দুর্গাপুরের গণধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় যে পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নির্যাতিতা, সেই পাঁচ অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে ফেলেছে আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ (ADPC)। তা সত্ত্বেও আটক করেই রাখা হয়েছে নির্যাতিতার সেই রাতের সঙ্গী বন্ধুটিকে। মঙ্গলবার ঘটনার পুণর্নির্মাণ reconstruction) করা হয় পুলিশের তরফে। সেই পুণর্নির্মাণে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয় সেই সঙ্গী বন্ধুকেও। অন্যদিকে পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে একজনকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনাস্থলে (place of occurance), পুণর্নির্মাণের জন্য।

সোমবারই অভিযোগ অনুযায়ী গ্রেফতারি সম্পন্ন করে পুলিশ। অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। অন্যদিকে শনিবার থেকেই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে রাখা (detained) হয়েছে নির্যাতিতার সঙ্গীকে। মঙ্গলবার সেই ঘটনাস্থলে পুণর্নির্মাণের জন্য যায় পুলিশ। নেতৃত্ব দেন ডিসিপি অভিষেক গুপ্তা (Abhishek Gupta, DCP)। পরাণগঞ্জের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয় নির্যাতিতার (rape victim) সঙ্গী ও এক অভিযুক্তকে। মিলিয়ে দেখা হয় নির্যাতিতার অভিযোগের সঙ্গে ধৃত ও আটকদের বয়ান।

অন্যদিকে তদন্তের প্রমাণ সংগ্রহে মঙ্গলবারই দুর্গাপুরের বিজড়া গ্রামে যায় পুলিশের আরেকটি দল। গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় ধৃত শেখ রেজাউদ্দিন ও শেখ নাসিরুদ্দিনকে। তাদেরকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ও কিছু পোশাক সংগ্রহ করা হয়। গণধর্ষণের (gang rape) অভিযোগে এই পোশাক বড় ভূমিকা নিতে পারে বলেই পুলিশ মহলে আশা।

যদিও ঘটনার চারদিন পরে এখনও মূল ঘটনা নিয়ে একাধিক জটিলতা থেকে গিয়েছে। নির্যাতিতার সঙ্গীকে আটক করে কী ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তা নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তিনিও তদন্তে সহযোগিতা করছেন বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশি জেরায় এক ধৃত ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে বলেই জানা যায়। সেক্ষেত্রে বাকিরা যদি সেই সময়ে উপস্থিত থাকলেই গণধর্ষণের অভিযোগ হয় পুলিশের খাতায়।

অন্যদিকে বারবার বিরোধী বিজেপির পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে নির্যাতিতাকে বাংলা থেকে ওড়িশায় (Odisha) নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য। নির্যাতিতার বাবা সোমবার জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ের চিকিৎসা ভালো হয়েছে। যে কারণে তিনি সোমবার থেকে খাবার খাওয়া শুরুও করেছেন। আবার সোমবারই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ভালো চিকিৎসার জন্য নির্যাতিতাকে ওড়িশা এইমসে (AIIMS) নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তদন্তের ব্যাঘাত ঘটানোই বিজেপির উদ্দেশ্য, যার জন্য তারা পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে ওড়িশা নিয়ে যাওয়ার জন্য।

আরও পড়ুন: করবা চৌথের রাতে যোগীরাজ্যে ‘নিখোঁজ’ ১২ নববধূ!

একদিকে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ, অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ফরেনসিক নমুনা – ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আস্থা অর্জনের প্রক্রিয়াও চালানো হয়েছে। তবে মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার উপর নির্ভর করছে এই মামলার অনেক সত্যতা প্রমাণ।

–

–

–