রবিবাসরীয় ডার্বি দেখবে স্প্যানিশ ডুয়েল, পরিসংখ্যান বলছে এগিয়ে মশাল বাহিনী

এই মুহূর্তে রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাবে মাত্র 15 দিনের মধ্যে বিজেপি ছাড়তে পারেন শোভন-বৈশাখী। এই জল্পনায় কার্যত রাজনৈতিক মহল তোলপাড়। অন্যদিকে আবার রানু মন্ডলের ফুটপাত থেকে রাজপথের কাহিনীও বাসে, ট্রেনে, ট্রামে সকলের মুখে মুখে ফিরছে। কিন্তু এইসব আলোচনা-পর্যালোচনা শনিবার দুপুর থেকে কেমন যেন তিলোত্তমার বুকে ফিকে পড়ে গেল। কারণ, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে 368তম কলকাতা ডার্বিতে মুখোমুখি হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান।

এ লড়াই আজকের নয়। সেই 1925 সাল থেকে শুরু হয়েছে এই বড় ম্যাচের ইতিহাস। যা আজও বয়ে নিয়ে চলেছে বাংলার ফুটবল। বাঙালি শুধু মাছে-ভাতে বাঙালি নয়, বাঙালির শিরা-উপশিরায় মিশে আছে ঘটি-বাঙালের এই চিরন্তন লড়াই। এ লড়াই ইলিশ-চিংড়ির লড়াই, যা আজও আট থেকে আশি সকলকে আবেগে ভাসিয়ে দেয়।

এমনিতেই শতবর্ষের আনন্দে ভাসছে ইস্টবেঙ্গল। তার ওপর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডার্বিতে বাগান শিবিরের থেকে মশাল বাহিনীর পাল্লাই একটু ভারী। কারণ, জয়ের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেডই। এখনও পর্যন্ত 129টি ডার্বি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছে ইস্টবেঙ্গল। সেদিক থেকে 118টি ডার্বি জিতেছে মোহনবাগান। আর ডার্বি ড্র হয়েছে 120 বার। তাই পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইস্টবেঙ্গল রবিবাসরীয় ডার্বির আগে এগিয়ে রয়েছে।

তবে ঘটি-বাঙালের এই চিরন্তন লড়াইয়ের মাঝে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে আরও এক লড়াইয়ের সাক্ষী থাকতে চলেছে দুই দলের সমর্থকেরা। এ লড়াই স্পানিশ ডুয়েল। রবিবাসরীয় ডার্বিতে দুই দলের সিংহভাগই স্প্যানিশ বিদেশি। কোচও স্প্যানিশ। তাই রবিবাসরীয় এই লড়াই শুধুই ঘটি-বাঙালের লড়াই নয়, এ লড়াই হতে চলেছে আলেসান্দ্রো বনাম ভিকুনার লড়াই। এই লড়াই হতে চলেছে বেতিয়া বনাম কোলাডোর লড়াই।

তবে ডার্বিতে নামার আগে সকলের থেকে কিছুটা আড়ালেই রয়ে গেল দুই দল। শনিবার ময়দানে দুই প্রধানের অনুশীলন হয়েছে ক্লোজডোর। ইস্টবেঙ্গল অনেকটাই সেটপিসে জোর দিচ্ছে। জানা গিয়েছে, মাঝমাঠে নেতৃত্ব দেবেন সেই কোলাডোই। গোলের জন্য বিদ্যাসাগরের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন লাল-হলুদ স্প্যানিশ কোচ। অন্যদিকে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল মোহনবাগানের তুরুপের তাস জোসেফ বেতিয়া। তবে গোলের মুখ দেখার জন্য বাগান কোচ ভরসা করে রয়েছেন সালভা চামরোর ওপরেই।

তবে শুধু পরিসংখ্যানের দিক থেকে নয়, কোচের অভিজ্ঞতার নিরিখেও এগিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কারণ, যেখানে গত মরশুমের দুটি ডার্বি জিতে বসে রয়েছেন আলেসান্দ্রো এবং আগামিকালের ডার্বি হ্যাটট্রিকের হাতছানি দিচ্ছে তাঁকে, সেখানে ভিকুনার এটি অভিষেক ডার্বি হতে চলেছে। তাই সেদিক থেকে অভিজ্ঞতার নিরিখেও এগিয়ে রয়েছেন লাল-হলুদ কোচ।

তবে পরিসংখ্যান ও অভিজ্ঞতার নিরিখে যে যতই এগিয়ে থাকুক দুই দলের 3 পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়াই মূল লক্ষ্য। এখন কোন দল ডার্বি জয়ের স্বাদ পায় সেটাই দেখার। তবে সব মিলিয়ে রবিবাসরীয় তিলোত্তমা যে অলিখিত দু’ভাগে বিভক্ত হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Previous articleসল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে শনিবার থেকে শুরু হল বাংলার তাঁতের হাট
Next articleশোভনের ভাবমূর্তি ধাপার মাঠে ফেলছেন সখী, কণাদ দাশগুপ্তর কলম