কখনও ক্ষমতার আস্ফালনে বেশি শো পাওয়া কখনও আবার ফ্যান ক্লাবের নামে বাকি অভিনেতা-প্রযোজকদের কদর্য আক্রমণ – সব কটা ক্ষেত্রেই একটাই নাম শিরোনামে, অভিনেতা প্রযোজক দেব (Dev)। এখানেই শেষ নয়, বাংলা ছবির হল পাওয়া নিয়ে জটিলতা কাটাতে, টলিউড সিনেমার মেরিট অনুযায়ী শো পাওয়ার রাস্তা সুগম করতে এবং হিন্দি – দক্ষিণী সিনেমার বাজারে বাংলা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিকে সুরক্ষিত করতে গঠিত হওয়া স্ক্রিনিং কমিটিরও (Screening Commite) বিপক্ষে ভোট দিলেন ‘প্রজাপতি’ অভিনেতা। অর্থাৎ তিনি এই কমিটি চান না। কিন্তু বাকি ইন্ডাস্ট্রির ১২টি প্রযোজনা সংস্থা কমিটির পক্ষে ভোট করায় ফল দাঁড়াল ১২-১। অর্থাৎ কোণঠাসা হচ্ছেন ‘মেগাস্টার’ দেব।


২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ইমপার অফিসে একটি বৈঠক হয়, যেখানে স্ক্রিনিং কমিটি আদৌ থাকবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। উইন্ডোজের শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, এসভিএফের (SVF) শ্রীকান্ত মোহতা, সুরিন্দর ফিল্মসের নিশপাল সিং (Nispal Singh), ডিসিএমের রানা সরকারদের মতো প্রযোজকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee), ইমপার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত (Piya Sengupta), ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস-সহ (Swarup Biswas) আরও অনেকে। সূত্রের খবর, মিটিং চলাকালীন থেকে পিয়া ফোন করেন দেবকে (Dev) তাতে সাংসদ -অভিনেতা ফোনে ‘নোটা’তে ভোট দেন। অর্থাৎ তিনি সম্মতি দেন নি (Dev voted against the screening comitee)। এরপরই সাংবাদিক বৈঠকে পিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই দেব (Dev) বিভিন্ন জায়গায় স্ক্রিনিং কমিটির বিপক্ষে কথা বলছিলেন। তাঁর যদি এটাই ভাবনা হয় তাহলে তিনি একথা কমিটি তৈরির সময় যে একাধিক মিটিং হয়েছে সেখানেই স্পষ্ট করতে পারতেন।

স্ক্রিনিং কমিটির উদ্দেশ্য হল বাংলা ছবির ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা। প্রতিটি ছবিই যাতে বক্স অফিসে ব্যবসা করার সুযোগ পায়। এই কারণেই ‘ইমপার’ তরফে জানানো হয়েছিল ছ’টি বড় উৎসবের মধ্যে দু’টি উৎসবেই যে কোনও প্রযোজনা সংস্থা তাদের ২টি ছবিই রিলিজ করতে পারবে। অন্য সময় ছবি মুক্তি নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু বিতর্কিত অভিনেতা – প্রযোজক সম্প্রতি বেশ কিছু ইন্টারভিউতে এই ক্যালেন্ডার তৈরির বিরোধিতা করেছেন। ‘রঘু ডাকাত’ মুক্তির সময়ও দেখা যায় সবথেকে বেশি শো নিয়েছে এই ছবি। অন্যান্য প্রযোজকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। কারণ সিনেমার কৃতিত্বে নয় অভিনেতা নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে এই শো টাইম দখল করেন। ক্রিসমাসেও তাঁর প্রযোজিত ও অভিনীত ‘প্রজাপতি ২’ বাকি দুটি সিনেমার থেকে বেশি শো পেয়েছে। পাশাপাশি তাঁর ফ্যান ক্লাবের তরফে বাকি সিনেমার অভিনেতা- প্রযোজকদের অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে। কিন্তু দিনের পর দিন এটা চলতে পারে না।

এদিন স্বরূপ বলেন, ফ্যান ক্লাব বিষয়টা ভালো। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় কদর্য আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না। এই প্রসঙ্গে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboprasad Mukherjee) ও তাঁর পরিবারকে যেভাবে সমাজমাধ্যমে আক্রমণ-হেনস্থা করা হয়েছে সেই কথা উল্লেখ করে ফেডারেশন সভাপতি বলেন, ইন্ডাস্ট্রির তরফে প্রযোজক পরিচালক-অভিনেতা- অভিনেত্রীদের একটি টিম কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে এই ঘটনায় যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের অনুরোধ করবে। এদিন রেটিং ম্যানিপুলেশন নিয়েও আলোচনা হয়। রানা সরকার বলেন, কারা এর নেপথ্যে রয়েছে সবটা খুব দ্রুত খুঁজে বের করা হবে। এককথায় সাংসদ – অভিনেতার ক্ষমতার আস্ফালন মোটেই ভালো চোখে দেখছে না ইন্ডাস্ট্রি। ফলে আগামিতে বাংলা ছবি মুক্তি নিয়ে জটিলতা আদৌ কাটবে কিনা তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েই গেল।

–

–

–

–

–

–
–
–


