ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, প্রথম ধাপের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৭ সালের মধ্যেই প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। দাসপুর–২ ব্লকের পাঁচটি স্লুইস গেট নির্মাণের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। পাশাপাশি, শীলাবতী নদীর খনন কাজও এই মাসের মধ্যেই শুরু হবে ‘কস্ট টু স্টেট এক্সচেকার মডেল’-এ। ইতিমধ্যেই ২৬ সেপ্টেম্বর জারি হয়েছে সম্মতিপত্র বা লেটার অফ অ্যাকসেপ্ট্যান্স, ফলে নভেম্বরের মধ্যেই মাঠে নামবে যন্ত্রপাতি ও শ্রমিক দল।
এই ‘কস্ট টু স্টেট এক্সচেকার মডেল’, যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তাভাবনা থেকে উদ্ভূত, মূলত ‘নো কস্ট ড্রেজিং অ্যান্ড ক্লিয়ারেন্স’ পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। রাজ্য খনিজ উন্নয়ন ও বাণিজ্য কর্পোরেশন নদীর তলদেশ থেকে কতটা বালি ও পলিমাটি তোলা হবে তা নির্ধারণ করবে। যেসব সংস্থা সর্বোচ্চ দর দেবে, তারাই কাজের দায়িত্ব পাবে। তোলা বালির বিপরীতে রাজ্য রাজস্ব বা প্রিমিয়াম নেবে, এবং সেই অর্থই ব্যবহার করা হবে নদী খনন ও পরিষ্কারের কাজে। এই পদ্ধতিতে মোট ৪০টি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, যার অধিকাংশই নদী খননের সঙ্গে সম্পর্কিত।

একই সঙ্গে ঘাটাল সার্কিট বাঁধের সমান্তরাল খাটো বাঁধগুলির পুনর্গঠন ও নতুন নির্মাণের কাজও শুরু হবে। ভূমি জরিপের কাজ ১৫ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। ঘাটাল পৌর এলাকায় দুটি পাম্প হাউস তৈরির সিভিল ও মেকানিক্যাল কাজের টেন্ডার ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে, যার আনুমানিক ব্যয় ৬০ কোটি টাকা। তবে এই দুটি পাম্প হাউসের জন্য প্রয়োজনীয় ৬.৬১ একরের মধ্যে ৪.০৯ একর রায়তি জমি কেনার অনুমোদন এখনও মেলেনি বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।

মোট ৩৯টি স্লুইস রেগুলেটর ও ১০৬টি সেতু এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে সাতটি স্লুইসের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। চারটি প্রধান সার্কিট বাঁধের মধ্যে তিনটির বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন (DPR) এখনও চূড়ান্ত হয়নি, যা নিয়ে শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির যৌথ পরিদর্শন হবে।বিগত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সাহায্য না পাওয়ায় রাজ্য সরকার নিজস্ব বাজেটেই প্রকল্প সম্পূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাটাল ও সংলগ্ন অঞ্চলের বন্যাপীড়িত মানুষের প্রতি প্রতিশ্রুতি রেখে ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের তহবিল থেকেই শেষ হবে এই বহুল প্রতীক্ষিত প্রকল্প। মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা, যা ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে শুরু করে দুই বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

_

_

_

_

_
_


