পাকিস্তানের (Pakistan) চক্রান্ত ফাঁস করে কুয়ালালামপুরে ভারতীয় অর্থনীতিকে (Indian Economy) চাঙ্গা করার ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। প্রবাসীদের অনুরোধ করলেন ভারত সফরকালে কাশ্মীরে দুদিন অতিরিক্ত থাকার জন্য। এতে ভুস্বর্গের মানুষের আর্থিক উন্নতির পাশাপাশি দেশের জন্য এটা প্রয়োজনীয় বলে মনে করালেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হুংকার, এবার যদি পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও কথা বলতে হয় তাহলে সেটা পাক অধিকৃত কাশ্মীর (POK) ফেরানো ছাড়া আর অন্য কোনও বিষয় নিয়ে হবে না। অপারেশন সিন্দুরের (Operation Sindoor) সাফল্য এবং জঙ্গি মদত্যকারী পাকিস্তানের মুখোশ বিশ্ব দরবারে খুলে দিতে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া হয়ে নিজেদের শেষ স্টপ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে (Kuyala Lumpur, Malaysia) রয়েছে সঞ্জয় ঝায়ের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় দল। এই সফরে প্রত্যেক দেশে গিয়ে যেভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অভিষেক, কুয়ালালামপুরেও সেই একই রূপে ধরা দিলেন। বিশ্বমঞ্চে ভারতের জাতীয়তাবাদের পাঠ পড়ালেন বিদেশিদের।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে যে জঙ্গি হামলার (Pahelgam Terrorist attack) ঘটনা ঘটেছে তার পাল্টা জবাব দিতে ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালিয়েছে ভারত। এরপরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছে কেন্দ্রের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। সন্ত্রাসবাদে মদতকারী দেশকে যে ভারত রেয়াত করবে না তা স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কুয়ালালামপুরের সভায় অভিষেক বলেন, ‘গত চার দশকের বেশি সময় ধরে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। গত পঞ্চাশ বছর ধরে কথার পর কথাই হয়ে চলেছে। দু দেশের রাজনৈতিক পটভূমি বদলেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তিত হয়েছে, কিন্তু যে বিষয়টা আজও একই রকম রয়ে গেছে তা হল ভারত-পাক দ্বন্দ্ব। অনেকে বলেন, কেন সমস্যা সমাধানে ভারত কথা বলে না। আমি বলতে চাই গত ৫০ বছর ধরে শুধু কথাই হয়েছে।’ এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “পহেলগামে যেভাবে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ধর্ম আর লিঙ্গভেদে যেভাবে নিরীহ পর্যটকদের খুন করা হয়েছে, এরপর যদি কোনও কথা বলতে হয় তাহলে সেটা শুধুমাত্র পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরানো নিয়েই হবে, অন্য কিছু নিয়ে নয়।” অভিষেকের এই মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে হাততালি দিয়ে ওঠেন উপস্থিত দর্শক প্রত্যেককেই।

পাকিস্তানের (Pakistan ) আসল চক্রান্ত ফাঁস করে অভিষেক কুয়ালালামপুরের সভায় বলেন, “আমাদের প্রত্যেককে বুঝতে হবে যে ওরা (পাকিস্তান) ভারতবর্ষের অর্থনীতিকে নীচে টানতে চাইছিল, আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে। এটা আমাদের দায়িত্ব যে আমরা নিশ্চিৎ করি যাতে কাশ্মীর এগিয়ে যেতে থাকে এবং তার উন্নতিসাধন হয়।” এরপরই সভায় আগত দর্শকদের কাশ্মীর ঘুরে দেখার অনুরোধ করে অভিষেক বলেন, “আপনারা পরেরবার ভারতে বেড়াতে গেলে তিন থেকে চারদিন মতো বেশি সময় হাতে রাখবেন আর ওই দিনগুলোতে কাশ্মীর ঘুরে দেখবেন। কাশ্মীরের মানুষের উন্নতির জন্য অর্থনৈতিক প্রগতির জন্য আপনাদের কাছে এই আবেদন করলাম।” এরপরই করতালিতে ফেটে পড়ে সভা। বন্দেমাতরম ও জয় হিন্দ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন তৃণমূল সাংসদ। যেভাবে জাপান থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন অভিষেক, মালয়েশিয়াতে পৌঁছেও সেই একই রকমের মেজাজে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক মতভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বের দরবারে জাতীয়তাবাদের পাঠ শিখিয়ে দিয়ে গেলেন অভিষেক।

–

–

–

–

–

–

–

–
–
–
–
–
–
–