অসমের শ্রমিকরাও বাংলাদেশি! বিজেপি সাংসদের ‘তকমা’য় সরব তৃণমূল

Date:

Share post:

বাঙালি দেখলেই বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে দিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার রাজনীতিতে বরাবর সরব বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। উল্টোদিকে ভাষা, ধর্ম, সম্প্রদায় – কোনও বিভেদই বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা করে না অপমান ও হেনস্থা করার সময়ে। এবার বিজেপি সাংসদের হেনস্থার শিকার অসমের (Assam) পরিযায়ী শ্রমিকরা। বিজেপির চিরাচরিত ঢঙে লক্ষ্ণৌয়ের (Lucknow) সাফাইকর্মীদের (scavengers) বাংলাদেশি ও সন্ত্রাসবাদী বলে দাগিয়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ ব্রিজ লাল। অসমের পরিযায়ী শ্রমিকদের (migrant labours) হেনস্থার প্রতিবাদে সরব বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja) প্রশ্ন তোলেন, কবে বিজেপির এই ঔদ্ধত্য বন্ধ হবে?

উত্তরপ্রদেশের মতো ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে ভিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের প্রতি কী ধরনের মানসিকতা দেখানো হয়, এবার তা প্রমাণ করে দিলেন খোদ বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজ লাল (Brij Lal)। লক্ষ্ণৌয়ের রাস্তায় সাফাই কর্মী হিসাবে কাজ করা অসমের শ্রমিকদের তিনি প্রশ্ন করেন, তাঁরা কোথাকার বাসিন্দা। উত্তরে শ্রমিকরা নিজেদের অসমের (Assam) বাসিন্দা দাবি করলে, তিনি দাবি করেন তাঁরা মিথ্যে কথা বলছে বলে। সেই সঙ্গে দাবি করেন, এই শ্রমিকরা আদতে বাংলাদেশি (Bangladeshi)। এরা অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে বসবাস করছে। এবার নিরাপত্তার জন্য বড়সড় ভয়ের কারণ। এরাই হতে পারে সন্ত্রাসবাদী (terrorist)। তাদের সঙ্গে এই কথোপকথনের গোটা ভিডিও ফুটেজ তিনি নিজেই তুলে ধরেন।

স্বাভাবিকভাবেই এরপর থেকে আতঙ্ক ছড়ায় লক্ষ্ণৌতে বসবাসকারী অসমের বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় পুরসভার সাফাইকর্মীর কাজ করেন। তাঁদের কাছে বৈধ আধার কার্ডসহ রয়েছে অসমের এনআরসি-র (NRC) সার্টিফিকেটও। তাঁদের স্থায়ী বাড়ি থেকে জমিজমা সবই অসমের বরপেটা এলাকায়। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে এক শ্রেণির মানুষকে বাংলাদেশী বা সন্ত্রাসবাদী বলে দাগিয়ে দিতেও পিছপা হয় না বিজেপির নেতারা।

এরই প্রতিবাদে সরব বাংলার শাসকদল। মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja) প্রশ্ন তোলেন, সাফাইকর্মীদের (scavengers) বলছেন বাংলাদেশী। বলছেন তাঁরা সন্ত্রাসবাদী। ভাবুন ঔদ্ধত্য। আর কতভাবে এদের কুকীর্তি ঢাকবে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার। তাদের পক্ষ থেকে কোনও বার্তা আসে না। কেন্দ্র যখন প্রয়োজন কৃষকদের উগ্রপন্থী বলে। কবে থামবে এই অত্যাচার।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি: বিশ্বমঞ্চে মুখ পুড়ল ভারতের, কটাক্ষ তৃণমূলের

সেই সঙ্গে শশী পাঁজা তুলে ধরেন, কীভাবে বিজেপির নেতারা সব সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি ঘৃণা পোশণ করেন। তিনি দাবি করেন, যখন দরকার হয় বাংলার বিরোধী দলনেতা শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে খালিস্তানি বলেন। এর শেষটা কবে হবে। মানুষকে খালিস্তানি, উগ্রপন্থী, বাংলাদেশি বলায় দাড়ি কবে টানা হবে।

spot_img

Related articles

কানপুরে রহস্যজনক খুন বাংলার আদিবাসী যুবক: দায়ের এফআইআর

বাংলাভাষা ও বাঙালিদের প্রতি যে বিদ্বেষের মনোভাব কেন্দ্রের স্বৈরাচারী বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে চলেছে, তার জেরে...

কোনও বৈধ ভোটারের নাম যেন বাদ না যায়: জগদ্ধাত্রীপুজো উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে সরব মুখ্যমন্ত্রী

গণতন্ত্রে সবাই সমানভাবে থাকুক। সবাই যেন নিজের ভোটাধিকার পায়। বুধবার পোস্তায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন মঞ্চ থেকে এসআইআর নিয়ে...

বাংলাদেশের নির্বাচন বয়কট করার হাসিনার হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশের (Bangladesh) পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন বয়কট করবেন আওয়ামী লিগের সমর্থকেরা। বুধবার বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Seikh Hasina)...

কলকাতা থেকে ISI-কে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত চলছে, AI সিম্পোজিয়ামে সরব পূর্ণেন্দুর

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি নিজের মতো করে এগিয়ে চলেছে। আধুনিকতাকে যোগ্য সঙ্গত করে সাধারণ জীবনযাত্রার উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য...