ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ভারতে, তবে সিগারেট-গুটখায় হাত পড়ল না!

তামাক লবি ও সিগারেট প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিরই জয় হল। কর্মসংস্থানের অজুহাতে স্বাস্থ্যহানিকর দ্রব্যগুলি নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটল না মোদি সরকার। বরং ভারতে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইটিসি-র মত সিগারেট প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির পালে হাওয়া লাগাল। কারণ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ই-সিগারেট জনপ্রিয় হতে থাকায় সিগারেট ধূমপায়ীর সংখ্যা কমছিল। বাণিজ্যিক ক্ষতির মুখে পড়ছিল তামাক লবি। রাজস্ব কমছিল সরকারেরও। শেষ পর্যন্ত ই-সিগারেট অর্থাৎ ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম বা এন্ডস নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার। সিগারেটের চেয়ে কম ক্ষতিকর বিকল্প হিসাবে এটিকে দেখা হলেও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের সুপারিশ মেনে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটল কেন্দ্র। বলা হয়েছে, ই-সিগারেট নিকোটিনে আসক্তি তৈরি করে। ব্যবহারকারীদের শারীরিক ক্ষতির নির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও দীর্ঘ ব্যবহারে বমি, কাশি, জিভে দানার মত উপসর্গ দেখা দেয়। নিষিদ্ধ হওয়ার অধ্যাদেশ জারির পর ভারতে ই-সিগারেট ব্যবসা, বিক্রি, বিপণন করলে প্রথমবার অপরাধে এক বছর জেল বা এক লক্ষ টাকা জরিমানা বা দুটোই হতে পারে। দ্বিতীয়বার ওই অপরাধের সাজা হবে তিন বছর জেল ও পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।

কীরকম হয় ই-সিগারেট? এটি সিগারেটের মত দেখতে একটি যন্ত্র। এই যন্ত্রে থাকে তরল নিকোটিন, যা ব্যাটারির মাধ্যমে গরম হয়ে বাষ্পে পরিণত হয়। ধূমপায়ী সেই নিকোটিনজাত বাষ্পই টেনে নেন। এদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার পিছনে স্বাস্থ্যের কারণকে দেখানো হলেও বাণিজ্যিক কারণটিও অতি গুরুত্বপূর্ণ। ই-সিগারেট যারা আমেরিকা, চিন থেকে আমদানি করে, ব্যবসা করে তাদের কোনও লাইসেন্স নেই। সরকারের রাজস্ব আয়ও হয়না। অন্যদিকে তামাক ব্যবহারে দেশে বছরে ন’লাখ মানুষের মৃত্যু হলেও সিগারেট, গুটখা ইত্যাদি থেকে সরকারের বার্ষিক আয় চল্লিশ হাজার কোটি টাকা। রপ্তানি বাবদ ছ’হাজার কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা আসে। তামাক শিল্পে জড়িত প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষের কর্মস্থান। সেজন্য স্বাস্থ্যের ক্ষতি মেনে নিয়েও বহাল থাকে সিগারেট, গুটখা, বিড়ির মত তামাকজাত পণ্য।

আরও পড়ুন-রাজীব স্যরের Distance Education

 

Previous articleরাজীব স্যরের Distance Education
Next articleহলুদ গোলাপ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীকে আরও দুটি উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী