–

–

–

–

–

–


–
–